বর্তমান রাজনীতির প্রতীকী রাজনীতিবিদ সিদ্ধিরগঞ্জের নূর হোসেন

আরিফ হোসেন সাঈদ
Published : 1 March 2012, 02:20 AM
Updated : 1 March 2012, 02:20 AM

১৯৮৮ সালে দাইমুদ্দিন নামক একজন ট্রাক ড্রাইভার শিমরাইল আন্তঃজেলা ট্রাক চালক শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করেন। তারই হাত ধরে প্রথমে সিদ্ধিরগঞ্জ পুলের ইকবাল গ্রুপের ট্রাকের হেল্পার ও পরে ট্রাক-চালক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন হোসেন। ১৯৮৯ সালে দাইমুদ্দিনকে সরিয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের ক্ষমতা দখল করেন। প্রথমে যোগ দেন জাপাতে। তারপর ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতা হয়ে বিএনপির পক্ষে কাজ করেন। ১৯৯২ সালের সিদ্ধিরগঞ্জ ইউপির চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হলে সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন তার পক্ষ নেয়। নির্বাচনে জয়ী হলে সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা পুরো সিদ্ধিরগঞ্জ দখল নেয় নূর হোসেন। ১৯৯৬ আওয়ামী শাসনামলে বিএনপির পক্ষ থেকে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী নূর হোসেন গিয়াস উদ্দিনের সহযোগিতায় বিজয় লাভ করেন। কিন্তু হাত মেলান শামীম ওসমানের সাথে। তিনি আওয়ামীলীগ নেতা হিসেবে পরিচিতি পান। এসময় তিনি শামীম ওসমানের ছায়াতলে সিদ্ধিরগঞ্জের ডন হিসেবে আবির্ভূত হন। শামীম ওসমান, মাকসুদ ও সারোয়ারকে নিয়ে তার শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৯২ সালের ১৮ জুন নূর হোসেন শিমরাইলে ট্রাক চালকদের একটি সংঘর্ষে বিপুল পরিমাণ বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আলোচনায় আসেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর রিকশাচালক আলী হোসেন ও যুবলীগ নেতা আব্দুল মতিনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেন। ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই হোসেন তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ভারতে পালিয়ে যায়। ২৩টি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। একটি মামলার রায়ে অনুপস্থিত থাকায় তাকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ডও দেয়া হয়েছিল।

২০০৭ সালের ১২ এপ্রিল আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল নূর হোসেনের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করে। ইন্টারপোলের ওয়েবপেইজ ঘেঁটে নূর হোসেন সম্বন্ধে জানা যায় (১৭ ডিসেম্বর ২০১০) সশস্ত্র অপরাধ, হত্যা ও অঙ্গহানিসহ বিভিন্ন অপরাধ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে ইন্টারপোল তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। ২০০৮ সালে ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার দেশের শাসন ক্ষমতায় আসলে হোসেন চেয়ারম্যানের ফেরারি জীবনের ইতি ঘটে। ২০০৯ সালের ২০ জুন সবুজ সংকেত পেয়ে হোসেন চেয়ারম্যান সিদ্ধিরগঞ্জে নিজ এলাকায় ফেরেন।

জানা গেছে, ২০০৯ সালের ৮ জুন এইচটি ইমাম স্বাক্ষরিত 'অতি জরুরি' লেখা একটি চিঠি স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে দেয়া হয়। এই চিঠির অনুলিপি দেয়া হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র সচিবকে। এই চিঠিতে হোসেন চেয়ারম্যানকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এক ত্যাগী নেতা হিসেবে অভিহিত করে বলা হয়েছে, সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে তাকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণ করে। সে যাতে আইনের আশ্রয় নিতে না পারে সে জন্য তাকে ক্রসফায়ারে দেয়ার চেষ্টাও করা হয়। বর্তমানেও নূর চেয়ারম্যানকে আবার ক্রসফায়ারে দেয়ার পাঁয়তারা হচ্ছে বলে চিঠিতে উল্লেখ আছে। এ জন্য তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়। এমনকি নূর হোসেনকে সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে নিয়োগের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়।

