কোরবানির আমেজ নেই বানভাসি পরিবারগুলোতে

আমিনুর রহমান হৃদয়
Published : 28 August 2017, 03:36 PM
Updated : 28 August 2017, 03:36 PM


বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম থেকে নেওয়া ছবি

ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানেই খুশি। কিন্তু যখন কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ সেই উৎসবের আগে মানুষের ঘর-বাড়ি,ফসলের ক্ষেতসহ নানা জায়গায় হানা দেয়। মানুষের সব স্বপ্ন নিমিষেই তছনছ করে দেয়। তখন কোন উৎসবই আর আনন্দের হয় না। গত ১২ অগাস্ট হঠাৎ প্রবল বর্ষণে আর উজান থেকে ধেয়ে আসা পানিতে ঠাকুরগাঁও জেলার টাঙ্গন নদীসহ অন্যান্য ১০ টি নদীতে রেকর্ড পরিমাণ পানি বৃদ্ধি পায়। টানা কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে জেলার ৫টি উপজেলার ৪০ টি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধেক নিম্নাঞ্চল এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে লাখো মানুষ। ঘর-বাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শ্রমজীবি মানুষের। নিঃস্ব হয়ে গেছে অনেকেই। টাকার অভাবে ঘর-বাড়ি ঠিক করতে পারছে না ক্ষতিগ্রস্তরা।

বন্যায় আক্রান্ত হওয়ার পর ঠিক মতো পেট ভরে খাবার খেতেও পারছে না বানভাসি মানুষেরা। এরই মাঝে আবার যোগ হয়েছে কোরবানির ঈদ। আগামী শনিবার উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সারা দেশের মানুষ পালন করবে পবিত্র ঈদুল আযহা। কিন্তু এবারের ঈদ বানভাসি পরিবারগুলোর জন্য অনেকটা দুঃখ ও কষ্টে ভরা। ঈদের আমেজ নেই এই পরিবারগুলোর মানুষের মাঝে। মানবেতন দিন যাপন করছেন তারা। ইতিমধ্যে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন বানভাসি এই পরিবারগুলোর মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছে। তবে সেই ত্রাণেও দুঃখ ও কষ্ট লাঘব হচ্ছে না বানভাসি মানুষদের। সরকারিভাবে বড় ধরনের কোন সহায়তা পেলে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে উঠে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবেন এমনটাই বলছেন বানভাসি মানুষেরা।

ত্রাণ ও পূনবার্সন অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারি তথ্য অনুযায়ী মাত্র কয়েক দিনের বন্যায় ঠাকুরগাঁও জেলার ৪০টি ইউনিয়নের ২ শতাধিক গ্রাম ও ২০ হাজার পরিবারের দেড় লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অপরদিকে নদী ভাঙনে আড়াই হাজার বসতভিটা সম্পূর্ণ ও ২০ হাজার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, বন্যার পানিতে নতুন করে রোপা আমনসহ ৩৭ হাজার ৫শ হেক্টর জমির ফসল পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে কৃষকের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২৫ কোটি টাকা। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে সরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ ঘর-বাড়ি নিয়ে খুব বিপাকে রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারি ভাবে ব্যবস্থা করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে জেলা প্রশাসন আছে।