বিজয়ের মাসে জাতীয় পতাকার ব্যবহার

আবু রায়হান
Published : 10 Dec 2012, 12:39 PM
Updated : 10 Dec 2012, 12:39 PM

গাড়ীর ছাদ থেকে বাড়ির ছাদ – সাইকেল, রিকসা, মোটর বাইকের হ্যান্ডেল, ক্রিকেট মাঠসহ-আনন্দ মিছিলগুলোতেও এখন শোভা পাচ্ছে একখানা লাল সবুজ কাপড়। না, এটা কোন সাধারণ কাপড় নয়। এটা আমাদের জাতীয় পতাকা। ১৯৭১ সালে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর স্বাধীন এদেশের আকাশে অভ্যুদয় ঘটেছিল একটি লাল সবুজ সূর্যের। এটাই আমাদের জাতীয় পতাকা। যে পতাকার লাল অংশে মিশে আছে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত। অসংখ্য মা বোনের ইজ্জত। যে বীর-রা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হায়েনাদের বিরুদ্ধে দেশ রক্ষার তাগিদে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছে। তাদের জীবন দিয়ে এদেশের মাটিকে করেছে শত্রু মুক্ত ।

আর সবুজ অংশের দিকে তাকালে এদেশের সুজলা-সুফলা, শস্যে শ্যামলা গ্রাম বাংলার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে পাই। দেখতে পাই পল্লি মায়ের শ্যামলা মুখ। তাই এই পতাকার দিকে তাকালে শিহরিত হই। গায়ের লোম দাড়িয়ে যায়। মনের অজান্তে স্যলুট করি সেইসব বীরদেরকে, যারা তাদের জীবনকে তুচ্ছ ভেবে এদেশকে স্বাধীন করেছে। একটা লাল সবুজ পতাকা উপহার দিয়ে গেছে বাঙ্গালী জাতিকে।

ক্রিকেটের বদৌলতেও যখন বিদেশের মাটিতে আমাদের লাল সবুজ পতাকা পৎপৎ করে ওড়ে। তখনও আমরা শিহরিত হই। হই রোমান্চিত। আর এভাবেই আমাদের বাংলার দামাল ছেলেরা প্রতিপক্ষের কাছ থেকে ছিনিয়ে আনে জয়। যেভাবে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের কাছ থেকে জয় ছিনিয়ে এনেছিল বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

এখন বিজয়ের মাস।১৬ ই ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস। তাই পুরো বাংলাদেশে চলছে লাল সবুজ পতাকার বিজয় মিছিল। এই বিজয় মিছিলেও খুবই ব্যাথিত হই।যখন দেখি কোথাও জাতীয় পতাকার অপব্যবহার। কোথাও রাস্তায় পড়ে আছে অযত্ন, অবহেলায়। কোথাও হেলানো খঁুটিতে বাধা/অর্ধনমিত। ছেলে/মেয়েদের ফ্যাশনেবল কাপড় চোপড়ে। বিশেষ করে পা-জামায়।

আমাদের বুঝতে হবে এই পতাকার মহাত্ব।আমরা যারা বুঝি তাদের দায়িত্ব নিয়ে বুঝাতে হবে এই পতাকা কত ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া, যারা বোঝেনা তাদেরকে। এই পতাকাকে অসম্মান করা আর ৩০ লক্ষ শহীদদেরকে অসম্মান করা একই কথা। তাই আসুন জাতীয় পতাকার অপব্যবহার বন্ধ করে এর সম্মান অক্ষুন্ন রাখি।