মাহে রমজান আসে প্রতিবার কিন্তু আমরা কি তাকওয়া অর্জন করতে পেরেছি?

আতাস্বপন
Published : 1 July 2016, 05:10 AM
Updated : 1 July 2016, 05:10 AM

তাকওয়া- যার অর্থ আল্লাহ কে ভয় পাওয়া। না এই ভয় অশুভ ভয় নয়। এই ভয় হল ভালবাসার ভয়। ভালবাসলে আবার ভয় কি? যাকে ভালবাসবো তাকে আবার ভয় কেন? আচ্ছা কেউ যদি তার মাকে ভালবাসে তাকে কি ভয় করে না? করেতো। কিন্তু এই ভয়টা হলো ভালবাসা হারাবার ভয়। আল্লাহর সাথে বান্দার যে ভয় তা হল আল্লাহর ভালবাসা হারাবার ভয়। ভালবাসার অপর পৃষ্ঠে আছে ক্রোধ ঘৃণা এইসব।

ভালবাসা হারালেই এসবের শিকার হতে হবে। কথা হল ভালবাসা কেন হারাবে? এর একটি করান হতে পারে, সম্পর্কের টানা পোরেন। আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্কের টানাপোরেন হলে দুরত্ব তৈরি হয়। আর তখন ভালবাসা ঝুকিতে পড়ে। এই টানাপোরেন যাতে না হয় তাই সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। একটা শংকা কাজ করবে সর্বদা এই বুঝি কিছু হয়ে গেল। এই শংকা বা ভয় ভয় ভাবটার নাম তাকওয়া। আর তাকওয়ার মাধ্যমে জম্ম নেয় ভালবাসার গভীরতা। সব সময় ভালবাসার জনের সন্তুষ্টি বা তাকে আকর্ষনের চেষ্টা থাকে।

প্রতিবারের মতো এবারও মাহে রমজান এসেছে। আমরা কি পেরেছি তাকওয়া অর্জন করতে? আমারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কি চেষ্টা করেছি? আচ্ছা কাউকে ভালবাসলে তার পছন্দনিয় বিষয়গুলোই একজন প্রেমিক করার চেষ্টা করে অপছন্দনিয়ে কাজ গুলি থেকে দুরে থাকারে চেষ্টা করে। আমরা কি আল্লাকে ভালবেসে তার পছন্দনিয়ে কাজগুলি এ মাসে করছিতো? তার অপছন্দনিয় কাজগুলি থেকে নিজেদের দুরে রাখতে পারছি তো?

শুধু উপোষ করে তো রোজা হয় না। রোজা হল শরীরের পাশাপাশি নিজের নফসের রোজা। আচ্ছা আপনি আপনার ভালবাসার জনকে কোন গিফট দেন তাকে কি ভাংগা চোড়া বা নেতানো ফেতানো জোড়াতালি জিনিস কি দেন? নাতো! তবে কেন আল্লাকে এমন রোজা দেব। যার মধ্যে শুধু উপোষ ই আছে নফসের রোজা নেই। রোজা রেখে দিব্যি খারাপ কাজ চলছে। দুর্নিতি চলছে, অশ্লিলতা বেহাযাপনা চলছে, চলছে ঝগড়া ফ্যাসাদ গীবত। এই রোজা কি জোড়াতালি রোজা নয়?

কেউ যদি সঠিক ভাবে দেহ আর মনের রোজা পালন করে সেই তাকওয়া অর্জন করতে পারে। অর্থৎ ভালবাসার জন্য আকুল হতে পারে। নিজের মধ্যে আল্লাহ সন্তুষ্টি হারাবার ভয় পয়দা করে তাকে আরো সর্তক ও আল্লাহর আরো নৈকট্যশীল করে তোলে। আর এমন মানুষই হল ইনসানে কামেল মানুষ। আর মাহে রমজানের একমাসের এই ট্রেনিং প্রোগ্রাম এর মুল উদ্দেশ্য হল তাকওয়া সম্পন্ন মুত্তাকি বান্দা তথা ইনসানে কামেল মানুষ তৈরি করা।

"তোমাদের জন্য রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন পূববর্তিদের জন্য করা হয়েছ, যাতে তাকওয়া অর্জন করতে পারো"- পবিত্র আল কোরআনের এই মর্মবাণী আমাদের এই শিক্ষা দেয় যুগে যুগে যারা রোজা রেখেছে দেহ ও মনের তাদের দ্বারা সমাজের ক্ষতি হয়নি তাদের দ্বারা সমাজের ভাল হয়েছে। দেশ ও দশের ভাল হয়েছে। তারাই মহৎ জন। তারাই তাকওয়া অলা।

আজ আমাদের সমাজে তাকওয়াঅলা লোকের বড়ই অভাব। রামজন আসে রমজান যায়। তাকওয়া অর্জন হয় না। কারণ একটাই আমরা শুধু দেহে উপোষ থাকি রোজা করি মনে রোজকে ধারণ করি না। মহান আল্লাহ আমাদের সঠিক ভাবে রোজা রেখে তাকওয়া অর্জনের তৌফিক দান করুন । আমিন।