রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম

সুলতান আশিক মাহমুদ
Published : 2 April 2016, 05:37 AM
Updated : 2 April 2016, 05:37 AM

রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম! এটা একটা প্রহসন। কারণ-

**১) বাংলাদেশ সংবিধানের ২ ক তে আছে- "প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করবেন।" [গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেরশের সংবিধান ২ ক]।

সকল ধর্মই যদি সমমর্যাদা ও সমঅধিকার যদি পায় তাহলে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম হলো কী করে?

**২) সংবিধানের ৮(১) এ আছে- "জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গনতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা- এই নীতিসমূহল এবং তৎসহ এই নীতিসমূহ থেকে উদ্ভুত এই ভাগে বর্ণিত অন্য সকল নীতি রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বলে পরিগণিত হবে।" [গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেরশের সংবিধান ৮(১) ]

আচ্ছা, ধর্ম নিরপেক্ষতাই যদি মূলনীতি হয় তাহলে বিশেষ একটা ধর্ম কিভাবে রাষ্ট্রধর্ম হতে পারে?

**৩) সংবিধানের ১২ তে আছ- "ধর্ম নিরপেক্ষতা নীতি বাস্তবায়নের জন্য (ক) সর্ব প্রকার সাম্প্রদায়িকতা, (খ) রাষ্ট্র কর্তৃক কোন ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদা দান, (গ) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মীয় অপব্যবহার, (ঘ) কোন বিশেষ ধর্ম পালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তাহার উপর নিপীড়ন, বিলোপ করা হইবে।"

একটা বিশেষ ধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম করা কি সাম্প্রদায়িকতার মধ্যে পড়ে না?

**৪) ২৮ নং অনুচ্ছেদে আছে- "(১) কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না। (২) রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারীপুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন। (৩) কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে জনসাধারণের কোন বিনোদন বা বিশ্রামের স্থানে প্রবেশের কিংবা কোন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ভর্তির বিষয়ে কোন নাগরিককে কোনরূপ অক্ষমতা, বাধ্যবাধকতা, বাধা বা শর্তের অধীন করা যাইবে না। (৪) নারী বা শিশুদের অনুকূলে কিংবা নাগরিকদের যে কোন অনগ্রসর অংশের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান-প্রণয়ন হইতে এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবে না। "

ধর্মের কারণে নাগরিকের উপর বৈষম্য আচরণ করা যাবে না। শুধু মাত্র ইসলাম ধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম করলে বৈষম্য থাকে না কি? ৪১ নাম্বার অনুচ্ছেদেও ধর্মীয় স্বাধীনতা আছে। রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম নামমাত্রই আছে। বেশির আইন কানুনেই এর ব্যবহার নেই। নামমাত্র রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম দিয়ে লাভ কি? রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম আর মূলনীতি ধর্মনিরপেক্ষতার। এতে স্পষ্টত নাগরিকরাই প্রতারণার শিকার হচ্ছে। কলা দেখিয়ে মূলা খাওয়ানো হচ্ছে নাগরিকদের। এর চেয়ে দেখে শুনে মূলা খাওয়াই ভালো নয় কি?