আজ বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস। চাই পরিকল্পিত পরিবার

আজাদী
Published : 11 July 2011, 03:11 PM
Updated : 11 July 2011, 03:11 PM

আজ ১১ জুন, সোমবার । বিশ্ব জনসংখা দিবস। প্রতিবছর এ দিনটিকে জাতিসংঘ তথা সারা বিশ্ব এ দিনটিক "বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস" হিসাবে পালন করছে। এবার দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো 'দ্য ওয়ার্ল্ড এ্যাট ৭ বিলিয়ন' অর্থাৎ ' ৭০০ কোটি মানুষের বিশ্বে পরিকল্পিত পরিবার, দেশ গড়ার অঙ্গীকার।'

আজ সারা বিশ্বের প্রধান সমস্যা হল জনসংখ্যা সমস্যা। আমাদের বাংলাদেশেও এটা প্রধান সমস্যা। বিগত বছর গুলোর তুলনায় আমাদের দেশে বর্তমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশী। আর তার প্রভাব পড়ছে আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে। ফলে দারিদ্রতা আমাদের পিছু ছাড়ছেনা।

১৯৯১ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল ১১ কোটি ১৪ লাখ। ১০ বছর পর ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী দেশে জনসংখ্যা ১২ কোটি ৪৩ লাখ। আর সর্বশেষ পাওয়া জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ)-২০১০ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের জনসংখ্যা বর্তমানে ১৬ কোটি ৪৪ লাখ। অর্থাৎ গত নয় বছরে দেশে জনসংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪ কোটি ১ লাখ। বছরে বৃদ্ধির হার প্রায় ৪৪ লাখ ৫৫ হাজার ৫৫৫ জন। জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের হিসাব মতে, দেশে প্রতি ১১ সেকেন্ডে একটি শিশুর জন্ম হচ্ছে। আর প্রতি মিনিটে জন্মাচ্ছে গড়ে ৮টি শিশু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, প্রতি মিনিটে সারা পৃথিবীতে জন্মায় ২৫০ শিশু। এর মধ্যে শুধু বাংলাদেশেই জন্মাচ্ছে ৯ জন। [সুত্র সীমান্ত: শব্দনীড়]

বাংলাদেশের জনসংখ্যা দ্রুত বেড়ে যাওয়ার মূল কারন হল অ-পরিকল্পিত পরিবার, পরিবার পরিকল্পনা বা জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্দতি গ্রহনে অনিহা, অতি মাত্রায় ধর্মান্ধতা বা ধর্মের নামে কু-সস্কার ও ধর্মীয় বিধান সম্পর্কে অজ্ঞতা, লোকলজ্জা ইত্যাদি। যার ফলে আমাদের দেশে এখনও ৩৯% দম্পতি পরিবার পরিকল্পনা ব্যবহার করেন না।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরিবার পরিকল্পনায় স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদী পদ্ধতি গ্রহণের হার তুলনামূলকভাবে এখনও অনেক কম। ৬১ দশমিক ৭ শতাংশ পদ্ধতি ব্যবহারকারীর মধ্যে ৫ দশমিক ২ শতাংশ দম্পতি স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণ করছেন। এর মধ্যে পুরম্নষের অংশগ্রহণ মাত্র ০ দশমিক ৬ শতাংশ। স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদী পদ্ধতি গ্রহীতা বৃদ্ধি করা আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। এছাড়া চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে পদ্ধতি গ্রহণের হার এবং মাতৃ ও শিশুমৃতু্যসহ অন্যান্য নির্দেশকও অপর ৫টি বিভাগের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে দেশে এখনও মেয়েদের গড় বিয়ের বয়স ১৬.৪ এবং এক-তৃতীয়াংশ মহিলা ২০ বছর বয়স হওয়ার আগেই মা হয়ে যায়। আর জনসংখ্যার শতকরা প্রায় ২৩ ভাগই হচ্ছে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরী। এ অল্প বয়সী জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রজনন স্বাস্থ্য কার্যক্রম ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারেনি।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক এম এম নিয়াজউদ্দিন বলেন, নানা প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে পরিবার পরিকল্পনা এবং মা ও শিশু স্বাস্থ্য কর্মসূচী বেশ অগ্রগতি অর্জন করেছে। প্রতি বছর পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহীতা শতকরা গড়ে ১ দশমিক ৫ ভাগ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহারকারীর হার শতকরা ৬১ দশমিক ৭ ভাগে উন্নীত হয়েছে। বাল্যবিবাহ বর্তমানে একটি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। দেশে এখনও মেয়েদের গড় বিয়ের বয়স ১৬.৪ এবং এক-তৃতীয়াংশ মহিলা ২০ বছর বয়স হবার আগেই মা হয়ে যায়। আর জনসংখ্যার শতকরা প্রায় ২৩ ভাগই হচ্ছে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরী। এ অল্প বয়সী জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রজনন স্বাস্থ্য কার্যক্রম ইতিবাচক প্রভাবে ফেলতে পারেনি। এদেশের প্রজনন হার ধনী-গরিব, শহর-গ্রাম, শিৰিত-অশিৰিতদের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য গড়ে উঠেছে বলে তিনি জানান।

দেশের জনসংখ্যার ভয়াবহতার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সাইন্স বিভাগের শিক্ষক ও প্রকল্প পরিচালক এ কে এম নূর-উন-নবী জনকণ্ঠকে বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও অপূর্ণ চাহিদার হার যেভাবে বাড়ছে , তাতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম অকার্যকর হয়ে পড়বে। প্রতি বছর বর্তমান জনসংখ্যার সঙ্গে ১৮ থেকে ২০ লাখ নতুন মুখ যোগ হচ্ছে। জনসংখ্যার বিষয়টি গুরম্নত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেই সরকারকে নিতে হবে জাতীয় পরিকল্পনা। অন্যথায় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পুরনো কাঠামো ভেঙ্গে আধুনিক করে তুলতে হবে। পরিসংখ্যানে নয়, কাজে-কর্মে দৃশ্যমান থাকতে হবে। প্রচার কার্যক্রমের ধরন ও গতিশীলতা বাড়াতে হবে। সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে থাকতে হবে বাসত্মবায়নের জোরালো দিক নির্দেশনা। সরকারী পর্যায় থেকে আরও বেশি আনত্মরিক থাকতে হবে। নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতেই হবে। মেয়েরা যাতে ২০ বছর এবং ছেলেরা যাতে ২৫ বছরের আগে বিয়ে না করেন। আর এর আগে বিয়ে হলে মেয়েরা যাতে ২০ বছর আগে কোন সনত্মান না নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

[সূত্র: জনকন্ঠ]


বাংলাদেশের জনসংখ্যা আজ প্রায় ১৬ কোটি। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর মৌলিক চাহিদা পুরন করা কি আমাদের মত একটি উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে সম্ভব ? অবশ্যই না। কিন্তু এর প্রতিকারের কোন ব্যবস্থাও বিগত কয়েক বছর যাবত চোখে পড়ছেনা। বন্ধ হয়ে আছে ক্যাডার বা নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ। যেখানে বর্তমানে কয়েক হাজার পদ এখন শুন্য। এই ক্যাডার ও নন-ক্যাডার দ্বন্দটি এখন আদালতে। আদালত এটাকে দ্রুত নিস্পত্তির কোন উদ্যোগও নিচ্ছেনা, যার ফলে এ সেক্টরটি এখন একটা প্রকৃত ও যোগ্য লোকবলহীন মন্ত্রনালয় হিসাবে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। আমরা এর আসু সমাধান চাই।

গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী আফম রুহল হক সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে করেন। সেখানে তিনি এসব সমস্যার দ্রুত সমাধানের উপড় জোড় দিয়েছেন। তিনি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সরকারের ঝিমিয়ে পড়া কার্যক্রমে গতি এসেছে বলেও দাবি করেছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে ঝিমিয়ে পড়া জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে গতি এসেছে। আমরা সফল হয়েছি এ কথা বলছি না। তবে এ খাতে আমাদের মনোযোগ আগের থেকে অনেক বেশি। লোকবল নিয়োগ, ক্যাডার, নন-ক্যাডার দ্বন্দ্ব নিরসনে উদ্যোগ, জন্ম নিয়ন্ত্রণে পিছিয়ে পড়া এলাকায় বিশেষ উদ্যোগের কারণে অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেন, এবার বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের প্রতিপাদ্য 'দ্য ওয়ার্ল্ড এ্যাট ৭ বিলিয়ন'। যার ভাবানত্মর করা হয়েছে '৭০০ কোটি মানুষের বিশ্বে, পরিকল্পিত পরিবার, দেশ গড়ার অঙ্গীকার।'
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, মাত্র ১২ বছর আগে বিশ্ব জনসংখ্যা ছিল ৬০০ কোটি । এ বছর শেষে জনসংখ্যা ৭০০ কোটি পূর্ণ হবে। যার বেশিরভাগই রয়েছে এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। স্থানীয় ও আনত্মর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৯ এবং প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৯৯৩ জন বাস করছে। যদি জনসংখ্যা বৃদ্ধির এ হার অব্যাহত থাকে তাহলে আগামী ৫০ বছরের মধ্যেই জনসংখ্যা বর্তমানের দ্বিগুণ হবে। ২০২১ সালের মধ্যে 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' গড়ার লক্ষ্যে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারের হার ৮০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। বর্তমানে এ হার শতকরা ৬১ দশমিক ৭। আগামী ১০ বছরের মধ্যে আরও ১৮ ভাগ অর্জন করা আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, পরিবার পরিকল্পনায় স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদী পদ্ধতি গ্রহণের হার তুলনামূলকভাবে এখনও অনেক কম। ৬১ দশমিক ৭ শতাংশ পদ্ধতি ব্যবহারকারীর মধ্যে ৫ দশমিক ২ শতাংশ দম্পতি স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণ করছেন। এর মধ্যে পুরম্নষের অংশগ্রহণ মাত্র ০ দশমিক ৬ শতাংশ। স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদী পদ্ধতি গ্রহীতা বৃদ্ধি করা আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে পদ্ধতি গ্রহণের হার এবং মাতৃ ও শিশুমৃতু্যসহ অন্যান্য নির্দেশকও অপর ৫টি বিভাগের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে বলে তিনি উলেস্নখ করেন।