জানা গেছে, এই চিঠির পরই পরিস্থিতি পাল্টে যায়। নারায়ণগঞ্জ পুলিশের ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলা হয় হোসেন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। ২০০৯ সালের আগস্ট মাসে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড ওয়ারেন্ট প্রত্যাহার করা হয়। এবং পরবর্তীতে যে ৮ জনের রেড ওয়ারেন্ট প্রত্যাহার করা হয় তার মধ্যে একজন নূর হোসেন। স্থানীয় এমপি কায়সার হাসনাত এইচটি ইমামের চিঠি দেয়ার বিষয়টি পুরোপুরি সত্য এ ব্যাপারে সাপ্তাহিককে নিশ্চিত করেন। চেয়ারম্যানের ও তার লোকজন এইচটি ইমামের চিঠি দেখিয়ে প্রশাসনকে প্রভাবিত করছে। আইজিপি নূর মোহাম্মদ ও র্যা বের ডিজি খোন্দকার হাসান মাহমুদের সঙ্গে নূর হোসেনের সখ্য রয়েছে বলে তার লোকজন এলাকায় প্রচার করছে। পুলিশ সুপার বিশ্বাস আফজাল হোসেন একটি পত্রিকাকে বলেন, 'আগে সন্ত্রাসীর তালিকায় নূর হোসেনের নাম ছিল। বর্তমানে তালিকায় তার নাম নেই। নূর হোসেন সকল মামলায় জামিনে আছেন'। তবে সংসদ সদস্যের সঙ্গে সখ্যতা বাড়ানোর চেষ্টায় একজন আওয়ামী লীগ নেতাকে একটি গাড়ি (টয়োটা এলিয়ন) উপহার দেন। শিমরাইল আন্তঃজেলা ট্রাক মালিক সমিতির নেতা রিয়াজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার অভিযোগ, পেশাদার সন্ত্রাসী হোসেন চেয়ারম্যান কখনো আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত ছিল না। তিনি আরও জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হত্যা, চাঁদাবাজি ও বোমাবাজির অভিযোগে হোসেন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা হয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইউনিয়ন পরিষদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তার বিরুদ্ধে একাধিক তদন্ত হয়েছে। প্রসঙ্গত বিগত চারদলীয় জোট সরকার ও পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নারায়ণগঞ্জ জেলা-পুলিশ ও র্যা বের তালিকার শীর্ষে ছিল নূর হোসেনের নাম। কিন্তু মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই নাম বিয়োজন করা হয়। প্রসঙ্গত, নূর হোসেনের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানায় বিভিন্ন অপরাধে ১৩টি মামলা রয়েছে। তবে সবগুলো মামলায়ই বর্তমানে তিনি জামিন প্রাপ্ত। পুলিশ, এলাকাবাসী ও মামলা-সূত্রে জানা যায় ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বেপরোয়া টেন্ডার বাণিজ্য, নৌপথে চাঁদাবাজি, সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ-কেন্দ্র, পরিবহন সেক্টর, আন্তঃজেলা ট্রাক টার্মিনাল, শিমরাইলের সওজ অফিসে হামলা করে নির্বাহী প্রকৌশলীর রুম দখল, ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডাকাত লাইমুদ্দিনকে হত্যার ঘটনার মধ্য দিয়ে নূর হোসেন বাহিনী এলাকায় একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করে। সিদ্ধিরগঞ্জ ইউপি পরিষদের সব ঠিকাদার জিম্মি হয়ে পড়েন নূর হোসেন ও তার বাহিনীর সদস্য শাহজালাল বাদল, আমান, মেম্বার বাতেন, নূর-উদ্দিন, সেলিম, মিজান, সিরাজ, চঞ্চল, বাবুল, শিপন, বাদল, জজ মিয়া, মামুনদের কাছে। বর্তমান থানা-পুলিশ, সওজ, পৌরসভা, পাওয়ার হাউসের সব টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে হোসেন চেয়ারম্যানের কথায়।

