বিবেক তুমি কারণ দর্শাও – কেন আল্লামা সাঈদিকে মুক্তি দেওয়া হবেনা?

বাংগাল
Published : 2 Jan 2016, 09:06 AM
Updated : 2 Jan 2016, 09:06 AM

এখন সময় এসেছে নিজের বিবেকের ঠিকানায় কারণ দর্শাও নোটিশ জারী করার , এখন সময় এসেছে জাতির বিবেকের ঠিকানায় কারণ দর্শাও নোটিশ জারী করার , এখন সময় এসেছে মহমান্য আদালতের ঠিকানায়ও একটি কারণ দর্শাও নোটিশ জারী করার । এতে কি আদালত অবমাননা হবে ?

কেন হবে ?

তখন তো হয়নাই, যখন রেডিওতে এ গান বাজানো হতো -" বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা – আজ জেগেছে এই জনতা !" জনতার আদালতের বিচারে আদলতের বিচারপতির বিচার হবার নজির আছে , কিন্তু আদালতের বিচারপতি কখনোই জনতার বিচার করতে পারেনা । বিচারপতির ভুল বিচারের নজির আছে কিন্তু জনতার আদালতের ভুলের নজির সম্ভবত নেই।

আমরা এখন আমাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই , কেন সাঈদী হুজুর কেবলাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হবেনা ?

ইতোমধ্যে যুদ্ধাপরাধ মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

যে অপরাধে হুজুর কেবলাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছিলো–

অপরাধ ১/ ইব্রাহিম কুট্টি ও বিসাবালীকে হত্যা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ঘরে আগুন দেয়ার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাঈদীর ফাঁসির রায় দিয়েছিল।

যেসব কারণে আল্লামা সাঈদীকে বাইজ্জত খালাস দেওয়া যায় এরমধ্যে প্রথম এবং একমাত্র কারণ হচ্ছে , ইব্রাহিম কুট্টি এবং বিসাবালী বিচার চলাকালীন সময়ে সশরীরে হাজির হয়ে হুজুর কেবলাকে হত্যাকারী হিসাবে শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছেন ।

অপরাধ ২/ স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে সাঈদীর নেতৃত্বে ১০-১২ জন সশস্ত্র রাজাকার পারেরহাট বন্দরের গৌরাঙ্গ সাহার বাড়ি থেকে তার তিন বোনকে অপহরণ করে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে তুলে দেয়। সেখানে তাদের আটকে রেখে তিন দিন ধরে ধর্ষণ করে পরে ছেড়ে দেয়া হয়।

এখানেও হুজুর কেবলাকে নির্দোষ ঘোষণা করা যায় , কারণ গৌরাঙ্গ সাহার তিন বোন তখন গণিমতের মাল। হুজুর কেবলা আল্লামা সাইদি তখন ধর্মযোদ্ধা ফাকিস্তানি সেনাদের হাতে তিন জন হিন্দু নারীকে তুলে দিয়ে কোন অপরাধ করেছেন বলে মনে করার কোন কারণ থাকতে পারেনা । কারণ তিনজন নারীকে ফাকিস্তানি জওয়ানরা ধর্ষণ করে ছেড়েতো দিয়েছিলো , আটকেতো রাখেনি । তাছাড়া হুজুর কেবলা নিজে তিন নারীর কাউকে ধর্ষণ করেছেন বলে কেউ চাক্ষুষ স্বাক্ষী ছিলেন না , যদিও চর্ম চোখের সামনে ধর্ষণ করা যায়না । পরীক্ষা প্রার্থনীয় । যেমন বাচ্চু হুজুর ( মাও আজাদ ) নিজেই ধর্ষণ কর্মটি সম্পন্ন করেছিলেন বলে সবিতা রানী স্বাক্ষ দিয়েছিলেন। হুজুর কেবলা সাইদি হুজুর নিরপরাধ নিস্পাপ ।

