শাহবাগ…প্রজন্ম চত্বর….অন্য বাংলাদেশ

এ আর খান
Published : 16 Feb 2013, 09:35 PM
Updated : 16 Feb 2013, 09:35 PM

• সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা
• প্রতিদিন বিভিন্ন নির্জন জায়গায় বেওয়ারিশ লাশের মিছিল
• সাগর-রুনির হত্যা রহস্য উন্মোচনে সরকারের বেয়াড়া রকমের গড়িমসি
• তাহের ও তাহের পুত্রের মত নৃশংস সন্ত্রাসীদের রাষ্ট্রপতির ক্ষমা
• বিশ্বজিৎ হত্যা তথা ছাত্রলীগের অকথ্য নৃশংসতা
• দেশজুড়ে চলা সীমাহীন দুর্নীতি

শাহবাগে কত ঘুরোছি আর আজিজ সুপার মার্কটে কত আড্ডা মেরেছি ঘন্টার পর ঘন্টা, হুমায়ূন আহমেদের কত উপন্যাসে শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেট থেকে কাঁটাবনের দিকে হেঁটে গেছে হিমু তুমুল বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে, কত বেয়াড়া লোকাল বাস হুট করে শাহবাগ মোড়ে ব্রেক কষে জ্যাম বাঁধিয়ে দেয় প্রতিদিন, এই শাহবাগেরই ট্র্যাফিক সিগন্যালে আটকে থেকে ট্র্যাফিক পুলিশকে গালামন্দ করেছি- সিগন্যালটা ছাড়ে না কেনৃ রে?! আবার কখনো মিনিটের পর মিনিট চৌরাস্তার মোড়ে বেকুবের মত দাঁড়িয়ে থেকে সেই ট্র্যফিক পুলিশকেই উল্টো গালমন্দ করেছি- সিগন্যালটা আটকায় না কেন্ রে?! পাবলিক লাইব্রেরিতে আ্যাসাইনমেন্ট ম্যাটেরিয়াল জোগাড় করতে যাওয়ার অজুহাতে বা পাবলিক বাসের লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে বঙ্গ ললনা দর্শনে বিমোহিত হয়েছি, বারেডেম কিংবা পিজি তে দেখতে এসেছি অসুস্থ কোন প্রিয়জনকে, প্রিয়জনকে পাগলামি মার্কা অদ্ভুত সব জিনিসপত্র উপহার দিয়েছি আজিজ মার্কেটের কিম্ভূত দর্শন দোকান থেকে কিনে, সিঙারা-পেঁয়াজু-চা অবিরাম আড্ডা কত সময় খেয়ে নিয়েছে; এই শাহবাগেই! ছোট্ট বেলায় শিশু পার্কে যাবার বায়না থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত বড়বেলায় দোস্তের বিয়ের গাড়ি বা গায়ে হলুদের মঞ্চ সাজানোর চাহিদাও মিটিয়েছে এই শাহবাগের মোড়ের ফুলের দোকান। আজো ঈদের দিনের সন্ধ্যেটা বা বৃহ:স্পতিবার অফিস শেষে শাহবাগে না আসলে যেন সপ্তাহ শেষের 'চাঁদ রাতটা' জমেই না! আরো কত শত স্মৃতি, হাসি-কান্না, দৈনন্দিন প্রয়োজনের এই শাহবাগ আজ আরেক নতুন রুপে সুশোভিত। এই শাহবাগের বুক দিয়ে প্রতিদিন হেঁটে চলা চিরচেনা তরুণদেরই শাহবাগ আবার ধারণ করেছে নতুন শক্তিতে।যে শাহবাগের প্রতি ইঞ্চি ইঞ্চি জায়গায় তরুণেরা অর্থহীন ঠাট্টা-মশকরায় মেতে থাকে প্রতিদিন, সেই একই শাহবাগের প্রতি ইঞ্চি ইঞ্চি জায়গায় আজ তরুণেরা হয়ে উঠেছে ভয়ংকর বিদ্রোহী, পরিণত কন্ঠস্বর, নতুন প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা; আর তাই শাহবাগের আরেক নাম হয়ে গেছে "প্রজন্ম চত্বর"।

