জয়নুল অনুগামী নিসার হোসেন: জন্মবার্ষিকীর শুভেচ্ছা

মুহাম্মদ সামাদমুহাম্মদ সামাদ
Published : 8 Feb 2012, 01:52 PM
Updated : 19 Feb 2021, 06:10 PM

কুলকুল রবে বয়ে যাওয়া ঝিনাই নদীর তীরে চতুর্দিকে ছড়ানো বিশালাকার বটগাছের ছায়ায় বিরাট চত্বরের মধ্যে একটি চৌচালা ঘরে ছিল আমাদের সাতপোয়া ফ্রি প্রাইমারি স্কুল। ১৯০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্কুলের জন্যে সেই সময় ৫৬ শতক জমি দান করেছিলেন সাতপোয়া গ্রামের শিক্ষানুরাগী মহব্বতউল্লাহ সরকার। স্কুলে হেডস্যারের পরে আমাদের একজন সেকেন্ডস্যার ছিলেন। আমার শ্রদ্ধেয় হেডস্যার ও সেকেন্ডস্যারের নাম ছিল যথাক্রমে নওয়াজেশ আলী ও মজিবর রহমান। সেকেন্ডস্যারের বাড়ি ছিল আমাদের গাঁয়ের পূর্বপাড়ায়। তিনি নিচের ক্লাসে অঙ্ক আর অঙ্কন শেখাতেন। এই অঙ্কন বা চিত্রকলা বলতে ছিল আম, পেঁপে, বকপাখি আর কুঁড়েঘর বা ছনের ঘর আঁকা। তখন গাঁয়ে-গঞ্জে-হাঁটে-বাজারে ঘর বলতে ছনের ঘরই ছিল। আমার জীবনে চিত্রকলার শিক্ষা ওইটুকুনই! কারণ, পাকিস্তান আমলে প্রাইমারির পর চিত্রকলা শিক্ষার কোন ব্যবস্থা ছিল না।

১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসার পর কলেজের বড় বড় ছাত্ররা অঙ্কন ক্লাস করে শুনে অবাক হলেও তা দেখা হয় নাই। আর্ট কলেজের দেয়াল ঘেঁষে বহুবার যাতায়াত করলেও ভিতরে প্রবেশ করা হয়ে ওঠে নাই। সময়ের পরিক্রমায় শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন (১৯১৪-১৯৭৬) প্রতিষ্ঠিত গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট অব আর্ট বা ঢাকা আর্ট স্কুল (১৯৪৮), ইস্ট পাকিস্তান কলেজ অব আর্ট অ্যান্ড ক্র্যাফ্ট (১৯৬৪) বা আমাদের প্রিয় আর্ট কলেজ ১৯৮৩ সালে আমাদের চোখের ওপর দিয়ে ইনস্টিটিউট অব ফাইন আর্টস হলো; আবার ইনস্টিটিউট থেকে এখন চারুকলা অনুষদ হয়েছে। আমাদের সময়ের মানুষজনের কাছে জনপ্রিয় নাম 'আর্ট কলেজ'-এর ভিতরে আমার প্রথম প্রবেশ ঘটে ১৯৮৩ সালে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের একটি চিত্রপ্রদর্শনী দেখার সুবাদে। সত্যি বলতে– সেই চিত্রপ্রদর্শনী দেখাটা চিত্রকলার প্রতি আমার আগ্রহ থেকে ছিল না; ছিল আমার স্কুলের বন্ধু মাধবের ছোটবোন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী শিলা দাসের আগ্রহে। কবিতা, সংগীত আর শিল্প-সাহিত্যের প্রতি শিলুর প্রবল আগ্রহ ও গভীর অনুরাগের কাছে তারুণ্যে আমার কাব্যচর্চা অনেকটা ঋণী হয়ে আছে। যাই হোক, সেই প্রদর্শনীতে জয়নুল আবেদিনের দুর্ভিক্ষের ছবিগুলো দেখে তার মাত্র এক দশক আগে সংঘটিত বাংলাদেশের চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষের চিত্র আমার চোখে ভেসে ওঠে। অভাবের-দারিদ্র্যের চাবুকের আঘাতে সেদিন খুব বিষণ্ন ও বিপন্ন বোধ করেছিলাম। তারপর ছবি দেখতে ও চারুকলার সুন্দর-মনোরম পরিবেশে আমরা আরও বেড়াতে গেছি। এভাবেই চিত্রকলা বা চারুকলা অঙ্গনের সঙ্গে আমার সম্পর্কেরও সূত্রপাত ঘটে।

