শিক্ষাক্ষেত্রে স্থবিরতার দায় কার?

আলী আবেদীন বাবুল
Published : 6 April 2018, 00:30 AM
Updated : 6 April 2018, 00:30 AM

এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল-কলেজে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছলে সরকার তা ঠেকাতে ২০১৫ সালের ৩০ শে ডিসেম্বর এক প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে পরীক্ষা নেয়ার নিয়ম করা হয় এবং নিয়োগের সুপারিশের দায়িত্ব দেয়া হয় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কাছে। কিন্তু একি? এখন যে নিয়োগ প্রক্রিয়াই থমকে গেছে! অনেক প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকট চলছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শূন্য পদের তালিকা দেয়া সত্ত্বেও শিক্ষক পাচ্ছেন না। শিক্ষাঙ্গনে এ স্থবিরতার দায় কে নেবে?

প্রায় এক বছর হলো ত্রয়োদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়েছে। মেধা তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। এখনো উত্তীর্ণ প্রার্থীরা নিয়োগ পাননি। আদৌ তারা নিয়োগ পাবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। ত্রয়োদশ নিবন্ধন পরীক্ষায় প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় তিন ধাপে উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগ না পেয়ে হতাশ নিবন্ধনধারীরা। আসলে এনটিআরসিতে কি হচ্ছে সবই যেন ধোয়াশাময়। ১৩ তম নিবন্ধনের মেধা তালিকা সংশ্লিষ্ট জেলার শিক্ষা অফিসে পৌঁছে গেছে। কিন্তু নিয়োগের কি হবে কিছুই জানানো হয়নি। ২০১৬ সালে একটি 'গণ বিজ্ঞপ্তি' প্রকাশ করে সর্বশেষ শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছিলো এনটিআরসিএ।

এদিকে গত বছর ডিসেম্বরে নিয়োগের দাবিতে আন্দেলনে নেমে আইনি লড়াইয়ে জেতে চাকরি প্রত্যাশীরা। নিবন্ধনকৃত প্রার্থীদের ৯০ দিনের মধ্যে সমন্বিত মেধা তালিকা তৈরির জন্য এনটিআরসিকে নির্দেশ দেন মহামান্য হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা কোটা বাতিল করে শিক্ষক নিয়োগে সাত দফা নির্দেশনাও দেয় আদালত। কিন্তু এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থা কি তা অজানাই রয়েছে।

প্রদত্ত রায়ে বলা হয়েছে, এনটিআরসিএ'র সুপারিশ অনুযায়ি ৬০ দিনের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। যদি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুপারিশ না মানে তাহলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটি বাতিলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে শিক্ষা বোর্ড।রায়ের কপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে উত্তীর্ণদের নিয়ে সমন্বিত জাতীয় মেধা তালিকা তৈরি করে তা এনটিআরসিএ'র ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। একই সঙ্গে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নির্ধারণ করতে সরকারকে 'শিগগিরই' পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে রায়ে। রুলের শুনানিতে নিয়োগের জন্য মোট ২২ হাজার ৫৬৭টি পদ খালি রয়েছে বলে আদালতকে জানায় এনটিআরসিএ।