তবে সওজে টেন্ডার বাজির দেখভালের দায়িত্ব ভাতিজা বাদলের ওপর। ২% কমিশন ছাড়া কোনও ঠিকাদারই শিডিউল জমা দিতে পারেন না সড়ক ও জনপদে। শিমরাইল মোড়ে পরিবহন ও ফুটপাথে চাঁদাবাজি এবং তার বাড়ির সামনে মাদকের স্পট চলছে প্রকাশ্যে। নিজের চেয়ার ধরে রাখতে উল্টো সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইন-চার্জ পাহারাদার হিসেবে কাজ করছেন এসব অবৈধ কাজের।

ভাতিজা বাদল ও সোহেল দেখাশোনা করেছে তার অবৈধ অস্ত্রের ভাণ্ডার। যোগাযোগ রাখছে জেলা ও আশপাশে এলাকার সন্ত্রাসীদের সঙ্গে। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটের পেশাদার চাঁদাবাজদের নিয়ে বাদল গঠন করেছে একটি সিন্ডিকেট। এতে নেতৃত্বে রয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের কমিটির সভাপতি সামাদ ওরফে লেতুর সামাদ, সাদেকুর রহমান সাদেক ও সায়েম। সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভার অনুমোদিত ইজারাদার দাবি করে সোনালী ট্রেডার্স টোল আদায়ের নামে মহাসড়কের বিভিন্ন পরিবহন থেকে মাসে ন্যূনতম ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করছে।

চিটাগাং রুট টু যাত্রাবাড়ী লেগুনা পরিবহনের দেখভাল করছে চেয়ারম্যানের ভাই নূর-উদ্দিন। এই রুটে পরিবহন চলছে ১৮০টি। প্রতিটি লেগুনা পরিবহন থেকে দৈনিক ২০০ টাকা চাঁদা তুলছে নূরউদ্দিনের লোকজন। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে মাসিক ১৫ হাজার টাকা দিয়ে বাদ বাকি টাকা নূর-উদ্দিন একাই ভোগ করছে।

হোসেন চেয়ারম্যানের দুই ভাতিজা শাহজালাল বাদল ও সোহেল ব্যবসায়ী হাবিব হত্যার মামলার ফাঁসির আসামি। চেয়ারম্যানের দুই ভাই নূরুজ্জামান জজ ও নূরউদ্দীন একই মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। আরেক ভাই বাদলের বাবা নূর সালাম। এলাকার সরকারি জমি, ডিএনডি বাঁধের ও সওজের জমি দখল করে বিক্রি করা তার পুরনো পেশা। এলাকায় পরিচিত বোবা ডাকাত নামে। চাচাত ভাই নাছির ওরফে কালা নাছির পাইকারি মাদকের আড়তদার। এরা প্রত্যেকে নিয়ন্ত্রণ করছে পৃথক পৃথক সন্ত্রাসী বাহিনী। গ্রুপভিত্তিক তাদের কাজ ভাগ করে দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যানের পক্ষে প্রত্যেক গ্রুপের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে তার দুই ক্যাশিয়ার আলী মাহমুদ ও সানাউল্লাহ।

নূর হোসেনের চাচাত ভাই নাছিরের মাদক ব্যবসা নিয়ে জেলার আগামী আইনশৃঙ্খলা সভায় আলোচনা করবেন বলে একটি পত্রিকাকে জানান এমপি কায়সার হাসনাত।

দুরন্ত পরিবহণের মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায় নারায়ণগঞ্জ ৪ নং ওয়ার্ডের কমিশনার নির্বাচিত হওয়ার পূর্বে নূর হোসেন সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জ রুটের বাসগুলো থেকে ২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করত। ১ আগস্ট ২০১১ শিমরাইলে নৌ পরিবহণ মন্ত্রী শাহজাহান খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান, স্থানীয় এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার, সাবেক এমপি শামীম ওসমান এসে নূর হোসেনের পক্ষে বক্তব্য দেন। তার পরপরই চাঁদা ২০০ থেকে ৪০০ হয়ে যায়। সিদ্ধিরগঞ্জ রুটের পরিবহন মালিক সমিতি এর সত্যতা নিশ্চিত করেন। নূর হোসেনকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি তা পুরোপুরি অস্বীকার করেন।