[সূত্র: জনকন্ঠ]

তাই আসুন আমরা এ বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসে বাংলাদেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনের জন্য স্ব-স্ব অবস্থান থেকে দায়ীত্ব পালন করতে এগিয়ে আসি। আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা যে, "পরিকল্পিত পরিবার, পরিকল্পিত জনসংখ্যা, পরিকল্পিত দেশই হল আমাদের উন্নয়নের প্রথম শর্ত"।

এক নজরে বাংলাদেশ-২০১১
Population

158,570,535 (July 2011 est.)
Age structure

0-14 years: 34.3% (male 27,551,594/female 26,776,647)
15-64 years: 61.1% (male 45,956,431/female 50,891,519)
65 years and over: 4.7% (male 3,616,225/female 3,778,119) (2011 est.)
Median age

total: 23.3 years
male: 22.7 years
female: 23.7 years (2011 est.)
Population growth rate

1.566% (2011 est.)
Birth rate

22.98 births/1,000 population (2011 est.)
Death rate

5.75 deaths/1,000 population (July 2011 est.)
Net migration rate

-1.57 migrant(s)/1,000 population (2011 est.)
Urbanization

urban population: 28% of total population (2010)
rate of urbanization: 3.1% annual rate of change (2010-15 est.)
Sex ratio

at birth: 1.04 male(s)/female
under 15 years: 1.01 male(s)/female
15-64 years: 0.89 male(s)/female
65 years and over: 0.93 male(s)/female
total population: 0.93 male(s)/female (2011 est.)
Infant mortality rate

total: 50.73 deaths/1,000 live births
male: 53.23 deaths/1,000 live births
female: 48.13 deaths/1,000 live births (2011 est.)
Life expectancy at birth

total population: 69.75 years
male: 67.93 years
female: 71.65 years (2011 est.)
Total fertility rate

2.6 children born/woman (2011 est.)
HIV/AIDS – adult prevalence rate

less than 0.1% (2009 est.)
HIV/AIDS – people living with HIV/AIDS

6,300 (2009 est.)
HIV/AIDS – deaths

fewer than 200 (2009 est.)
Major infectious diseases

degree of risk: high
food or waterborne diseases: bacterial and protozoal diarrhea, hepatitis A and E, and typhoid fever
vectorborne diseases: dengue fever and malaria are high risks in some locations
water contact disease: leptospirosis
animal contact disease: rabies
note: highly pathogenic H5N1 avian influenza has been identified in this country; it poses a negligible risk with extremely rare cases possible among US citizens who have close contact with birds (2009)
Nationality

noun: Bangladeshi(s)
adjective: Bangladeshi
Ethnic groups

Bengali 98%, other 2% (includes tribal groups, non-Bengali Muslims) (1998)
Religions

Muslim 89.5%, Hindu 9.6%, other 0.9% (2004)
Languages

Bangla (official, also known as Bengali), English
Literacy

definition: age 15 and over can read and write
total population: 47.9%
male: 54%
female: 41.4% (2001 Census)
School life expectancy (primary to tertiary education)

total: 8 years
male: 8 years
female: 8 years (2007)
Education expenditures

2.4% of GDP (2008)

**১১/০৭/২০১১**

***
ফিচার ছবি: http://in.ygoy.com