আমাদের সৌভাগ্য, অবশেষে প্রধাণমন্ত্রী পাঁচ-পাঁচটি দিন পর অভিনন্দন জানালেন লাকী আক্তার, হাসান, ডা. ইমরান, রনি, তন্ময়, তৌফিক, সুমিতদের। এই পাঁচদিন যে তিনি কি করলেন সেটা এক রহস্য! কারণ সংসদে দাঁড়ানো অগ্নিকন্যার কন্ঠ যেন ঢাকার শীতকালীন গ্যাস সংকটে টিমটিম করে জ্বলা সিঙ্গেল বার্নার। কামরুল ইসলাম, শফিক সাহেবদের মুখগুলো বড়ই শুকনো শুকনো লাগছে।হানিফ সাজেদাদের তো এই তরুণরা পানির বোতল আর জুতা-স্যান্ডেল মেরে মিডিয়াতে মুখ দেখানোতেই সমস্যা করে দিয়েছে। সাধুরা কি তবে 'কট' খেয়ে গেলেন? ছাত্রলীগ আর জাসদের সাথে ছাত্র ইউনিয়নের স্বভাব সুলভ সরল ও উদার সংহতিতে করা লোক দেখানো সাজানো মিছিল যে এই তরুণরা এতটা 'সিরিয়াস' পর্যায়ে নিয়ে যাবেন সেটা বোধ করি রাষ্ট্রযন্ত্রের মাথায় ছিল না। আমি বহুবার আওয়ামীলীগকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলাম, এই দেশের মানুষ প্রতিনিয়ত সামান্য মৌলিক অধিকার নিয়ে লড়াই করতে করতে আপনাদের মুখোশ ধরে টান দেবার সুযোগ পায় না। আপনারা হয়তো ভেবেছিলেন এবারও তাইই হবে। বাংলাদেশের মানুষ যখন মাথা ঘামানো আরম্ভ করে তখন কি হতে পারে সেটা এবার দেখে রাখুন। হান্নান শাহ্, মওদুদ আর খোকা সাহেবদেরও বলছি, যে মন্তব্য করেছেন ঠিক করেন নি। এই তরুণদের এখন আরো ক্ষেপালে, বিএনপি এই অবস্থান অব্যাহত রাখলে তাদের ভবিষ্যৎ হবে ভয়াবহ।

গত ৪২ বছর আমরা এই রাজাকারদের বিচার করি নি। এই দেশ তাতে থেমে থাকে নি, অনেকটা এগিয়েছে। এই দেশের মানুষ এই রাজাকারদের আর বাড়াবাড়ি করার সুযোগ দেয় নি, পাত্তাও দেয় নি। তারপরও যতটুকু এগোনোর কথা ছিল ততটুকু আমরা এগোই নি, কেন? এবার আমার লেখার শুরুতে যে কয়টা সমস্যা তুলে ধরেছিলাম সেগুলো আরেকবার দেখুন। এগুলো নিয়ে আমাদের ভূমিকা কি ছিল একটু চিন্তা করি।

• সীমান্তে হত্যা্ বন্ধের দাবিতে আমরা শুধু ব্লগিং আর ভিডিও পোস্টে আটকে ছিলাম।

• লাশের মিছিল দেখতে দেখতে আমাদের এমন অবস্থা যে এটা এখন আমাদের কাছে কিছু মনেই হয় না!

