গার্মেন্টস এবং আমাদের দেশ

মাহবুব ইসলাম অর্নভ
Published : 5 Dec 2015, 05:59 PM
Updated : 5 Dec 2015, 05:59 PM

গার্মেন্টস এর কথা যদি আমি বলি তাহলে, বর্তমানে প্রথমেই সাধারণত কিছু কথা আমাদের স্মৃতিতে ভাসে, তা হল, "রানা প্লাজা ধ্বংস, গার্মেন্টস কর্মীদের বেতন নিয়ে ঝগড়া আরও কত যে কি"। তাহা যাই হোক না কেন, আসলে গার্মেন্টস শিল্পগুলো আমাদের দেশের এক অন্যতম সম্পদ। শুধু তাই নয়, গার্মেন্টসগুলোর মাধ্যমেই আমাদের দেশের অনেক দরিদ্র মানুষ আজও খেঁটে-খেয়ে বেঁচে আছে। আর রপ্তানির মধ্যেও গার্মেন্টস শিল্পগুলো বিশেষ অবদান রেখেছে, তা আমাদের দেশের সকলেই জানে।

আজ কিছু কথপকথন এর কাহিনীর কথা বলবো, যা আমি কিছুদিন আগে একজন দোকান মালিক, একজন গার্মেন্টস এর মালিক এবং একটি দরিদ্র গার্মেন্টস শ্রমিক এর সাথে কথা বলে জেনেছি। কথাগুলো আসলে বাস্তব এবং সত্য।

প্রথমেই বলছি গার্মেন্টস মালিকের কাহিনীটি, তিনি আমার পরিচিত ব্যাক্তিদের মধ্যে একজন ছিলেনঃ-

"আঙ্কেল এর সাথে কথা বলে জানতে পেরেছিলাম, গার্মেন্টস এর ভিতর কাজের ভিত্তি অনুসারে কয়েকটি বিভাগ রয়েছে সেগুলো হল; কাপর কেনার বিভাগ, কাপড় কাটার বিভাগ, সেলাই করার বিভাগ, কাপড় ধোঁয়া এবং ইস্তারি করার বিভাগ এবং আরও অনেক বিভাগ। আঙ্কেল আরও বলেছিলেন যে তিনি বিদেশ থেকে টেন্ডার পান এবং যদি কোনো বড় কনট্র্যাক্ট (নিম্নে ১০০ টি কাপড়ের) আসে তাহলে তিনি তা টেন্ডার/কনট্র্যাক্ট মতাবেক করেন, তবে তারা কোন ছোটো (৪-৫ টি কাপরের) কাজ করেন না। যাহা স্বভাবতই স্বাভাবিক। আমি আরও জানতে পারলাম যে, গার্মেন্টস এর মালিকরা যারা তাদের মতন, তারা স্বাভাবিকই চেষ্টা করেন প্রথমে তাদের কনট্র্যাক্টগুল হতে টাকা পেয়ে কর্মীদের বেতন দিতে। অনেক সময় যদি তিনি ব্যাবসায় লাভ না করে লোকসান করেন তখন তিনি তার নিজের জমানো টাঁকা থেকে তা দিয়ে দেন। তিনি বলেছেন, অনেক সময় গার্মেন্টসে যদি সকল দিক থেকে লোকসান হয় বা একই সাথে প্রায় সকল কনট্র্যাক্টগুল থেকে তারা লোকসান পান, তখনই গার্মেন্টস কর্মীদের বেতন আটকে যায়। কিছু কিছু অসাধু গার্মেন্টস মালিক রয়েছেন তারা নাকি তাদের গার্মেন্টস এর মেয়েদের দিয়ে বিভিন্ন খারাপ কাজও করিয়ে থাকেন।" জনগণ এবং আমার পাঠকবৃন্দ, সাবধান। এদের খপ্পরে পড়বেন না। "আঙ্কেল আরো বলেছিলেন, যারা অনেক বড় গার্মেন্টস এর মালিক তারা সহজে লোকসান করলেও কর্মীদের বেতন দিয়ে দিতে পারেন। তিনি বলেছেন, "আসলে সকলকে সৎ হতে হবে, এই লোকসান থেকে বাঁচতে হলে।" গার্মেন্টস কর্মী এবং এর মালিককেও।" পাঠকবৃন্দ আপানরা হয়তো ভাবছেন, মালিক সবসময় খারাপ থাকে, আসলে গার্মেন্টস এর কর্মচারীরাও অনেক সময় এমন অনেক কাজ করে, যা গার্মেন্টস শিল্পকে বিপদে ফেলে, যেমন, হঠাৎ করে চাকরি ছেড়ে দেয়া, সকলে মিলে কোন কারন ছাড়াই গার্মেন্টস কর্মীদের নেতার কথায় বিদ্রোহ করা ইত্যাদি।

এবার আমি বলছি এক গার্মেন্টস কর্মীর কাহিনী- "গার্মেন্টস কর্মীর সাথে কথা বলে জানতে পারলাম যে, বেশির ভাগ গার্মেন্টস কর্মীর বেতনই আটকে যায় যদি গার্মেন্টস লোকসান করে। আর সকল গার্মেন্টস কর্মীদের পরিবারই কিছুটা হলেও গরীব। যদি অনেক দিনের বেতন আটকে যায় বা গার্মেন্টস এর শ্রমিক নেতা অসাধু হয়ে থাকেন তাহলেই, গার্মেন্টস বিদ্রোহ ঘটে।"

এবার বলছি এক কাপড়ের দোকানের মালিকের কথা, "দোকানের মালিক মধ্যবিত্ত পরিবারের। তিনি বলেছেন, তিনি বা তাদের মতন ব্যাবসায়িরা কাপড়ের লট (অনেক কাপড় পাঁচ মিশালি আকারে) ক্রয় করে তা বিভিন্ন দামে বিক্রয় করেন। তবে যে কাপড়গুলতে অল্প কোন সমস্যা থাকে বা পুরনো থাকে সেগুলো তারা কম টাঁকায় কিনতে পারেন, যা আমরা স্বভাবতই দেখে থাকি রাস্তার উপর বিক্রি করতে।"

আসলে হচ্ছে, আমাদের দেশের গার্মেন্টসশিল্প খারাপ নয়। তবে কিছু কিছু খারাপ গার্মেন্টস মালিকের কারণে বাকি সকলেই মন্তবের সম্মুখে পরেন।

আমার কথাগুলো শেষ করার আগে আপানদের কিছু উপকার করে যাই। যারা আপনার নিকটস্থ গার্মেন্টস এর খোঁজ পেতে চান, বা গার্মেন্টস চাকরির খোঁজ, বা গার্মেন্টস মালিকরা কোন লিয়াজু করতে চান, বা দোকানের মালিকরা কাপড় কিনতে চান তারা নিম্ন লিঙ্কগুলোতে একবার করে হলেও দেখে যেতে পারেন।

আপানার নিকটস্থ কাছের গার্মেন্টস সম্পর্কে জানতেঃ-

কাপড় পুন-নির্মাণ বা মেরামত করতেঃ-

কাপড়ের নকশা সেবা পেতেঃ-

কাপড়ের হ্যাঙ্গার পেতেঃ-

আশাকরি, আপনারা আমার দেয়া তথ্য পেয়ে, আপনাদের কিছুটা হলেও উপকার হবে। যদি কেউ কারো বা পরিচিতি গার্মেন্টসকে তালিকাভুক্ত করতে চান তাহলে নিম্নলিঙ্কটিতে যেতে পারেনঃ-

আপনাদের প্রচেষ্টাকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি।