অভিবাহকহীন নিকুঞ্জ-২ আবাসিক এলাকা

জুলফিকার আতিক
Published : 10 June 2011, 06:22 AM
Updated : 10 June 2011, 06:22 AM

গত ১০ বছরে নিকুঞ্জ-২ আবাসিক এলাকার মূল সড়ক গুলোর কোন মেরামত হয় নাই। যার কারণে এই এলাকার রাস্তাগুলো বেহাল দশা। সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তাগুলো হাঁটু পর্যন্ত পানিতে ডুবে যায়। ৪-৫ ঘন্টায়ও এই বৃষ্টির পানি দূর হয় না। নির্দিষ্ট সময়ে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে যেতে পারে না। বিভিন্ন পেশাজীবি ব্যক্তিগণও নির্দিষ্ট সময়ে তাদের গন্তব্য স্থানে পৌঁছতে পারে না। সড়কগুলোর অবস্থা খুব খারাপ হওয়ার কারণে অত্র আবাসিক এলাকায় ভাড়াটিয়া সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। তাই বাড়ির মালিকরা খুবই কষ্টেই দিন যাপন করছে। যাদের বাড়ির ভাড়া একমাত্র তাদের অবস্থা আরো করুণ হচ্ছে। যার কারণে যে সব বাড়ির মালিক ব্যাংক থেকে ঋণ সংগ্রহ করে বাড়ির নিমার্ণ করেছে, তাদের অবস্থা খুবই করুণ। প্রতি মাসে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। রাস্তা গুলোর এতই বেহাল দশা যে, রিকশা পর্যন্ত চলাচলের অনুপযোগী। তাই অত্র এলাকার অনেক রিকশা চালক উত্তরা, গুলশান সহ বিভিন্ন স্থানে চলে গিয়েছে। রিকশা সংখ্যা বর্তমানে খুবই কম। এ সুযোগে রিকশা চালকগণ যাত্রীদের থেকে দ্বিগুন ভাড়া আদায় করছে। ৫ টাকার ভাড়া ১০ টাকা এবং সামান্য একটু বৃষ্টি হলে সেই ভাড়া ৫ টাকার স্থলে ২০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। অত্র এলাকাবাসীগণ রিকশা চালকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত রিকশা চালকদের সাথে যাত্রীদের বাকবিতন্ডা ও ঝগড়া হচ্ছে।

নিকুঞ্জ-২ আবাসিক এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থাও নগণ্য। ৫ নং সড়ক হইতে ১৬ নং সড়ক পর্যন্ত ড্রেনের পানি সড়কের উপর চলে আসার কারণে প্রায় সড়কে অধিকাংশ সময় দুর্গন্ধময় পানি জমে থাকে। যার ধরণ স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রী ও অফিসগামী ব্যাক্তিরা চলাফেরা করতে হয় অনেক কষ্ট করে। নিকুঞ্জ-২ প্রায় ২১টি মূল সড়ক আছে। যার অধিকাংশ সড়কের দুই পার্শ্বের ড্রেনের বাউন্ডারি ভেঙ্গে গেছে এবং অনেক জায়গার ড্রেনের উপর দেওয়া স্লাবও ভেঙ্গে গেছে।

নিকুঞ্জ-২ আবাসিক এলাকার ১৩নং সড়কের পার্শ্বের বিশাল একটি খোলা ডাস্টবিন আছে। যেখানে প্রতিদিন নিকুঞ্জ-২ আবাসিক এলাকার বিভিন্ন বাড়ী, হোটেল ও দোকান পাটের ময়লা আর্বজনা ফেলা হয়। সিটি কর্পোরেশনের থেকে পূর্বে প্রতিদিন একবার করে ময়লা নিয়ে যেত। বর্তমানে সপ্তাহে ২/৩ বার এসে ময়লা নিয়ে যায়। তাও সম্পূর্ণ ময়লা নেওয়া হয় না। এই ডাস্টবিনটি মূলত নিকুঞ্জ-২ আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের জন্য হয়ে থাকলেও আবাসিক এলাকার সংলগ্ন পশ্চিম দিকের পুরানপাড়া বাসিন্দা ও পুরান পাড়া বাজারের সকল ময়লা আর্বজনা এই ডাস্টবিনে ফেলা হয়। যার কারণে অতিরিক্ত ময়লা ফেলার ধরণ নোংরা ও দুর্গন্ধে মানুষজনের চলাফেরা কষ্টকর হয়ে পড়েছে এবং ডাস্টবিন সংলগ্ন বাড়িতে বসবাসকারীদের বসবাস করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তারা তাদের পূর্ব পার্শ্বের জানালা গুলো খোলা রাখতে পারে না নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত ডাস্টবিনের কারণে।

নিকুঞ্জ-২ আবাসিক এলাকার ১৮ নং রাস্তাটি এখন একটি ছোটখাটো বাজারে পরিণত হয়েছে। মাছ-মাংস, তরিতরকারি সহ সব নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র পাওয়া যায়। যাহা ১৬নং হইতে ২১নং সড়কের বাসিন্দাদের জন্য সুবিধা হলেও উক্ত সড়কের বাসিন্দারা চায় না এখানে বাজার হউক। উক্ত সড়কগুলোর খালি প্লট গুলোতে অবৈধ দোকানপাট, মার্কেট হওয়ার কারণে বিভিন্ন চায়ের দোকানে বহিরাগত বখাটে ছেলেদের আড্ডা চলে সারাক্ষণ। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে মেয়েদের উত্যক্ত সহ যৌন হয়রানি করে থাকে। যার কারণে উঠতি বয়সের স্কুলের ছাত্রীরা ও মহিলারা নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনাকাটার জন্য ঘরের বাইরে আসতে পারে না।

নিকুঞ্জ-২ আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা অত্র এলাকার সকল সমস্যাবলি সমাধানের জন্য একাধিকবার অত্র এলাকার মাননীয় সংসদ সদস্য সাহারা খাতুনকে অবহিতকরণ সহ স্মারকলিপি পেশ করেছে। তাঁর বারবার আশ্বাস পাওয়ার পরও বর্তমান সরকারের আমলে অত্র এলাকার বিন্দুমাত্র সংস্কার হয়নি। অত্র এলাকার সকল বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ারা মাননীয় সংসদ সদস্য সাহারা খাতুনকে আবারো অনুরোধ করছে যে, এলাকার সকল সমস্যা দ্রুত সমাধান করে ন্যূনতম নাগরিক সুবিধা প্রদানের জন্য আহ্বান করছে।

আমি জানি আমার এই লেখাটি সরকার পর্যায়ের কেহ হয়তোবা পড়বে না। কিন্তু হঠাৎ করে যদি কেহ পড়ে এবং মনে উপরোল্লিখিত কথাগুলো তার মনে লেগে যায় তাহলে হয়তোবা তার দ্বারা নিকুঞ্জ-২ বাসিন্দারা অনেক কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে। কথায় আছে না- কার দ্বারা কে কখন উপকারে আসে, কেউ বলতে পারেনা।