ঢাকায় পানির তৃষ্ণাতে …

মুনতেসার আলী
Published : 11 Sept 2012, 01:48 PM
Updated : 11 Sept 2012, 01:48 PM

ঢাকার মগবাজার ওয়ার‌্যালেস থেকে ফার্মগেট যাব। রিক্সা বা ৩ চাকার ট্যাক্সি পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। পাবলিক বাসই ভরসা নতুবা ঠ্যাং গাড়ী (!)। কিন্তু মগবাজারের রাস্তায় যথারীতি প্রচন্ড জ্যাম। সামনে যতদূর চোখ যায় প্রচুর পাবলিক বাস। হাঁটা শুরু করলাম। ভাবলাম, জ্যাম ছুটতে শুরু করলে তারপর টুপ করে ৬ নম্বর বাস যেটা পাব একটাতে উঠে যাব। হাঁটছি আর হাঁটছি, কিন্তু জ্যাম আর ছুটছে না।হেঁটেই পৌঁছে গেলাম মগবাজার মোড়। ট্রাফিক সিগন্যালে আটকে আছে প্রচুর যানবাহন। চিন্তা করলাম, সিগন্যাল-এর মুখে যে বাসগুলো আছে, তার একটাতে উঠে যাব। কিন্তু সে চিন্তা বাদ দিতে হলো কারণ বাসগুলোর দরজায় পর্যন্ত মানুষ ঝুলতে দেখে। ফুট ওভার ব্রীজ দিয়ে রাস্তা পার হলাম। মগবাজার মোড়ে রিক্সা দেখা গেল। বিনীতভাবে বলেও ফার্মগেট দূরের কথা, ফার্মগেটের কাছাকাছি কাওরান বাজার বা অন্তত এফডিসিররেল ক্রসিং পর্যন্তও রিকশাওয়ালারদের রাজী করানো গেল না। পিছন ফিরে দেখি সেই ট্রাফিক সিগন্যাল তখনও ছাড়া হয়নি। হাঁটা ধরলাম, যতদূর যাওয়া যায়। কাওরান বাজার টিসিবি বিল্ডিং-এর কাছে এসে রিক্সা পেলাম। সেখান থেকে ফার্মগেট ওভার ব্রীজ – এ্ই সামান্য দূরত্বই ২০ টাকার কমে কাউকে রাজী করানো গেল না। অনেকটা পথ হাঁটা হয়েছে। ক্লান্তিও লাগছিল বেশ, সাথে পানির পিপাসা। উঠে পড়লাম রিক্সায়। ফার্মগেট-এ রিক্সা থেকে নেমে চিন্তা করলাম ক্লান্তি ও পিপাসা মিটিয়ে তারপর গন্তব্যের দিকে রওয়ানা করব। ঢুকলাম ফার্মগেট ওভারব্রিজ সংলগ্ন একটা স্ন্যাকস-এর দোকানে। অর্ডার দিলাম একটা ঠান্ডা কোকের। পরে বিল দেওয়ার জন্য একটা ২০ টাকার নোট দিলাম। দেখি দোকানদার বাকী টাকা ফেরত দেয় না। একটু অপেক্ষা করে বললাম, বাকী ৫ টাকা ফেরত দিন। এমনভাবে তাকালো যেন, অপরাধ করে ফেলেছি। বলল দাম ২০ টাকা। ২০০ মি:লি: ছোট কাঁচের বোতলের কোক ২০ টাকা! বলে কি? – বললাম আমি নিজেই। দোকানদারকে বললাম, ঢাকার সব জায়গায় এমনকি ফার্মগেট ওভারব্রীজের পশ্চিম পাশের দোকানেও ১৫ টাকা আর এখানে ২০ টাকা! বলল এখন সাপ্লাই কম, ২০ টাকা। দোকানদারের আর আমার সাথে কথা বলার সময় নাই। ভাবখানা এমন যে, আমি যে কোকটা খেতে পেরেছি সেটাই যেন অনেক ভাগ্যের! আমিও আর কথা না বাড়িয়ে দোকান ত্যাগ করলাম। মনে পড়ল, এর আগে এই ঢাকাতেই একবার আমাকে ১২ টাকার (বর্তমান মূল্য ১৫ টাকা) ছোট পানির বোতলের জন্য ২০ টাকা চাওয়া হয়েছিল। বলতে পারেন বোতলের পানি না খেলে কী হয়! তা বটে। এটাও যে নিরাপদ বিশুদ্ধ খাবার পানি তার তো কোন নিশ্চয়তা নেই। ১৫ টাকার একটা বোতলে ২ গ্লাস পানি হয়। মানে প্রতি গ্লাস খাবার পানির মূল্য ৭.৫০ টাকা! আর কি লিখব ………..।

– মুনতেসার আলী