• সাগর-রুনির হত্যার বিচার চাওয়ার জন্য আমরা সেই ব্লগ পোস্ট, প্রেস ক্লাবের সামনে একটু আধটু মানব বন্ধন কিংবা অকার্যকর ডেটলাইনের হুমকি আর 'চা খাওয়ালেও ব্লগাররা চুপ হবে না' টাইপের সস্তা ডিজিটাল স্লোগানের মাধ্যমেই কর্তব্য শেষ করেছি।

• তাহের-তাহের পুত্রের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ফাঁসি মওকুফের ব্যাপারে আমরা ছিলাম একেবারেই নিশ্চুপ।

• বিশ্বজিৎ হত্যার আর ছাত্রলীগের নৃশংসতার বিষয়ে কথা বলার সাহসই আমাদের ছিল না মনে হয়।

• এর বাইরে, মানুষ গড়ার কারীগর শিক্ষকদের গায়ে পুলিশের লাঠি আর মরিচের গুড়া পড়লেও আমরা ছিলাম নির্বিকার এবং নির্লজ্জ।

• দুর্নীতির বিষয়ে আর বলার কিই বা আছে?

কাদের মোল্লার বিচারের রায় নিয়ে আমরা যা করছি তার সিকিভাগও যদি ওপরের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য করতাম তবে অনেক আগেই এই সমস্যাগুলো থেকে আমরা মুক্তি পেতাম। আর এখন কাদের মোল্লাদের ফাঁসি নিয়ে দুর্বার আন্দোলন করতে গিয়ে শেয়ার বাজার, হল মার্ক আর পদ্মা সেতু সহ দেশের আরো অন্যান্য সমস্যাগুলো আড়াল করার সুযোগ দিচ্ছি সরকারকে। একটু নিজেদের আবেগ ক্ষণিকের জন্য সরিয়ে রেখে যুক্তি বিচার বিবেচনা খাটিয়ে ভাবুন তো, ওই সমস্যাগুলো কাদের মোল্লার ফাঁসির ইস্যুর চেয়ে কিছু কম কি না; বর্তমান প্রেক্ষাপট বিচারে?

গোলাম আযমরা সেসময় একটা বিবদমান দেশের একটি পক্ষের সমর্থনে কাজ করেছে। অথচ আরো অনেকে পাকিস্তানের সম্মানজনক সরকারী চাকুরী পায়ে ঠেলে সপরিবারে বাংলাদেশে চলে এসেছিল মাতৃভূমিকে সাহায্য করার জন্য। নেহাত পাকিস্তান হেরে গেছে বলে আজ গোলাম আযমরা আমাদের কাছে বেঈমান। আমরা হারলে কিন্তু একই ভাগ্য আমাদেরও বরণ করতে হত। তো দেশ স্বাধীন হওয়ার সাথে সাথে কিন্তু এদের বাংলাদেশের মানুষ আর বেশী বাড় বাড়তে দেয় নি। তারা কখনো ক্ষমতায়ও আসতে পারে নি। বরং এদের ব্যবহার করে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন দল ফায়দা লুটছে। যে আওয়ামীলীগ স্বধীনতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত, তারাও নিজেদের সুবিধার্থে '৯৬ এ এদের পা ছুঁয়ে সালাম করেছিল! রাজাকারদের এই মর্যাদার আসনে বসানোর জবাবদিহিটা কি শাহবাগের তরুণরা করবে না? এই রাজনীতিবিদরাই তো গত ৪২টা বছর দেশটাকে শুষে খেয়েছে, পরিণামে এত পরিশ্রম করার পরও আমাদের দেশটা আজ যে জায়গায় যাওয়ার কথা ছিল সেখান পর্যন্ত যেতে পারে নি। সেই হিসেবে এরা গোলাম আযমদের চেয়েও বেশী ক্ষতি করেছে এই স্বাধীন দেশের। আমাদের ক্ষমতাসীন রাজাকারদের লিস্টটা একটু দেখে নিই-

• আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দীন খান আলমগীর তৎকালীন পাকিস্তান আমলের এডিসি হিসেবে রাজাকার-আলবদরদের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেছেন। রাজাকারদের বিচার করব আমরা, তবে কি রাজাকার কারিগরদের ছেড়ে দেব?

