ভারত লেজ গুটিয়েছে, শেষ মারটা কি পাকিস্তানিরাই খাবে আজ?

আশরাফ উদ্দিন
Published : 22 March 2012, 03:29 AM
Updated : 22 March 2012, 03:29 AM

পাকিস্তানের সাথে জিততে জিততে হেরে গেল বাংলাদেশ। খুব খারাপ লেগেছিল। কারন জিতে যাওয়ার সুযোগ ছিল অনেক। যাই হোক খেলায় তো হার জিত থাকবেই। অনেকে আবার সেটা মানতে নারাজ। খেলোয়াড়দের গুষ্টি উদ্ধার করে নিজেদের কোন প্রকারে সামাল দিতে সক্ষম হন। আমরা যতটুকু জানি বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে তেমন কোন অভিযোগ নেই যে ইচ্ছে করে কোন খেলায় উইকেট দিয়েদিয়েছে। এটা হতে পারে মাঝেমধ্যে খেলোয়াড়দের মনোযোগ না থাকার কারনে মাঠে নিজেদের সামাল দিতে বেগ পেতে হয়। তারাও তো মানুষ তাদের ও সুখ – দুখ আছে। পারিবারিক ঝামেলা, ব্যাক্তিগত সমস্যা থাকতে পারে। নিজেরা নিজেদের বিষয়গুলো চিন্তা করুন। আপনি কোন একটা কাজ করতেছেন কাজ করতে করতে হঠাৎ আপনার অজান্তেই অন্য একটা চিন্তায় হারিয়ে গেলেন আর নির্বাচিত লিখতে গিয়ে লিখলেন নির্বাসিত! বিষয়গুলো এরকমই।

যাই হোক খেলা দেখার আগেই ধরে নিয়েছিলাম ভারতের সাথে বাংলাদেশ হারবেই। জিতবে সেটাও কিন্তু একধম ছুঁড়ে ফেলে দেইনি। কারন এটা বাংলাদেশ। বাংলার রয়েল বেঙ্গল টাইগার! কখন যে রাগ উঠে আর কি করে বোঝা বড় মুশকিল। আশা আর নিরাশার দোটানায় খেলা দেখতে বসলাম। দোয়া করছিলাম যাতে শচীনের শত মত সেঞ্চুরিটা যেন বাংলাদেশের বিপক্ষে না হয়। কিন্তু শচীনের হাবভাব দেখে আর বাংলাদেশ দলের মাঠ নিয়ন্ত্রণ অবস্থা দেখে মনে হলো না জানি শচিন ড়াবল সেঞ্চুরি করে। বিশ্বাস করুন তবুও যেন কোন বোলার একটা বল করে তখনি যেন মেনে হচ্ছিল এই বুজি শচীনের ষ্টাম্প উড়ে গেল। যাই হোক আমার আশার গুড়ে ছাই ঢেলে শচিন শত তম সেঞ্চুরি করল। হেলমেট খুলে ইশ্বর এর দিকে তাকিয়ে তার প্রাপ্তির জানান দিল। গ্যালারিতে থাকা ভক্তদের ব্যাট উঁচিয়ে ধরল। শচীনের সেঞ্চুরিতে সে যত না খুশি দেখলাম আমাদের কিছু দেশী ভাই তার ছেয়ে বেশি খুশি!!!!! হায় রে কপাল নিজ দেশের সম্মানের কথা না ভেবে শচীনের শত তম সেঞ্চুরির সাক্ষী হতে চাইলো অনেকে।

