বৈশাখী চেতনা-আলোচনা সমালোচনা

আতাস্বপন
Published : 16 April 2014, 06:59 PM
Updated : 16 April 2014, 06:59 PM

মোগল সম্রাট আকবরের নির্দেশে তার সভাসদ আমির ফতেহউল্লাহ খান সিরাজী প্রায় চারশ বছর আগে হিজরি সনের সঙ্গে মিল রেখে ফসলি সন হিসেবে বাংলা সন বা বঙ্গাব্দের প্রচলন ঘটিয়েছিলেন।শস্যভিত্তিক ঋতুকে সামনে রেখে কৃষকের কাছ থেকে খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে প্রচলন করা হয়েছিল বাংলা সনের।

আজ আমরা যারা বাংলা সনের প্রথম দিন পালনের নামে ইলিশ পান্ত ভোজ উৎসব করছি তারাকি ভেবে দেখেছি যারা ফসল ফলায় সেই কৃষক সমাজের কথা। তাদের ঘরে কি দামি ইলিশ পেৌছেছে? পান্তা হয়তোবা আছে। কাচ মরিচ আর পেয়াজেই তাদের সন্তুষ্টি। যাদের কারনে আজ এই সন এলো আজ তাদের আমরা কি স্মরন করছি? বৈশাখের প্রোগামগুলোতে আমরা কয়টা কৃষক পরিবারকে সম্মাননা দিয়েছি। তাদের বিজ আর সারের মূল্য বৃদ্ধির জন্য বা তাদের সুযোগ সুবিধার কথা বলে দাবি জানিয়েছি। শুধু আনন্দই করলাম। আনন্দটা হতে পারতো মানবিক। তা হয় নি। হতে পারতো ধমীয় অনুষাশনের সিমার মধ্যে। যেহেতু অনুষ্ঠানটি জাতীয় তাই সকল জাতির অনুষ্ঠান এটা। সবাই এটা পালন করবে যার যার ধর্মীয় আর দেশীয় সংস্কৃতির সমন্বয়ে। কোন একটি বিশেষ ধর্মের আদলে পুরো অনুষ্ঠান করা হলে অন্য ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলো একে প্রশ্নবিদ্দ করবে। হয়েছোও তাই।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট বাংলাদেশে। মুসলমানরা ঢোল -গান-বাজনা আর উল্কী আকাঁর মত বিষয়গুলোতে ধমীয় অনুষাশনের কারনে একমত নয়। তাই চলছে এ নিয়ে আলোচনা সমালোচনা। আলেম উলামা সমাজকে এই প্রোগ্রামের সাথে আমরা আনতে পারিনি । অথচ এ সন এসেছে মুসলমানদের হাত ধরেই। আজ কেউ কেউ তাই বলতে পারছেন ১ লা বৈশাখ অন ইসলামিক। আসলে ধর্মীয় বুজর্গদের মতামত কে বিবেচনায় না আনার কারনে আজ ১ লা বৈশাখ নিয়ে এতো কথা। একটা মানুষের যেমন তার দেশের শিল্প সংস্কুতি পালনের হক রয়েছে তেমনি তার ধর্ম পালনেরও হক রয়েছে। আর দুটো ক্ষেত্রেই পালনকারিকে সমন্বয় সাধন করে চলতে হবে। যাতে একটির দ্বার অন্যটির কোন ক্ষতি না হয়।

১লা বৈশাখ অন ইসলামিক ঢালাও ভাবে কি বলা যায়? আসলে পহেলা বৈশাখের কোন অংশ অন ইসলামিক? সেটা আগে জানতে হবে। ইসলাম বলে অশ্লিলতা বেহয়াপনা পাপ। সেটা যে আচার অনুষ্ঠানেই আছে তাই অন ইসলামিকি। অশ্লিলতা বেহায়পনা বাদ দিয়ে অনুষ্ঠান করুন। বাঙালা সংস্কৃতি আর দেশের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমরা ১ বৈশাখ কেন আরো অনেক দেশীয় সংস্খৃতিক প্রোগাম পালন করব।
আসলে ইসলামিক অাচার অনুষ্ঠান পালনে আমাদের যত অণিহা। রবিন্দ্র সংগিতে ছোট খাট পুরষ্কার পেলে তা নিয়ে দেশে মাতা মাতি হয় অথচ মিসরের রাজধানীই কায়রোতে গত ১১ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে অনুষ্ঠিত পবিত্র কোরআন প্রতিযোগিতায় ৫৪ টিই দেশ কে হারিয়ে প্রথম হয়া বাংলাদেশি ছেলে জাকারিয়া সম্পর্কে কোন রিপোর্ট -ই করেনি কোন বাংলাদেশ মিডিয়া,,,।

এই চেতনা লইয়া আমরা কি করিব
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর এই লেখাটি খুবই গুরুত্বপূর্ন। যাতে ১লা বৈশাখ নিয়ে তিনি তার ভাবনা তুলে ধরেছেন।
লিংক:

http://www.bd-pratidin.com/2014/04/14/54189#sthash.LaQdrXP7.gbpl

ধর্ম আর সংস্কৃতি দুটোর মাঝে সমন্বয় করে পথ চলা হলে কোন প্রশ্ন আসেনা। ধর্মীয় অনুষাসনের মধ্যে থেকে যতুটুকু সিমা তার মধ্যে থেকে সংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করতে হবে। নিয়মের মধ্যে। নিয়ম ভেঙ্গে নয়। অনুশাষন ভেঙ্গে নয়। অনুষাশণ সৃষ্টিকর্তার এটা ভাঙ্গার অধিকার তার আমাদের নয়। জম্ম নিয়েছি মরতে তো হবেই। তাই দুনিয়ার আনন্দ হিল্লোল এর সাথে সাথে পরোকালের চিন্তাটাও রাখা উচিত। ভাইরে এক সেকেন্ডের নাই ভরসা। বন্ধ হইব রঙ তামাসা।

আসুন তাই সবাই একতরফা না চলি। ধর্ম ও মানি সংস্কৃতিও মানি । যেখানে অশ্লিলতা বেহায়াপনার স্থান নেই। আছে বন্ধুত্ব আর ভালবাসার পবিত্র বন্ধন। আসুন সংস্কৃতিক কর্মকান্ড সেই মতে পালন করি। যাতে দল মত গোত্র জাতি সবাই একে পবিত্র ও অনিবার্য একটি বিষয় মনে করে। আমাদের উপস্থানার জন্য অনেক ভাল জিনিস খারপ হয়ে যায়।