সীমান্ত অরক্ষিত রাজপথে বিএসএফ

আরিফ হোসেন সাঈদ
Published : 14 March 2012, 07:01 PM
Updated : 14 March 2012, 07:01 PM

ফেনী নদী থেকে ভারত ২৫ টি পাম্পের সাহায্যে একতরফা ভাবে পানি নিয়ে যাচ্ছে। এ পাম্পগুলো রামগড়ের মহামুনি, দারোগাপাড়া, বল্টুরাম, কয়লারমুখ, বাগানবাজার, কাশিরাম, ফটিকছড়ি, মিরসরাই, ফেনীর শুভপুর ও মুহুরী প্রজেক্টসহ প্রায় ৮৬ কিলোমিটার এলাকায় ২৫টি স্পট দিয়ে মাটির নিচ দিয়ে পাইপ বসিয়ে একতরফা ভাবে পানি নিয়ে যাচ্ছে ভারত। ফেনী উত্তরাধিকার সূত্রে বাংলাদেশের নদী। ব্রিটিশ শাসনামলে এ নদীর তীরেই রামগড় ব্যাটালিয়নের সৃষ্টি হয়, যা আজ বিজিবি। এক সময়ের এই স্রোতস্বিনী নদীটি আজ ধুধু বালু চর। জানা যায়, কোন রকম দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ছাড়াই ভারত এ নদী থেকে একতরফা পানি নিয়ে যাচ্ছে। এদিকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড় সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বসবাসকারী লোকজন চাষাবাদের জন্য নদী থেকে পানি আনতে গেলে বাঁধা দিচ্ছে বিএসএফ। এমনকি এক কলসি পানি আনতে গেলেও বন্ধুক তাক করে গুলির ভয় দেখাচ্ছে বিএসএফ। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারত ফেনী নদীর আঁকাবাঁকা পথগুলো কেটে পরিবর্তন করে কৃত্রিমভাবে ভারতে প্রবাহিত করে এবং ১৯৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির মাধ্যমে প্রথম ফেনী নদীতে আগ্রাসন চালায়। এদিকে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ভারতের কলকাতায় যৌথ নদী কমিশন বৈঠকে খাগড়াছড়ি রামগড়ের সীমান্তের দারোগাপাড়া দিয়ে ভারত ইনটেক ওয়াল নির্মাণের মাধ্যমে ১.৮২ কিউসেক পানি নেয়ার অনুমতি পায়। এতে নদী তীরবর্তী লাখ লাখ মানুষ চরম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা জানান এমনিতে সরকারের চরম অবহেলায় তারা পানির অভাবে চাষাবাদ করতে পারছেন না, মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে নদী তীরবর্তী অঞ্চল। তার উপর এভাবে ১.৮২ কিউসেক পানি ভারত নিয়ে গেলে তারা না খেয়ে মরবেন।
সূত্র: ১৩ই মার্চ, ২০১২, দৈনিক আমার দেশ।

এদিকে ১২ই মার্চ সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার মিনা টিলায় বাংলাদেশী তরুণরা মাঠে ফুটবল খেলতে গেলে একযোগে বিএসএফ হামলা চালায়। এতে ১০ বাংলাদেশী আহত হন।

এদিকে ১২ই মার্চ ভারতীয় কাস্টমস কর্মকর্তাসহ ৩ ভারতীয় নাগরিক বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ করলে বিজিবির তাহে গ্রেফতার হন।

এদিকে কুড়িগ্রামে ভূরুঙ্গামারীর তিলাই সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে দুধকুমার নদীতে বিএসএফ একতরফা বাঁধ নির্মাণ শুরু করে। বিজিবির পক্ষ থেকে নদীর গতিপথ পরিবর্তন না করে, যৌথ নদী কমিশনের জরিপ ও সিদ্ধান্ত শেষে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানায়। কিন্তু বিএসএফ তা না মানলে সীমান্তে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে বিএসএফ ১১ মার্চ পতাকা বৈঠকে বাঁধ নির্মাণ স্থগিত রাখতে সম্মত হয়।

এদিকে ১২ই মার্চ মহাসমাবেশে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশীদের হত্যার জন্য সরকারের চরম সমালোচনা করেন। দৈনিক পত্রিকার বরাত দিয়ে তিনি জানান, এখন বাচ্চাদের বিএসএফের ভয় দেখিয়ে ঘুম পাড়ানো হয়। এবং সরকার বিডিআরকে দুর্বল করে ফেলেছে। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে ঢুকে বিএসএফ এখন মানুষ মারছে। কিন্তু সরকার প্রতিবাদ করতে পারছে না।

এদিকে ১২ই মার্চ, সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে দেখা গেছে রাজপথে। যেখানে সীমান্তে একের পর এক মানুষ হত্যা হচ্ছে, সীমান্ত অবাধ মাদক পাচারের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে সেখানে বিজিবিকে রাজপথে দায়িত্ব পালনে সকল মহল থেকে হতাশা জানানো হয়েছে। সকলে একে সরকার কর্তৃক অকার্যকর বিজিবি হিসেবেই দেখছেন।

আরিফ হোসেন সাঈদ,
০৩/১৪/১২, নারায়ণগঞ্জ।