একদা এক কদাচারী কীট নিজেকে বলে- 'আমি বড় হব'। তখন সে একটি বরাহে রূপান্তরিত হল। কীট কিছুকাল বরাহজীবন যাপন করার পর বলল- 'আমি বড় হব'। তখন সে একটি অশ্বে রূপান্তরিত হল। কিছুকাল অশ্বের জীবন যাপন করার পর সে একদিন আবার বলল- 'বড় হব'। তখন সে একটি মানুষে রূপান্তরিত হল। বহুকাল মানবজীবন যাপন করার পর একদিন তার মৃত্যুর সময় উপস্থিত হল। কিন্তু দীর্ঘ মানবজীবনে একবারও তার মনে হয়নি- 'বড় হব'। হঠাৎ মৃত্যুর পূর্বে তার মনে হল– তার বড় হবার কথা ছিল! সে তৎক্ষণাৎ 'বড় হব, বড় হব' বলতে বলতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল। কিন্তু সে আর বড় হতে পারল না। পুনরায় সে কীটের গর্ভে কীটরূপে জন্ম নিল।
(উপরোক্ত কথাগুলো পশ্চিম বঙ্গের গণমানুষের লেখক শাহাযাদ ফিরদাউসের 'ব্যাস' উপন্যাস থেকে নেয়া।)
আমার কিছু কথা
আমাদের দেশের কদাকার কীটের মত বেশির ভাগ শিক্ষিত অমানুষরা পেশাগত জীবনে প্রবেশ করে ভুলে যায় যে, তাদের মানুষ হবার কথা ছিল! তারা যদি মানুষ হবার কথা ভুলে না যেত, তাহলে এই ক্ষুধার্ত শিশুটির ছবি আমাদের দেখতে হত না। এ লজ্জা রাখি কোথায়?
আসুন আমরা বুকে হাত রেখে, চোখ বন্ধ করে ভাবি, আমরা কতটা মানুষ আর কতটা কীট? আর মনে মনে গুরুসদয় দত্তের 'মানুষ হ, মানুষ হ, আবার তোরা মানুষ হ' এই গানটি এভাবে গাই– মানুষ হই, মানুষ হই আবার আমরা মানুষ হই।
আসুন আমাদের দেশের প্রতিটি শিশুকে এমন মনুষ্যত্ববোধের শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলি, যাতে তারা বড় হয়ে ভুলে না যায় তাদের মানুষ হবার কথা ছিল।