যাই হোক বড় একটা রানের বোঝা তুলে দিয়ে ভারত ভেবেছিল তোদের সীমান্তে মারব, তোদের নদীতে মারবো, তোদের ট্রানজিটে মারবো, তোদের সমুদ্রে মারবো, তোদের খেলার মাঠে মরবো। তোরা আমাদের খাবারের থালা তোদের মাথায় নুন রেখে আমরা বরই খাব। তোদের সরকার আমাদের নতজানু সরকার। দেশের ভেতর যতই ফালাফালি কর কোন লাভ হবেনা। কেন যেন মনে হয়েছিল খেলার মাঠে ও তারা এমন কিছু চিন্তা করতে রাগলো। না হলে বিতর্কিত একটা উইকেট কিভাবে ফেলে দিতে সক্ষম হয় ভারত। আপনারা নিশ্চই বুঝতে পেরেছেন কোন উইকেটটির কথা আমি বলছি। ঠিক ধরেছেন আমি সাকিব এর আউটটার কথা বলছি। একটা ৫ বছরের বাচ্ছা ও বলতে পারবে এটা কোন প্রকারে আউট হতে পারে না। কিন্তু কেন যেন এমন হলো বুঝতে পারলাম না। জানিনা সাকিব বিষয় টা সহজে মেনে নিতে পেরেছিল কিনা? আর বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ড এ ব্যাপারে নাক গলিয়েছে কতটুকু। তবে এটা দেখতে পেরেছি টিভির পর্দায়। উইকেট টা পড়ার পর যারা মাঠে নেমেছে তারা যেন হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে জান বাজি রেখে নেমেছে। উইকেট যখন দিয়েছি আরো দেব তবে তোদের শত তম সেঞ্চুরির মজা দেখিয়ে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। আমরা তোমাদের চারে মারবো, আমরা তোমাদের ছক্কায় মারবো। মারতে মারতে রানের পাহাড় ভেঙ্গে জয় চিনিয়ে আনবো। অন্যায় ভাবে উইকেট দেয়ার বদলা নেব আমরা। আমাদের দুর্বল ব্যাটিং, আমাদের ‍দুর্বল বোলার, আমাদের দুর্বল ফিল্ডিং তবু তোমাদের ছাড়বো না ইনশাআল্লাহ জয় আমাদের হবেই। জয় আমাদের হয়েছে। শচীনের চাঁদ মাখা মুখ অমাবশ্যায় ডেকে গেল, সাকিব হাত তুলে জানান দিল আমরা প্রতিশোধ নিতে পারি। ভারতের পরাজয়ে নতুন দুয়ার খুলতে লাগলো টাইগারদের। আর একটা খেলা। মাত্র একটা খেলা! ওটা হাত করতে পারলেই প্রথম বারের মতো ফাইনালে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ দলটি কে তেমন বেশি ভয় না করলেও সহজে জয় আসবে সেটা ভাবার কোন সুযোগ ছিলনা। যাই হোক বিস্তারিত বলবো না। ধরে নিয়ে ছিলাম টাইগাররা জিতবেই। জিতেছে। জিতেছে তো জিতেছে আরেকটা বদলা নিল সেই বিতর্কিত উইকেটের। বিনা টিকিটে শ্মশানে পাঠিয়ে দিল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারতকে। যে ভারতের পেটে শত তম সেঞ্চুরির দানবরা আছে!!! আহারে শত তম সেঞ্চুরি যেন টাইগারদের পায়ের কাছে লুটোপুটি খাওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পেল না। হে আমি এখন বলবো আমার দেশি ভাইরা যারা শচীনের সেঞ্চুরি দেখার জন্য তার ইতিহাস হয়ে থাকার জন্য খুশিতে টগবগ করছিলেন তারা এখন কি করবেন?

আমার মতে ভারতের এটা একটা বড় পরাজয় শততম সেঞ্চুরি করে ও বাংলার দামাল ছেলেদের কাছে পাত্তা পায়নি। চারে মেরেছে, ছক্কায় মেরেছে। মেরে প্যাকেট করে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে। পাকিস্তানের সাথে হারাটা এখন মনে হচ্ছে হারা নয়। ফাইনালেই হবে আসল মার। একেবারে লগি বৈঠার মার। মেরে মনে হয় কেওড়া তলা পার করে দেবে।আর তার জন্য ছোট মারটা মারতে চায়নি টাইগাররা। এখনি বলার সময় হয়েছে অনেক হয়েছে আর নয়। তোমাদের থেকে আমরা ও কম যাইনা। বরং একটু বেশি। আমাদের দিকে লোভের চোখে তাকাবে না। চোখ উপড়ে ফেলতে পারি। পাকিস্তান দলের সাথে আমাদের জয় হয়েছে। ওদের সাথে খেলায় অভ্যাস আমাদের আছে। আমি হলফ করে বলতে পারি বিজয় আমাদের হবেই । শেষ মারটা পাকরাই খাবে। আর খেয়ে ল্যাংড়া লুলা হয়ে যেতে পারে আজ।