আমি ব্যাকটেরিয়া বলছি…

অস্থির ব্যাকটেরিয়া
Published : 10 May 2012, 11:18 AM
Updated : 10 May 2012, 11:18 AM

আজ কিছু মানুষের কথা বলবো। এই মানুষগুলো আমাকে নিয়ে এত টানাহ্যাঁচড়া করেছে জীবনভর, যেন তাদের আর কাজ ছিল না। আপনারাও ফেসবুকে এত্ত সময় দেন না, যতটা তারা আমাকে ভালবেসে দিয়েছিল। চলুন দেখে আসি তারা কারা-

(১) এন্টনি ভন লিউয়েনহুক
(২৪ অক্টোবর, ১৬৩২ – ২০ আগস্ট, ১৭২৩ )
ইতিহাসঃ
কিছুই বলার নাই। আমাকে (ব্যাকটেরিয়া) যখন কেউ দেখতে পাইত না,মনের আনন্দে বাড়ির উঠানে এক্কাদোক্কা খেলতাম ঠিক তখনই আমাকে খুঁজে বের করেন এই হুক সাহেব। আমাকে দেখার জন্য তিনি প্রায় ২৫ টি অণুবীক্ষণ যন্ত্র বানিয়েছিলেন। চিন্তা করেন, আমার কি রূপটাই না ছিল। সেই আমলে যদি Lux Channel I Superstar কিংবা Pantene U Got The Look টাইপ প্রতিযোগিতা থাকতো, নির্ঘাত প্রথম হইতাম!

(২) লুইস পাস্তুর
(২৭ ডিসেম্বর, ১৮২২ – ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৮৯৫)
ইতিহাসঃ
এই লোক আমাকে একদমই দুই চোখে দেখতে পারতো না। আমার কিছু গুন্ডা টাইপ ভাই-বেরাদার (রোগসৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া) ছিল। সারাদিন মহল্লায় মারামারি করতো। এই পাস্তুর সাহেবই হলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি আমার আমার নামে পুলিশের খাতায় জিডি করেছিলেন (প্রথম রোগের কারণ এবং প্রতিরক্ষা সম্বন্ধে জানিয়েছিলেন)। রাতের বেলায় মা কি মজা কইরা দুধ দিয়ে হরলিক্স বানায় খাওয়াইত, পাস্তুরাইজেসন করার পর সব গেলো। পাস্তুরিত তরল দুধ খাইয়া একবার আমার কি হইছিল, ওইটা কওন যাইব না।

(৩) স্যার অ্যালেক্সান্ডার ফ্লেমিং
(৬ আগস্ট, ১৮৮১ – ৬ আগস্ট, ১৮৮১)
ইতিহাসঃ
এই সেই পুলিশ অফিসার(!), যিনি আমার নামে জিডি করেছিলেন। তিনি কমান্ডো বাহিনী (পেনিসিলিন) নিয়ে এক বিশেষ অভিযান চালিয়ে আমাকে ধরেন এবং ক্রসফায়ার করেন। আমাদের ব্যাকটেরিয়া সমাজে সে "রূপকথার রাক্ষস" নামে পরিচিত। পিচ্চি পিচ্চি ব্যাকটেরিয়াদের রাতে এর কথা শুনিয়ে ঘুম পারানো হয়।

(৪) হেনরিখ হারম্যান রবার্ট কখ
(১১ ডিসেম্বর, ১৮৪৩ – ২৭ মে, ১৯১০)
ইতিহাসঃ
এই লোক "কথা কম কাজ বেশি" টাইপ লোক ছিলেন। কিন্তু একবার কাজ শেষ করে ফেললে তিনি অনবরত শুধু কথাই বলতে থাকতেন। তিনি একবার কিছু কথা বলে ব্যাপক বিখ্যাত হয়ে গেলেন। মানুষ কথাগুলো একত্রিত করে নাম দিল "কখের স্বীকার্য"। তিনিই প্রথম বলেছিলেন, "ভদ্রলোকের(ব্যাকটেরিয়া) জবান এক! আমি যার যে রকম ক্ষতি করি, অন্য কারো সেই ক্ষতি হলে তার জন্য আমিই দায়ী। "