জয়নুল আবেদিনের ১৯৪৩-এর মন্বন্তর বা দুর্ভিক্ষের ছবিগুলো যেন আমার চোখ আর মন থেকে কিছুতেই সরতে চাইছিল না। ১৯৮৩ সালের বইমেলায় আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ একজন রাজনৈতিক নেতার মেনিফেস্টো-এর প্রচ্ছদ নিয়ে আমি তখন অস্থির। পরের দিন আর্ট কলেজের বৃত্তাকার গ্যালরিতে আবার আমি দুর্ভিক্ষের ছবিগুলো দেখতে যাই। রাজনৈতিক নেতাদের চরিত্র উন্মোচনে রচিত আমার বিদ্রুপাত্মক কবিতা 'একজন রাজনৈতিক নেতার মেনিফেস্টো'-এর বিপরীতে প্রচ্ছদের জন্যে একটি দুর্ভিক্ষের ছবি নির্বাচন করি। পরে আমার পরিচিত আর্ট কলেজের ছাত্র ও ভিপি মোরাদুজ্জামান মুরাদকে দিয়ে প্রচ্ছদ করাই। জয়নুল আবেদিনের দুর্ভিক্ষের একটি ছবি ব্যবহার করে আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থের প্রচ্ছদ করার সুবাদে চারুকলার সঙ্গে আমার পরিচয় বাড়তে থাকে। ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত আমার দ্বিতীয় কাব্যগন্থ 'আমি নই ইন্দ্রজিৎ মেঘের আড়ালে'র প্রচ্ছদ আঁকেন শিল্পী শিশির ভট্টাচার্য; এভাবে নবীন-প্রবীণ সকলের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে থাকে; এবং আজ অবধি তা ক্রমবর্ধমান। বলা বাহুল্য, তৎকালীন সাপ্তাহিক চিত্রবাংলায় মুরাদের ছবির ওপর একটা আলোচনা লেখার জন্যে আমাকে চিত্রকলা বিষয়ে কিঞ্চিৎ পড়তে হয়েছিল। এমনকি প্রকট অর্থাভাব সত্ত্বেও পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত চিত্রসমালোচনা পাঠের বাইরে শিল্পকলা একাডেমি থেকে সৈয়দ আলী আহসান রচিত শিল্পচৈতন্য ও শিল্পবোধ গ্রন্থটি আমি কিনে পড়েছি। পরে, একটি দৈনিকের ঈদ সংখ্যায় শিল্পাচার্যের বিখ্যাত ছবি পাইন্যার মার ওপর শিল্পী নিসার হোসেনের একটি আলোচনা পড়ে যারপরনাই মুগ্ধ হই আমি। সেই মুগ্ধতার সূত্রে তিনি আমার প্রিয় হয়ে ওঠেন। শিল্পী নিসার হোসেনের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ পরিচয় হয় ১৯৮৭ সালে প্রথম জাতীয় কবিতা উৎসবের সময়।

সেই থেকে শিল্পে-সাহিত্যে-রাজপথে আমরা একসঙ্গে পথ চলছি। ১৯৮৭ সালে, যখন দেশে চলমান সামরিক শাসনবিরোধী রাজনৈতিক আন্দোলন স্তিমিতপ্রায়, দেশমাতৃকার সেই ঘোরতর সংকটকালে শামসুর রাহমানের পৌরোহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল কবি মিলে এরশাদের সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে শৃঙ্খল মুক্তির ডাক দিয়ে জাতীয় কবিতা উৎসব গণতন্ত্রের সংগ্রামে নতুন গতি সঞ্চার করে। সামরিক স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু ও ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে তখনকার চারুকলা ইনস্টিটিউটের ছেলে-মেয়েরা ঝাঁক বেঁধে উৎসবের মঞ্চ তৈরি করা থেকে শুরু করে ফেস্টুন-ব্যানার বানানো, টাঙানো, টিএসসির গোলচত্বরে (তখনও রাজু ভাস্কর্য হয় নাই) আলপনা আঁকা ইত্যাদি সকল কাজ বিপুল উৎসাহে সম্পন্ন করেছে; বিশ্বভারতী থেকে পড়ালেখা শেষ করে নিসার হোসেন তখন আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া একাত্তরের ঘাতক-যুদ্ধাপরাধী ও বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসি কার্যকর করার দাবিতে শাহবাগ আন্দোলনের সমর্থনে চারুশিল্পীদের নিয়ে চারুকলা সম্মুখস্থ সড়কে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ প্রতিবাদী গণচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজনে এবং জঙ্গি হামলায় লেখক-অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ আহত হওয়ার প্রতিবাদে সকল সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন একতাবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়নোর আহ্বান জানিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বিশাল সমাবেশে বিপুল