পদ্মা সেতু নির্মাণের আগেই যোগাযোগ মন্ত্রী শতকরা ১০ ভাগ কমিশন চেয়েছেন। দুর্নীতির কারনে প্রধানমন্ত্রী তাকে অন্যত্র সরিয়ে দায়িত্ব দিয়েছেন। বর্ষিয়ান নেতা সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের এপিএস এর কাছে বিজিবি ৭০ লাখ টাকা উদ্ধার করলো। এপিএস টাকার দায়িত্ব নিয়ে সুরঞ্জিত বাবুকে সাদা করার চেষ্টা করলেন। কিন' সেই ড্রাইভার গেলো কই। টিপাইমুখ বাধ নিয়ে সরকার জনগনের সাথে লুকোচুরি খেলা শুরু করেছেন। প্রতিবাদ করতে গিয়ে গুম হল বিএনপি'র সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আহম্মদ। সারা দেশে, লুটপাট, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি আর দুর্নীতিতে ভরে গেছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের প্রত্যক্ষ মদদে দেশ আজ রসাতলে চলে গেছে। দেশের সকল সরকার দলীয় মন্ত্রী আর এমপিরা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে।
গতকাল বিকাল ৫ টার দিকে ঠাকুরগাঁও পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে এক গণসংবর্ধনা ও বিশাল মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এ বক্তব্য দেন।
মহাসমাবেশ উপলক্ষে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের হাজার হাজার নেতা সমাসমাবেশে অংশ নেন।
মহাসমাবেশে বিএনপি ছাড়াও জামায়াত ও ১৮ দলীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়াও দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ের বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল সহ অঙ্গ সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
মির্জা ফখরুল তার বক্তব্যে আরো বলেন, বিএনপি ও ১৮ দলীয় নেতাদের ভয় পেয়েছে সরকার দল। জেল জুলুম দিয়ে তারা নির্বাচন রুখতে চায়। তারা আবার ৭৫ এর আগের বাকশাল সরকার গঠন করতে চায়। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার নামে তারা লুটপাট করছে। কুইক রেন্টালের মাধ্যমে দেশকে কুইক ফতুর করেছে। নির্বাচনী ইসে-হারে দ্রব্যমূল্যের দাম স্থিতিশীল রাখা, ঘরে ঘরে চাকুরী দেবার প্রতিশ্রুতি করেছিলেন। কোনটাই বাস্তবায়ন হয়নি। কৃষকদের সর্বনাশ করে ফেলেছে। লোক দেখানো ধান ও গমের দাম ঘোষনা করছে কিন' কৃষকদের কাছ থেকে এক ছটাকও ধান ও গম সরকার কিনেনি। ডিজেল আর সারের দাম বাড়িয়ে দিয়ে কৃষকদের কৃষি কাজ থেকে নিরুৎসাহিত করেছে। মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা লুট করেছে। শেয়ার বাজার একেবারেই ধ্বংস করে দিয়েছে।
এমপি হাসানুল হক ইনু সম্পর্কে বলেন, দেশকে অস্থীতিশীল করার জন্য বিএনপিকে দায়ী করছেন অথচ নির্বাচনে জামানত পর্যন্ত- হারান। সংযত হয়ে কথা বলা উচিত।
ডিজিটাল কারচুপির মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় আসতে চান। সেটা বাংলার মানুষ হতে দিবে না। চারদিকে হায় হায় চলছে। মানুষকে শোষন করে যে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছেন তার বিচার এ বাংলার মাটিতেই হবে।
গাড়ি পোড়ানো মামলা সম্পর্কে তিনি বলেন, ছোটবেলায় শুনেছিলাম আওয়ামীলীগ নাকি সাধারন মানুষ আর সত্যের রাজনীতি করে। আমি গাড়ি পোড়ালাম না, আর আমাকে সহ আমার নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হলো। জামিনযোগ্য মামলায় কোর্টকে প্রভাবিত করে কোর্টকে ব্যবহার করছেন। দেশে যে ক্লাশ শুরু করে দিয়েছেন তা দেশের জন্য চরম হুমকি স্বরূপ। এটা দেশের জন্য কোন অবস্থাতেই শুভ নয়।
তত্বাবধায়ক ছাড়া বিএনপি কোন অবস্থাতেই নির্বাচনে অংশ নিবে না এটা বিএনপি চেয়ারপারসন নিজেও বারবার ঘোষনা করেছেন। কারচুপি করে ক্ষমতায় আসার লোভেই অর্ডিনেন্স জারি করেছেন, সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলেছেন। এ ষড়যন্ত্রের রাজনীতি পরিহার করুন নইলে সামনে জনগন টেনে হিচরে আপনাদের ক্ষমতা থেকে নামাবে।
জেল জুলুম করে বিএনপি'র আন্দোলনকে ঠেকানো যাবে না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ আফসোস করছে আপনাদের ভোট দিয়ে। স্বচ্ছ ইলেকশন দিন দেখুন মানুষের ব্যালট কি প্রমান করে। ঠাকুরগাঁওয়ে হরতালে বিএনপি নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে ১৩ টি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় দ্রুত বিচার আইন সহ অন্যান্য মামলায় অর্ধশত নেতা কর্মী জেলখানায় রয়েছেন। তিনি ওই নেতা কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি কামনা করেন।
গতকাল ঠাকুরগাঁও পাবলিক ক্লাব মাঠে মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, জেলা বিএনপি;র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহেদ কামাল ডালিম চৌধুরী। সমাবেশে স্থানীয় যুবদল, শ্রমিকদল, ছাত্রদল, কৃষকদল, মহিলাদল ছাড়াও দিনাজপুর ও পঞ্চগড় জেলা থেকে আসা নেতৃবৃন্দ।