জনবহুল দেশ হওয়ায় বাংলাদেশ রয়েছে মারত্মক ঝুঁকিতে। তাই বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়ার পর থেকেই ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার থেকে গ্রহণ করা হয়েছে নানা পদক্ষেপ। যার মধ্যে অন্যতম পদক্ষেপটি হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা। এ পদক্ষেপটি বাস্তবায়নের জন্য শুধুমাত্র জরুরি সেবা ছাড়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। সরকারের এই পদক্ষেপকে বাস্তবায়ন করতে কাজ করছে বাংলাদেশ পুলিশসহ অন্যান্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা।
খাদ্য সামগ্রী তুলে দিচ্ছেন সিলেট জেলার পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন
কারো হাতে হাতকড়া নয়, বরং খাদ্য তুলে দিচ্ছে পুলিশ। কাউকে ধমক নয়, বরং মাস্ক, সাবান,লিফলেট হাতে বিলি করে সচেতন করছে পুলিশ।
সিলেটের জৈন্তাপুরে ঘরে থাকার অনুরোধ করে গ্রাম-বাজারে চলছে মাইকিং, পুলিশের উদ্যোগে বিতরণ হচ্ছে খাদ্য সামগ্রী। খাদ্য সামগ্রী গ্রহণকারীদের সবাইকে বসানো হয়েছে চেয়ারে; পুলিশ সদস্যরাই হাতে হাতে তুলে দিচ্ছেন সেইসব সামগ্রী। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশের এই উদ্যোগে খুশি জৈন্তাপুর উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ।
নিরাপদ দূরত্ব, ঘরে থাকা ও সচেতন থাকার পরামর্শ দিচ্ছন জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বনিক
করোনাভাইরাস সম্বন্ধে সচেতন করতে সিলেটের জৈন্তাপুর থানা পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বনিক নিজে গ্রাম-বাজারে, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে গিয়ে হ্যান্ড মাইক দিয়ে সবাইকে সচেতন করছেন। পথচারীদের মাস্ক বিলি করে অনুরোধ জানাচ্ছেন ঘরে থাকার।
পুলিশ সদস্যদের প্রতিও তার নির্দেশ, মানুষকে বুঝিয়ে সচেতন করতে হবে।
জৈন্তপুরে পুলিশ আসতে দেখলে মানুষ ভয়ে দৌড়ে পালাচ্ছে না এখন। বরং তারা খুশি হচ্ছে।
খাদ্যসামগ্রী গ্রহনকারীদের বসানো হয়েছে চোয়ারে
এরমধ্যে সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিনের পরিকল্পনায় বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ তহবিল ও জৈন্তাপুর মডেল থানার পুলিশের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে জৈন্তাপুর মডেল থানার উদ্যোগে স্থানীয় গরীব অসহায়, হতদরিদ্র, সমাজের সুবিধা বঞ্চিত দিনমজুরদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ শুরু করা হয়েছে।
জৈন্তাপুরে বিভিন্ন বেধে পল্লিতে ঘুরে অসহায়দের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিচ্ছেন সিলেট জেলা পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন
৩১ মার্চ থানা প্রাঙ্গনে নিরাপদ দূরত্বে চেয়ারে বসিয়ে ২০০টি পরিবার এবং উপজেলা সদরের কয়েকটি বেদেপল্লীতে আরো ৫০টি পরিবারে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন তারা। থানা প্রাঙ্গনে আগতদের জন্য ছিল মাস্ক ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা।
পরে পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিনের উপস্থিতিতে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এরপর বেদেপল্লীগুলোতে এসপি ফরিদ উদ্দিনের নেতৃত্বে ঘরে ঘরে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
সচেতনতামূলক প্রচারের অংশ হিসেবে প্রতিটি ব্যাগে লেখা ছিল 'ঘরে থাকুন, নিরাপদ থাকুন' স্লোগান।
এই কর্মসূচি নিয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, সিলেট জেলার আড়াই হাজার অসহায় পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেবে সিলেট জেলা পুলিশ।