‘শেষ হইয়াও হইল না শেষ’

মোঃ আলাউদ্দীন ভুঁইয়া
Published : 6 March 2015, 05:42 PM
Updated : 6 March 2015, 05:42 PM

এত যে ধরি, তবু ধরাধরির শেষ হয় না কেন? হাজারে হাজার সোনারবার ধরি, মণকে মণ ইয়াবা, বস্তাভরা গাঁজা, দোকানভরা নকল ওষুধ, প্রাইভেটভর্তি টাকা, ট্রাঙ্ক ভরা জালনোট, মেসভরা পেট্রোল বোমা/ককটেল, ট্রলার ভরা জাটকা, ট্রাকভর্তি 'ডাইল', ভারতীয় শাড়ি… ধরছিতো ধরছি…; কিন্তু ধরা থামছে কি? না, থামছে না। কেন থামছে না?

থামছে না কারণ আমরা 'ধরি মাছ না ছুঁই পানি'। পানি ছুঁই না কেননা পানিতে যে চুলকানি আছে, প্রাঙ্কটন আছে আর একটু গভীরে গেলে রাঘববোয়াল আছে, আছে কুমির, হাঙর, অক্টোপাস। দেশের আইন-শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার কাজে নিয়োজিত পুলিশ-র্যা ব, বিজিবি, নৌ-বাহিনী, কাস্টমসের যেসকল সদস্যরা প্রতিনিয়ত অক্লান্ত পরিশ্রম করে এ ধরাধরির কাজ যাচ্ছেন তারা নিঃসন্দেহে আমাদের ভুয়সী প্রশংসার দাবীদার।কিন্তু, দিনশেষে প্রশ্ন ঐ একটাই-এভাবে ধরাধরি আর কতদিন? কোন একটা কিছু কি ধরাধরি করে শেষ হয়েছে? যদি এমন হতো যে, এখন আর দেশে ইয়াবা পাওয়া যায় না, 'ডাইল'এর আকাল পড়েছে, জালনোট নেই, ভারতীয় শাড়ি বিক্রি হয় না… ইত্যাদি ইত্যাদি। এমন একটি নিষিদ্ধ বস্তুর নাম চিন্তা করছি যেটা ধরাধরি করে বন্ধ হয়ে গেছে। পাচ্ছি না। তার মানে কী এসব ধরাধরি একটি নিরন্তর চোর-পুলিশ খেলা!

পত্রিকা পড়লে মনে হয় দেশজুড়ে এখন কেবল খনিজ সম্পদের ছড়াছড়ি- সোনার খনি, ইয়াবা খনি, 'ডাইল' খনি…। শাহজালাল, শাহ আমানত হতে উত্তোলিত হচ্ছে সোনা, কক্সবাজার-টেকনাফ থেকে ইয়াবা, চুয়াডাঙ্গা-সাতক্ষীরা থেকে 'ডাইল', রাজশাহীতে গাঁজা, বেনাপোলে ভারতীয় শাড়ি, রাজধানীতে জালটাকা, নকল ওষুধ; আরো কত কী! এসব কিছুর খনি সে যে আমার জন্মভূমি। প্রাকৃতিক নিয়মে একসময় ঐ খনিও নিঃশোষিত হয়, পরিত্যাক্ত হয় কিন্তু আমাদের এই খনি জমজম কূপের জলের মতো, রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্পের মতো 'শেষ হইয়াও হইলনা শেষ'।

তাহলে আর এ লেখার শেষ টেনে লাভ কী!