• মুজিব কন্যা নিজের বেয়াই করে নিয়েছেন এক রাজাকারকে (শেখ হাসিনার কন্যা পুতুলের শ্বশুর)।

• মন্ত্রীসভায় ঠাঁই দিয়েছেন মহিউদ্দীন খান আলমগীর, ইঞ্জি: খন্দকার মোশাররফ হোসেন (শ্রমমন্ত্রী) এর মত রাজাকারদের।

• যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে সবচেয়ে বেশী চেঁচামেচি করেন যিনি, সেই আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের বড় ভাই ছিলেন শান্তিবাহিনীর লীডার, তিনি কি যুদ্ধাপরাধী নন?

নিজের চারপাশে এত এত যুদ্ধাপরাধী রেখে শেখ হাসিনা কাদের বিচার করছেন? আপনারা কি প্রশ্ন করবেন না একবারও? যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাইতেই যখন রাজপথে নেমে এসেছি, তখন সবটা নিয়েই ঘরে ফিরতে হবে, অর্ধেকটা নিয়ে ফিরে যাব কেন? বাচ্চু রাজাকারের অনুপস্থিতিতে তাকে ফাঁসি দিয়ে দিতে পারল, আর উপস্থিত কাদের মোল্লার সামনে হাত কাঁপল কেন? নিজামী, সাঈদি, সাকা চৌধুরীদের মত রুই-কাতলারা তো রয়েই গেল। এদের ফাঁসি দেওয়ার সাহস করবে তো এই সরকার? ভারতীয় সিরিয়ালের মত প্যাঁচ বাঁধিয়ে এখন আর খুলতে পারছে না তারা। আমার দৃঢ় প্রত্যাশা এই প্যাঁচ খুলবে শাহবাগে খোলা আকাশের নিচে বজ্রকন্ঠের সৈনিকেরা। সবার ফাঁসির রায় নিয়ে ঘরে ফিরতে হবে। নিজামী, সাঈদি, সাকা, গোলাম আযম, কাদের মোল্লা, মহিউদ্দীন খান আলমগীর, ইঞ্জি: খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের বড় ভাই, পুতুলের শ্বশুর এদের সবার বিচার চাই আমরা। এরা ক্ষমতাবান রাজাকার। খুব দ্রুত শুষে নেবে আমাদের এই প্রিয় দেশটাকে।

প্রতিটি আন্দোলনের সফলতা বিচার হয় কিছু জবাব বের করে নিয়ে আসার মাধ্যমে। আমাদেরকেও এই জবাব গুলো বের করে নিয়ে আসতে হবে-

• রায় দিলে জামায়াত অরাজকতা শুরু করবেই, এটা জানার পরও কেন এসএসসি পরীক্ষার মধ্যেই এই রায় দেওয়া হল?

• '৭১ এর পর এসব রাজাকারদের সাধারণ ক্ষমা করা হল কেন?

• '৭৫ এর পর এদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে এসে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল কেন?

• এরা রাজাকার, জানার পরও এদের সাথে নিয়ে রাজনীতি করা হয়েছিল কেন?

• মহিউদ্দীন খান আলমগীর, কামরুল ইসলাম এবং ইঞ্জি: খন্দকার মোশাররফ হোসেনদের অতীত জানার পরও এদের দলে টেনে এনে মন্ত্রীত্ব দেওয়া হল কেন এবং এদের রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত করা হয় নি কেন?

• মুজিব কন্যা হয়ে শেখ হাসিনা একজন রাজাকারের সাথে পারিবারিক সম্পর্ক স্থাপন করলেন কোন বিবেকে?

• এই আন্দোলনের সাথে একাত্বতা ঘোষণা করতে প্রধাণমন্ত্রীর এত কালক্ষেপন করতে হল কেন?

• সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, এই ফাঁসির আদেশ দিতে আবার কতদিন সময় ব্যায় করবে সরকার?

