পরজীবি আরব সভ্যতার জন্য গণতন্ত্র মন্দের ভাল

বাসন্ত বিষুব
Published : 25 March 2011, 05:32 PM
Updated : 25 March 2011, 05:32 PM

মধ্যপ্রাচ্যের আন্দোলনের ধাক্কা এখন সিরিয়ায়। সিরিয়া ইসরাইলের মাথা ব্যথা। আরব সভ্যতা এক প্রকার পরজীবী। পশ্চিমাদের রস-রসদ ভক্ষণ না করলে তাদের বেঁচে থাকাই দায়। গোটা বিশ্ব সভ্যতায় হালে আরবদের কোন বুদ্ধিবৃত্তিক অস্তিত্ব নেই। যেটুকু অস্তিত্ব তা তাদের সম্পদের কারণে, যে সম্পদ আবার তাদের সৃষ্ট নয়। প্রকৃতির দান। বুদ্ধিবৃত্তিক জগতে যে কজন আরবকে খুঁজে পাওয়া যায় কিংবা তর্কে জেতার জন্য যাদের নাম আলোচনায় নিয়ে আসা যায় তাদের বেশির ভাগই শিক্ষা লাভ করেছেন পশ্চিমে, লালিত-পালিত হয়েছেন পশ্চিমের দুগ্ধে। সেই আরব এখন টালমাটাল।

আরব জগতে অস্থিরতার কারণ স্বৈরতন্ত্র আর বদলে আকাঙ্খিত গণতন্ত্র। ইসলামে স্বৈরতন্ত্র কিংবা রাজতন্ত্রকে স্বীকার করা না হলেও ইসলামী সভ্যতা আরবে এই দুটি ছাড়া আর কোন তন্ত্র চোখে পড়ে না। মদ, আফিম, নারী- এসবই তাদের জীবনের অনুসঙ্গ। চিন্তা, জ্ঞান আর প্রগতি- এর কোনটাই তাদের স্বভাবে আর নেই। চাইলেও খুঁজে পাওয়া যাবেনা। ১৫ শতক আকে যে জ্ঞান আর বিজ্ঞানের বিকাশ আরবে ঘটেছিল তা আরবদের এবং এমনকি মৃতপ্রায় মুসলিম সভ্যতার জন্য এখন নেহায়েত জাবরকাটার মত বিষয়। সাহাবি-সাহাবা'র জীবন আর সেই সব মনীষীদের কথা আওড়িয়ে নিজেদের চলমান ব্যর্থতাকে আড়াল করা ছাড়া আর কোন প্রয়োজন সেই ইতিহাসের নেই। যদিও কথা থেকে যায়, ইসলাম না এলেও কী সেই সব ব্যক্তিদের মধ্যে জ্ঞান আর বিজ্ঞানের বিকাশ ঘটতো না? অবশ্যই ঘটতো। কারণ মানুষের বুদ্ধির বিকাশ বিশেষ কোন ধর্মের কারণে ঘটে না, ঘটে স্বাভাবিক প্রাকৃতি ক্রমবিকাশের মধ্যে দিয়ে। ইবনে সিনাসহ আরো অনেকের মধ্যে জ্ঞানের যে বিকাশ ঘটেছিল তা ইসলামের জন্য নয়, তাদের মস্তিষ্কের উর্বরতার জন্য। মুসলমান না হলেও ইবনে সিনা ইবনে সিনাই হতেন।

সেই আরবে এখন গণতন্ত্রের জন্য রক্ত ঝরছে। কিন্তু গণতন্ত্রের এই তাগিদ কি তাদের অন্তর থেকে উদ্ভুত নাকি পালক পশ্চিমা সভ্যতা থেকে আগত। এই গণতান্ত্রিক আন্দোলন পশ্চিম সৃষ্ট- আমার কোন সন্দেহ নেই। পশ্চিমারা এখন একক তন্ত্রের পরিবর্তে বহুতান্ত্রিক শাসন দেখতে চাইছে। তাও নিজেদের প্রয়োজনে। কিন্তু নির্বোধ আরবদের জন্য স্বৈরতন্ত্র কী আর গণতন্ত্রই কী! পশ্চিমের পদলেহনই তাদের মজ্জাগত। গণতন্ত্র এলেও তথৈবচ। পার্থক্য এটুকুই যে, গণতন্ত্র তাদের চেতনায় কিছুটা উষ্ণতা জোগাবে। কিছুটা কর্মঠ করবে। মানে ৪ কিংবা পাঁচ বছর পর পর ভোট দিয়ে শাসক বেছে নেবার প্রক্রিয়াটা তাদের খানিক হলেও হাটতে শেখাবে। তারাও যে সজীব মানুষ সে কথা মনে করিয়ে দেবে। তাই বলা যায়, গণতন্ত্র অথর্ব আরবদের জন্য মন্দের ভাল। যেমনটা ভাল বাঙালিদের জন্য। কারণ, আরব কিংবা বাঙালী- স্বাধীনতা কারো জন্যই নয়। স্বাধীনতা শুধু তাদেরই জন্য যারা এখন স্বাধীন। কারা স্বাধীন, সে প্রশ্নের জবাব হয়তো সব পাঠকেরই জানা আছে।