দুর্ধর্ষ দশ- এক দু:সাহসী মুক্তিযোদ্ধা বিলোনিয়া মুক্তকারী সিপাহী মো: এনামুল হক

আতাস্বপন
Published : 25 Feb 2012, 05:06 PM
Updated : 25 Feb 2012, 05:06 PM

দুর্ধর্ষ দশ একটি সেনাসদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত এক মুক্তিযুদ্ধা টিমের নাম। যার পাক হানাদার মুক্তি করেছিল ফেনীর বিলোনিয়া আর পশুরাম। সৈনিক এনামুল হক। সেই টিমের একজন দুঃসাহসী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ১৯৭১ সালে ১০ নং ইষ্টবেঙ্গল রেজিমেন্টে জাফর ইমামের নেতৃত্বে ফেনী জেলায় বিলোনিয়া যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন।

পুরো নাম হাজী মো: এনামুল হক মজুমদার । পিতা- মরহুম মৌ. অহিদুর রহমান মজুমদার। গ্রাম-নিজকালিকাপুর, থানা- পরশুরাম, পো- বটতলা বাজার, জেলা- ফেনী। ১৯৭২ সালে তিনি মাদ্রাসা থেকে জামাতে উলা (ফাজিল) পাশ করেন। ৬ ভাই আর ৪ বোনের মধ্যে তিনি হলেন ৪র্থ। (এক ভাই মুক্তিযুদ্ধে শহিদ হন) তিনিই একমাত্র ব্যাক্তী যিনি নিজ এলাকা মুক্তকারী স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধ। ছিলেন। স্বাধীনতার পর হতে দির্ঘদিন সেনাবাহীনিতে সিপাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বর্তমানে তিনি অবসর জীবন যাপন করছেন।

গত ১৯/০৯/২০১১ তারিখে কুমিল্লা সেনানিবাসে দুর্ধর্ষ দশের ৪০তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে তিনি তার বিলোনিয়া যুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেন।

১৯৭১ সালে তিনি ১০ম ইষ্ট বেংগল রেজিমেন্টে যোগদান করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি মেজর জাফর ইমামের নেতৃত্বে পাক হানাদার বাহীনির বিরুদ্ধে ফেনীর ১ নং মির্জনগর ইউনিয়নে যুদ্ধ আরম্ভ করেন। কাউতলি চম্পক নগরে মহুরী নদীর উপর তার ডিফেন্স তৈরী করেন এরপর বিলোনিয়া রেলস্টেশন, দুগলাচান আর পরশুরাম ডাক বাংলো এবং বাজারের উপর বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে পাকবাহিনীর উপর হামলা চালান ।তিনি এবং তার সহযোদ্ধারা মিলে ঐ হামলায় ৮ জনকে মেরে ফেলেন এবং একজনকে জীবিত ধরে নিয়ে আসেন। সে সময় তার ছোট ভাই কামাল পাশা(এস.এস.সি পরীক্ষার্থী)কে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করায় পাকবাহিনী ধরে মেরে ফেলে।তিনি একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। পাকহানাদাররা তার ভাইয়ের লাশ নদীতে ফেলে দেয়। বহু খুজে তিনি তার ভাইয়ের লাশ খুঁজে পাননি। এরফলে তিনি আরো প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠেন। এরপর তিনি তার সহযোদ্ধাদের সাথে চিতলিয়া আর সলিয়া গ্রামে অবস্থান নেন। সেখানে তারা রসদ বোঝাই হানাদারদের একটি গাড়ি আক্রমন করে সবাইকে মেরে ফেলেন। কিন্তু পাক হানাদার এর প্রতিশোধ নেয় পরদিন। তারা অতর্কিতে মুক্তিযোদ্ধাদের উপর হামলা চালায়। এতে একজন শহীদ হন। বাকিরা পাল্টা আক্রমন করে ৭০/৭৫ জন হানাদার মেরে ফেলে। এরপর উপর থেকে জঙ্গী বিমান হামলা আর বোম্বিং শুরু হয়। কিন্তু এতকিছু করে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের কোন ক্ষতি করতে পারেনি। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা ফুলগাজী- মুন্সিরহাট হয়ে ফেনী আসেন এবং পরে চট্টগ্রাম পৌঁছেন। তখন সময় ছিল ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৬ টা।

এই হলো একজন সাহসী মুক্তিযোদ্ধার কাহিনী। যা তিনি নিজে বর্ণনা করেছেন। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে আয়োজিত দুর্ধর্ষ দশের ৪০তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে।

বিলোনিয়া মুক্ত কারী দুর্ধর্ষ দশের সদস্য একজন সিপাহী মুক্তিযোদ্ধার বর্তমান ভাবনা

সম্প্রতি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি আর যুদ্ধাপরাধের বিচার সংক্রান্ত বিষয়ে তার একান্ত কিছু আলাপচারিতা বা মন্তব্য সহ সংগৃহিত কিছু ভিডিউ ক্লিপ আর ফটো সবার সাথে শেয়ার করছি। এতে তার ক্ষোভ আর কৃতজ্ঞতা দুটোই ফুটে উঠেছে। (সত্যের পক্ষে সব সময় কথা বলব আপনারা এতে সহযোগীতা করুন আর না করুন)