আবেদনসৃষ্টিকারী চারুকলা অনুষদের কফিন মিছিলটির পরিকল্পনার মুখ্য ভূমিকা পালন করেন নিসার হোসেন। ২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষককে রাতের অন্ধকারে গ্রেফতার করে যখন অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় তখন যে ছয়জন শিক্ষক (আবুল বারকাত, মুহাম্মদ সামাদ [নীলদলের ভারপ্রাপ্ত কনভেনার হিসেবে], নাজমা শাহীন, নিসার হোসেন, অহিদুজ্জামান চান ও জীনাত হুদা) তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে প্রথম প্রতিবাদ জানান তাদের মধ্যে একজন ছিলেন নিসার হোসেন; একই সরকারের দুরভিসন্ধিতে বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ প্রত্নসম্পদ যখন প্রদর্শনীর অজুহাতে ফ্রান্সের গিমে জাদুঘরে পাচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়, তখন আন্দোলন সংঘটনে সকলের মধ্যে নিসার হোসেনের অনমনীয় ভূমিকার কারণেই তা প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের শিল্পকলার প্রধান পথিকৃৎ জয়নুল আবেদিনের বিখ্যাত চিত্রকর্মগুলোর মধ্যে রয়েছে– ১৯৭০ সালের বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় গোর্কির ওপর অনেকগুলো স্কেচের সামষ্টিক রূপ মনপুরা; গ্রাম বাংলার উৎসব নিয়ে ৬৫ ফুট দীর্ঘ ছবি নবান্ন; দুর্ভিক্ষ-চিত্রমালা, সংগ্রাম, সাঁওতাল রমণী, পাইন্যার মা, কাক, বিদ্রোহী ইত্যাদি। তার অনেক ছবিই গ্রামজীবনের অনুষঙ্গে নির্মিত হওয়ায় পাড়াগাঁয়ের মানুষ এই আমার স্বচক্ষে দেখা প্রকৃতি ও চিরায়ত আটপৌরে মানুষজনের জীবন-যাপনে আত্মহারা হয়েছি। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন অনন্য চিত্রকর্ম সৃষ্টির পাশাপশি ঢাকা আর্ট স্কুলকে কলেজে রূপান্তরিত করে এ দেশে শিল্পকলা শিক্ষার প্রসারে ও চিত্রকলার বিকাশে আমৃত্যু প্রভূত অবদান রেখেছেন। ১৯৭১ সালে বাংলার মানুষের মুক্তির আকাঙ্খায় 'বাংলা চারু ও কারু শিল্পী সংগ্রাম পরিষদ' আয়োজিত 'স্বাধীনতা' শীর্ষক মিছিলে পা মিলিয়েছেন ঢাকার রাজপথে। ১৯৭১ সালের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনের সময় ১৯৫৮ সালে প্রাপ্ত পাকিস্তান সরকারের সর্বোচ্চ খেতাব হিলাল-ই-ইমতিয়াজ প্রত্যাখ্যান করেছেন। সদ্য স্বাধীন দেশের হাতেলেখা সংবিধানের নকশা-অলংকরণের কাজে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আগ্রহে বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সাহিত্য সম্মেলনে যোগ দিয়ে বাংলা সাহিত্যকে এগিয়ে নেয়ার প্রয়াসে ব্রতী হয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আন্তরিক সহায়তায় গ্রাম বাংলার অবহেলিত নিরক্ষর শিল্পীদের হস্তশিল্প, জনজীবনের নিত্য ব্যবহার্য পণ্যসামগ্রী এবং লোকজ ঐতিহ্যবাহী উপাদানসমূহ সংরক্ষণের জন্যে ১৯৭৫ সালের মার্চে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের সহকর্মী নিসার হোসেন চারুকলা অনুষদের ডিন হিসেবে শিল্পাচার্যের পদাঙ্ক অনুসরণ করে চারুকলা শিক্ষা ও চর্চার বিকাশে নানা উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছেন। এ সবের মধ্যে প্রধান হচ্ছে মঙ্গল শোভাযাত্রার ইনট্যানজিবল হেরিটেজের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য প্রস্তাবনা তৈরির কাজে সহায়তা প্রদান এবং চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে ইউনেস্কো পরিষদে উপস্থিত হয়ে বিতর্কে অংশগ্রহণ করে পৃথিবীতে অনন্য নজির সৃষ্টি করা। তিনি দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট শিল্পী-শিক্ষকদের জন্য জয়নুল সম্মাননা প্রদান ও জয়নুল মেলা প্রবর্তন করেছেন। ১৯৫৬ সালে শিল্পাচার্যের পরিকল্পনা অনুযায়ী জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান, সফিউদ্দীন আহমেদসহ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের প্রথম প্রজন্মের বিশ-তিরিশ জন শিল্পীর কাজ নিয়ে ছোট পরিসরে একটি সংগ্রহশালা করা হয়েছিল– যা সত্তরের দশকে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক শিল্পকর্ম বেহাত হয়ে যায়। নিসার হোসেন দেশের বিশিষ্ট শিল্পসংগ্রাহক এম এ রহিমের অর্থায়নে বন্ধ-হয়ে-যাওয়া সংগ্রহশালাটি একটি অত্যাধুনিক আর্ট মিউজিয়াম হিসেবে পুনর্নির্মাণ করেছেন। এতে গত কয়েক বছরে পুরোনো সংগ্রহের মাত্র ১৫টি চিত্রকর্মের সাথে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকা, চীন, জাপান ও কোরিয়ার প্রখ্যাত শিল্পীদের আরও শতাধিক শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে। শিল্পবোদ্ধাদের কাছে সামগ্রিক বিবেচনায় এটি এখন বাংলাদেশের একমাত্র মানসম্পন্ন আর্ট মিউজিয়াম। এ ছাড়া হলি আর্টিসানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত অবিন্তা কবীরের অভিভাবকদের অর্থসহায়তায় ছাত্রছাত্রীদের জন্য অত্যাধুনিক সাইবার সেন্টার স্থাপন; প্রধান লাইব্রেরিটির নতুন বিন্যাস ও সুযোগ-সুবিধা যুগোপযোগী করা; ছাত্রছাত্রীদের আউটডোর স্টাডিতে যাওয়ার জন্য অনুষদের আয় দিয়ে নিজস্ব যানবাহনের ব্যবস্থা করা; এবং মৌলবাদীদের গুপ্ত হামলার আশঙ্কা থাকায় সমস্ত চারুকলাকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা তার গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ১৯৯৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পাঁচতলা ভবন নির্মাণকাজ শুরু হলেও পরবর্তী ১৫ বছরে তা কেবল দুইতলা পর্যন্ত তৈরি করা সম্ভব হয়েছিল। অবশিষ্ট তিনটি তলার নির্মাণকাজ সমাপ্ত করে বর্তমানে তাতে বোর্ডরুম, শিক্ষক-লাউঞ্জ; এবং ওসমান জামাল ট্রাস্টের সহায়তায় ১৫০ আসনের অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম স্থাপন করা হয়েছে। এখন আধুনিক উচ্চপ্রযুক্তি সম্পন্ন একটি এনিমেশন ল্যাব স্থাপনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আমাদের নিসার হোসেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের প্রকৃত অনুগামী এক শিল্পী পুরুষ। প্রতিদিন অহোরাত্র চারুকলা অনুষদ তার ধ্যান-জ্ঞান ও জীবন। তার ছবি, তার প্রগতিশীল চিন্তা ও জীবনযাপন, দেশ-বিদেশে তার কর্মশালার আয়োজন, তার একনিষ্ঠ শিল্পশিক্ষা ও চিত্রকলার সংগ্রাম; সর্বোপরি নবীন-প্রবীণ সতীর্থদের সঙ্গে নিয়ে আমাদের শিল্পকলার বিকাশে শিল্পী নিসার হোসেনের বিস্তৃত উদ্যোগ ও কর্মযজ্ঞে আমি শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের পথচলার ছাপ দেখি এবং গর্বিত হই। আজ ২০ ফেব্রুয়ারি (২০২১) শিল্পী নিসার হোসেনের ষাটতম জন্মবার্ষিকীতে তার ষাট বছরের খতিয়ান শিরোনামের চিত্রকলা প্রদর্শনীর ছবিগুলো সকলের সঙ্গে আমিও প্রাণভরে দেখব ও তাকে নতুন করে পাঠ করব। প্রিয় মানুষ, প্রিয় বন্ধু ও প্রিয় সহকর্মী শিল্পী নিসার হোসেনকে ষাটতম জন্মবার্ষিকীতে আমার অন্তরের অভিনন্দন।