অপরাধ ৩ / স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে সাঈদী জোর করে মধুসুদন ঘরামী, কৃষ্ট সাহা, ডা. গণেশ সাহা, অজিত কুমার শীল, বিপদ সাহা, নারায়ণ সাহা, গৌরাঙ্গ পাল, সুনীল পাল, নারায়ণ পাল, অমূল্য হাওলাদার, শান্তি রায়, হরি রায় জুরান, ফকির দাস, টোনা দাস, গৌরাঙ্গ সাহা, হরিদাস, গৌরাঙ্গ সাহার মা ও তিন বোন মহামায়া, অন্যরাণী ও কামাল রাণীসহ ১০০/১৫০ জন হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করেন।

এখানেও আল্লামা সাঈদী হুজুর কেবলা নির্দোষ — কারণ হুজুর যাদের ধরমান্তরিত করেছিলেন তারা সবাই হিন্দু ধর্মের অনুসারী ছিলেন , এটা বুঝা অত্যন্ত সহজ যে, হিন্দু ধর্মাবলম্বী কাউকে ধরমান্তরিত করেই মুসলমান বানানো যায় । তিনিতো একজন মুসলমানকেও ধরমান্তরিত করেননি , যা হতো গর্হিত অপরাধ । এখানেও হুজুর খালাস পাওয়ার আন্তর্জাতিক যোগ্যতা অর্জন করেছেন ।

হুজুর পাক কেবলার চাঁদমুখের কথা কে না জানে ? পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে কত নবী রাসুল , কামেল , অলি আউলিয়া এলেন আর গেলেন কারো চেহারা চান্দের মাটিতে দেখা যায়নি । একমাত্র হুজুর পাক কেবলা সাঈদী হুজুরের চেহারা মোবারক চাঁদে ভেসে উঠেছিলো , এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মহামান্য আদালত হুজুরকে বাইজ্জাত খালাস করে দিতে পারেন না ?

এখানে উল্লেখ করা কি অবান্তর হবে ? গণজাগরণ মঞ্চের উত্তাল ফেব্রুয়ারি মাসে ব্লগার রাজিবকে হত্যার সময়ও ধর্মীয় নেতা জসিমুদ্দিন রাহমানী তো শুধুমাত্র রাজীবকে হত্যায় উদ্বুদ্ধ করেছিলেন , নিজ হাতে হত্যা করেননি । রাহমানী হুজুরের মাত্র ৫ বছরের কারাদন্ড হতে পারলে হুজুর কেবলা সাঈদির———–? আল কায়েদা মাস্টারমাইন্ড ওসামা বিন লাদেন নিজ হাতে কাউকে গুলি করে মেরেছিলেন এরকম কথা কি কেউ শুনেছেন ? তিনি শুধু উদ্বুদ্ধ করতেন । কেউ কি শুনেছেন ওসামা বিন লাদেনের প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় মৃত্যুদণ্ড হয়েছে ?
তাহলে কেন আমাদের বিবেকের কাছে কারণ দর্শাও নোটিশ জারী করতে পারবোনা ? — ১৫ দিনের মধ্যে রায় রিভিউ করে হুজুর কেবলা আল্লামা সাঈদীকে বাইজ্জাত খালাস কেন দেন দেওয়া যাবেনা ?

হুজুর কেবলার কারাদণ্ডের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হবার ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ করতে হবে , এটা রীতি । এদেশের তৌহীদি জনতা জোর দাবী জানাচ্ছে , সরকারি উকিল ( এটর্নি জেনারেল ) মাহবুবে আলম তাঁর ভুল বুঝতে পারবেন এবং হুজুর কেবলার নিঃশর্ত মুক্তির জন্য এবং সাজা মওকুফের জন্য আন্তর্জাতিক মানের রিভিউ করবেন এবং মহামান্য আদালতকে বুঝাতে সমর্থ হবেন যে , চোখ বন্ধ করে হুজুর কেবলাকে ছেড়ে দেওয়া যায় ।*

** কেউ আবার ভেবে বসবেন না যে , কাদের মোল্লা , কামারু , সাকাকেও তো চোখ বন্ধ করেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ।