বাংলাদেশের পতি, পতিগন ও আরো পতিগন

হৃদয়ে বাংলাদেশ
Published : 6 June 2012, 04:35 PM
Updated : 6 June 2012, 04:35 PM

মনে ভাবিয়াছিলাম, গুঁতোগুতিটা যখন কমিয়াছে, ব্লগ রচনার নামে আর এই প্রিয় ব্লগভুমির প্রিয় ব্লগারদের বিরক্তি উৎপাদন করিবনা। কিন্তু হায়, Man proposes, God disposes. মহান গড ইদানীং চারিপার্শ্বে ইদানীং এইরূপ রঙ্গতামাশা ও আমোদ সৃষ্টি করিয়া মৃদঙ্গের তাল তুলিয়া দিয়াছেন যে, নেত্য করিবার লোভ সামলাইতে না পারিয়া বাঁকা উঠানেই নামিয়া পড়িলাম। নিজগুনে ক্ষমা করিবেন।
বলিতেছিলাম, বাংলাদেশের পতিদের কথা। বাংলাদেশ এক্ষনে পতিতে পতিতে সয়লাব হইয়া গিয়াছে। যেদিকে তাকাই, কেবলই পতি আর পতি। বেচারা আদি ও আইনতঃ পতিরা একরূপ দৃশ্যপট হইতে বিদায় লইয়াছে। এক্ষন, সর্বত্রই কোটিপতি, সমাজপতি, বিচারপতি, সংসদপতি, সরকারপতি, মন্ত্রনালয়পতি, সেনাপতি …… আরও কতশত পতিগন বিরাজমান! বাংলা ভাষার আদি চিন্তক (শব্দটি মহাগুরুর নিকট হইতে ঋণস্বরূপ লওয়া হইয়াছে) ও প্রবর্তকগন নিশ্চয়রূপে সকলেই পুরুষ ছিলেন এবং নারীগন যে পতি হইতে সক্ষম তাহা দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করেন নাই। চতুর্দশ পুরুষের সুকীর্তিতে সেই নমস্যগন আজি আর বিরাজমান নাই, নচেৎ চতুর্পার্শ্বে এতো নারী পতি দেখিয়া স্বীয় রসনা দংশন করিতে করিতে খন্ড-বিখন্ড করিয়া ফেলিতেন নিশ্চয়ই।

যাহাই হোক, এই রচনার মুল উদ্দেশ্য সকল পতিগনকে লইয়া আলোচনা করা নহে। যদিও ধর্মগুরু ও রাজপুরুষদের হস্তে শব্দ উচ্চকিত করিবার যন্ত্র (যাহাকে ম্লেচ্ছ ভাষায় মাইক কহে) এবং এলেবেলে ব্লগ লেখকদের হস্তে লিপিসৃষ্টির যন্ত্র পড়িলে সহজে ভারমুক্ত হয়না। ইদানীংকালে সংঘটিত অজস্র মনোজ্ঞ ও আমোদকর ঘটনার একটি লইয়া খানিক আলোচনা করাই আমার বাসনামাত্র। এই রচনার শেষে কোন সাহায্যের থালা বা বনৌষধ বিক্রয়ের চেষ্টা করা হইবেনা। তামাতুলসী ষ্পর্শ করতঃ সজ্ঞানে এই প্রতিশ্রুতি দান করিতেছি।

যাহারা নিয়মিত সম্বাদপত্র তথা সন্দেশপত্র পাঠ করেন তাহারা ইতোমধ্যে অবগত হইয়াছেন যে বাংলাদেশের দুই গুরুত্বপূর্ণ পতিপুঙ্গবের মধ্যে সুন্দ-উপসুন্দের বিগ্রহের সুচনা হইতেছে। বিস্তারিত পরিচয় প্রদান করিবার সাহসাভাবে এইটুকু বলা যথেষ্ঠ হইবে, একের নিবাস শ্বেতকায় প্রাসাদে, অন্যেরটি রক্তিম। শ্বেতকায় পুঙ্গব তাঁহার প্রিয় সুগ্রীব কর্তৃক অবগত হইলেন যে রক্তিম প্রাসাদবাসী পুঙ্গব তুচ্ছ জনগনকে শ্বেতকায় পুঙ্গবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে উৎসাহী করিতেছেন। অতি স্বাভাবিকভাবে শ্বেত পুঙ্গব রোষান্বিত হইয়া রক্তিম পুঙ্গবকে বালখিল্য ও মূর্খ বলিয়া তুচ্ছ করিয়াছেন। যদিও রক্তিম পুঙ্গব স্বদেশে অনুপস্থিত বলিয়া সশরীরে সেই তুচ্ছতার উত্তর করিতে পারেন নাই কিন্তু তাঁহার রক্তিম প্রাসাদের নিধিরামগন শ্বেত পুঙ্গবের উদ্দেশ্যে রনধ্বনি তুলিয়াছেন। যেক্ষনে এই রণধ্বনি প্রদানের সময় উপস্থিত, সেক্ষনে সরকারপতি রণাঙ্গন হইতে অপসৃত হয়েন। ইহা তাঁহার বিচক্ষনতা ও ন্যায়পরায়নতা তথা নিরপেক্ষতার চিহ্ন বটে। কারন দুই পুঙ্গবই তাঁহার দুই বাহু। একের দ্বারা আইন প্রনয়ন, অপর দ্বারা সেই আইন অথবা আইনেরও অধিক (যেমন আইনে না থাকিলেও শকট নিয়ন্ত্রনকারীকে কর্ণমূল ষ্পর্শপূর্বক উপবেশন ও উত্থান করানো) প্রয়োগকর্ম করা হয়। অতএব সরকারপতির নির্মোহ থাকা খুবই জরূরী। সাধু সাধু।

আপামর জনগন সোৎসাহে পুঙ্গব-লড়াই দেখিবার জন্য সাজসাজ রবে প্রস্তুত হইতেছে। যদিও এই অধম অনুমান করে যেহেতু সরকারপতির উপরোক্ত দুই বাহু তথা পুঙ্গবের অতীব প্রয়োজন তাই এই রণনাদ পরিশেষে বহ্বারম্ভে লঘু ক্রিয়াতেই শেষ হইবে। সবার কল্যান কামনা করি।