বন্ধুগণ, অনির্দিষ্ট সময় ধরে আন্দোলন চালালে সরকারকে বেশি সময় দেওয়া হয়ে যাবে। তাতে করে নিজেদের এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলে লুকিয়ে থাকা এসব রাজাকারদের বাঁচানোর সময় তারা পেয়ে যাবে। সংগ্রামী বন্ধুগণ, বারবার আপনাদের বলছি, এরা ক্ষমতাসীন রাজাকার। দেশের ক্ষতি করার সুযোগ এখন এদের হাতে বেশী। সাঈদিদের আর পালাবার পথ নেই, কিন্তু এদের সামনে সামনে পথ খোলা। সুতরাং, সময় দেওয়া যাবে না। আসুন, নির্দিষ্ট সময় ও ইস্যু নিয়ে আমরা আন্দোলনকে আরো বোগবান করে তুলি। কারণ একটা আন্দোলনের সফলতার পেছনে যে তিনটি মৌলিক বিষয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো হল- টাইম, প্ল্যান এবং এজেন্ডা। রাজাকারদের বিচার চাইতেই যখন এসেছি তখন কাউকে ছেড়ে দেওয়া যাবে না।

কিছু অনুরোধ নতুন প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে। প্রাণের ভাষা বাংলা বর্ণমালায় এসব ঘৃণ্য পিশাচদের নাম নিয়ে মায়ের ভাষাকে কলুষিত করা কি ঠিক হচ্ছে? এদের প্রাপ্য হল গালমন্দ আর জানোয়ারদের সাথে তুলনা। কাউকে আমরা যেন ক্ষমা না করে দিয়ে আসি। এসএসসি পরীক্ষার্থী কোমলমতি ভাই-বোনদের যেন পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে কোন বাধা বিপত্তির মখে পড়তে না হয়; কারণ, অনেক স্কুলে যেতে হলেও শাহবাগ চত্বর হয়ে যেতে হয়। সর্বোপরি এই আন্দোলন যেন কোনক্রমেই ইসলাম বিরোধী আন্দোলনে মোড় না নেয়। কারণ, ইতোমধ্যে বেশ কিছু 'প্রগতিশীল' নাস্তিক সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছে, তা আপনারাও জানেন এবং আপনারাই তা ঠেকিয়েছেন।

শেষে কথা, পেশাগত দায়িত্ব পালনের খাতিরে ঢাকার বাইরে থাকায় এই ইতিহাসে আমি অংশ নিতে পারছি না বলে আমি আপনাদের কাছে, জাতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আশা করি ঢাকায় ফিরে আমিও আপনাদের স্লোগানের সাথে তাল মেলাতে পারব। আর একদম শুরুতে দেশের চলমান অন্যান্য যে সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলেছি সেটাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার প্রয়োজন নেই। সেটা আলোচনা করেছি এজন্য যে, বোঝাতে চেয়েছি আরো কাজ বাকি আছে অনেক; আর যে দায়িত্ব নেয় তাকে সবটুকু দায়িত্বই পালন করতে হয়। এই অধিকার থেকেই, আপনাদের প্রাণ শক্তির ওপর ভরসা থেকেই সেই দায়িত্ব পালনের আশা করেছি আপনাদের কাছ থেকে। অন্য ব্যাটসম্যানরা শূণ্য করে আউট হলেও দু;খ হয় না, কিন্তু সাকিব আল হাসান ৯৯ রান করে আউট হলেও আমাদের মনে আফসোস জাগে, কেন তা আপনারা নিশ্চয়ই বোঝেন?

সেই সবচেয়ে বড় দেশপ্রেমিক যে দেশের মানুষকে ভালবাসে। যারা খাবার-পানি দিয়ে সংগ্রামী ভাইদের ভালবাসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন তাঁদের আমার সালাম জানাই। '৭১ এ সবাই সশস্ত্র সংগ্রাম করে নি, কেউ কেউ মুক্তিযোদ্ধাদের এরকম মমতার পরশ বুলিয়ে দিয়ে তাঁদের সাহায্য করেছেন, মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরাও সকলেই মুক্তিযোদ্ধা।

অনেক অনেক শুভকামনা আর সালাম প্রজন্ম চত্বরের আশ্চর্য অক্লান্ত সৈনিকদের প্রতি।