নূর হোসেনের ছোট ভাই নুরুজ্জামান জজ সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় পরিচিত 'ছোট মিয়া' নামে। তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কাঁচপুরের ওয়াপদা কলোনি থেকে শুকরসী পর্যন্ত প্রায় ১০ একর এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদী দখল করে পাথর ও বালুর ব্যবসা। এখান থেকে মাসে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা আয় করছে জজ সিন্ডিকেট। এ ছাড়া শীতলক্ষ্যা নদীতে ট্রলারে চাঁদাবাজি গ্রুপটি তার নিয়ন্ত্রণেই। জানা গেছে এখান থেকে মাসে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা আয় করছে জজ সিন্ডিকেট। এ ছাড়া শীতলক্ষ্যা নদীতে ট্রলার চললে জজ বাহিনীকে চাঁদা দিতে হয় বাধ্যতামূলক। চাঁদা না দিলে ট্রলার ছিনতাই ও শ্রমিককে মারধর করা হয়। এ বাহিনীতে রয়েছে জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি মতিন মাস্টারের ছেলে হাসান, ভাতিজা বাদল, কাঁচপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী কানা ফারুক, এমপি গিয়াস উদ্দিনের সাবেক সহচর সালাউদ্দিন ওরফে লাদেন, ভেজাল আমান ও চনপাড়া বস্তির শীর্ষ সন্ত্রাসী বিএনপির ক্যাডার সেলিম।

জানা গেছে, ফুটপাথের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছে হোসেন চেয়ারম্যান নিজেই। আন্তঃজেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন শিমরাইল শাখার সভাপতির পদটি দখল করছে হোসেন চেয়ারম্যান। নির্বাচিত সভাপতি আইয়ুব আলী হোসেন চেয়ারম্যানের ক্যাডার বাহিনীর ভয়ে টার্মিনালের আশপাশেও আসার সাহস পাচ্ছে না। শ্রমিক ইউনিয়নের নামে অবৈধভাবে টার্মিনাল দখল করে প্রতি গাড়ি থেকে দৈনিক ন্যূনতম ২০০ টাকা চাঁদা তুলছে। শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ের পেছনে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার জুয়ার আসর বসছে। পুরোপুরি অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ীদের ভাড়া দিয়ে অগ্রিম বাবদ হোসেন চেয়ারম্যান ৫০ লাখ টাকা কামিয়েছে।

বর্তমানে তারকা সন্ত্রাসী নূর হোসেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪নং ওয়ার্ডের কমিশনার ও তার আপন ভাইয়ের ছেলে সন্ত্রাসী শাহজালাল বাদল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৩নং ওয়ার্ডের কমিশনার।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চিটাগাং রোডের চাঁন সুপার মার্কেট, বদর উদ্দিন মার্কেট, এমপি মার্কেট, নেকবর আলী মার্কেট ও আমীর ভাণ্ডারী মার্কেটের ফুটপাত দখল করে ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম নিয়ে হকারদের জায়গা ভাড়া দেয়া হয়। দৈনিক ন্যূনতম ১০০ টাকা, মাসিক ২০০০-৬০০০ টাকা ভাড়ায় চলছে এসব দোকান। ভাড়া দিতে দেরি হলেন চলে নূর হোসেনের লোকদের অত্যাচার। স্বচক্ষে গিয়ে দেখতে পাই একজন ফল বিক্রেতাকে মারধর করে তার ফলে দোকান ভেঙে দিয়েছে এবং তার সব ফল নষ্ট করে দিয়েছে। লোকটি ভয়ে কাঁদতেও পারছিল না। নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন হকার জানাল, ভাই বাঁচান। আবার চেয়ারম্যান নতুন কইরা পঞ্চাশ হাজার টেকা চাইছে, দিতে না পারলে দোকান তুইলা দিব। এভাবেই চলছে সিদ্ধিরগঞ্জ। প্রতিদিন রাত পোহায় কিন্তু সত্য লুকিয়ে থাকে পচা ডোবার ভেতরে।

আরিফ হোসেন সাঈদ
03-01-12, 04:20 AM
নারায়ণগঞ্জ।