সোলারিন: বিশ্বের সবচেয়ে দামি স্মার্টফোন

বাসন্ত বিষুব
Published : 2 June 2016, 06:13 PM
Updated : 2 June 2016, 06:13 PM


আ লাইট রিভিউ অব স্মার্টফোন

হাতে একটা আইফোন থাকলে ভাবটাই আলাদা। বিশ্বের এক নম্বর স্মার্টফোন হাতে থাকলে ভাব তো কিছুটা আসতেই পারে। তবে এই ভাবের দাম কত? ৭৫০ ডলার বড়জোর! জানা মতে, বাংলাদেশের বাজারে আইফোন সিক্স+ এর দাম ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। এখন কথা হলো, হাতের স্মার্টফোনটার দাম যদি হয় ১১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা তাহলে ভাবটা কেমন হবে! ফোনটা হাতে না আসা পর্যন্ত সেটা বলার সুযোগ নাই।

আর সেই ফোনটার নাম সোলারিন, যাকে বলা হচ্ছে, স্মার্টফোনের জগতে 'রোলস রয়েস।' আজই (২ জুন ২০১৬) বাজারে আসা ইসরাইলি কোম্পানি সিরিন ল্যাবস এর তৈরি এই স্মার্টফোন সম্পর্কে তাই জানার আগ্রহ আছে সবার। তো জেনে নেয়া যাক।

ক. সিরিন ল্যাবস এর দাবি, তাদের তৈরি সোলারিন-ই বিশ্বের 'সবচেয়ে নিরাপদ' স্মার্টফোন। প্রতিষ্ঠানটির ভাষ্যমতে, ব্যক্তিগত নিরাপত্তার যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে তা বিশ্বের আর কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে নেই। সোলারিনে ব্যবহৃত হয়েছে ২৫৬-বিট এইএস এনক্রিপশন। এ প্রযুক্তি শুধুমাত্র সামরিক বাহিনীর যোগাযোগ প্রতিরক্ষা'র কাজে প্রয়োগ করা হয়। সোলারিন অন-অফ করার জন্য এর পেছন দিকে লাগানো আছে বিশেষ 'নিরাপত্তা সুইচ।' (বামে-ডানে থাকলেও চলতো।)

খ. সোলারিন নিয়ন্ত্রিত হয় ২ গিগাহার্য কুয়ালকম ¯œ্যাপড্রাগন ৮১০ প্রসেসর দ্বারা। ফলে বাজারের যে কোন স্মার্টফোনের চেয়ে 'বহু গুণ' বেশি দ্রুতগতি সম্পন্ন ওয়াই-ফাই সেবা দিতে সক্ষম এটি।

গ. সোলারিনের ফটোগ্রাফিক ফিচারও চমৎকার। পেছনের ২৩.৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরার সাথে আছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফোর-টন ফ্লাশ লাইট।  (চোখ নষ্ট না হলেই ভাল।)  আর সামনে আছে ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা ও ফ্ল্যাশ লাইট। সেলফি তুলার অভিজ্ঞতাকে নতুনত্ব দেয়ার জন্য এই ক্যামেরায় আছে ইলেক্ট্রিকাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন পদ্ধতি।

ঘ. এবার টাচস্ক্রিনের পালা। লেড ২-কে রেজুলেশন সমৃদ্ধ ৫.৫ ইঞ্চি আইপিএস স্ক্রিনের নিরাপত্তায় ব্যবহার করা হয়েছে গরিলা গ্লাস-৪। ফিচারটি চলে অ্যানড্রয়েড ৫.১ অপারেটিং সিস্টেমে। (খারাপ না।)

ঙ. তবে সোলারিন কিন্তু মোটেই 'আলালের ঘরের দুলাল' নয়। অর্থাৎ এটা বাজার দখল করা হ্যান্ডসেটগুলোর মত অত মসৃন করে বানানো হয়নি। আর ওজনও কম না, ২৫০ গ্রাম। হ্যান্ডসেটটি দৈর্ঘ্যে ১৫৯.৮ মিলিমিটার আর প্রস্থে ৭৮ মিলিমিটার। পুরুত্ব ১১.১ মিলিমিটার। (চলবে মনে হয়।)

চ. এবার আসা যাক আসল কথায়। মানে চার্য থাকবে কতক্ষণ! সোলারিনের ব্যাটারির ক্ষমতা ৪০০০ মিলি-অ্যাম্পিয়া-ঘন্টা। উদ্ভাবনকারী প্রতিষ্ঠান সিরিন ল্যাবস জানিয়েছে, এই ফোনের এক চার্যে টকটাইম হবে ৩১ ঘন্টা আর স্ট্যান্ডবাই টাইম 'দুই সপ্তাহ' কিংবা তারচেয়েও বেশি। এই ফোনের চার্যিং সিস্টেম কোয়ালকম কুইক চার্য-২ সাপোর্ট করায় চার্য দিয়ে বসে থাকতে হবে না ঘন্টার পর ঘন্টা। (ভালই তো।)

র‌্যাম আর স্টোরেজের বিষয়টা বাদ পড়ে গেছে মনে হয়। সোলারিনের র‌্যাম ৪ জিবি'র আর ইন্টারনাল স্টোরেজ ১২৮ জিবি। তবে, এই স্টোরেজ বাড়ানোর কোন সুযোগ রাখা হয়নি। অর্থাৎ এক্সটার্নাল মেমোরি কার্ড ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। (দরকারই কী!)

ছ. এবার চেহারা-সুরতের বিষয়ে আসা যাক। সোলারিন পাওয়া যাচ্ছে ৪টি আলাদা রঙে। টাইটেনিয়াম যুক্ত ফায়ার ব্ল্যাক কার্বন লেদার, হিরক সদৃশ্য কার্বন বিশিষ্ট ফায়ার ব্ল্যাক কার্বন লেদার, হলুদাভ সোনালী রঙের ফায়ার ব্ল্যাক কার্বন লেদার, হিরক সদৃশ্য কার্বণ বিশিষ্ট ক্রিস্টাল হোয়াইট কার্বন লেদার। (এত লেদার দেওয়া ঠিক হয় নাই।)

জ. সোলারিন পানি ও ধুলা প্রতিরোধক ব্যবস্থা সমৃদ্ধ। এই প্রতিরোধ ব্যবস্থার সর্বোচ্চ সীমা আইপি-৫৪। (আইপি-৫৪! এটা আবার কী?)

ঝ. কোথায় পাওয়া যাবে? সোলারিনের নিজস্ব ফ্লাগশিপ স্টোর আছে লন্ডনের মেফেয়ারে, আর হ্যারোডস-এ স্টোর চালু হবে জুনের ৩০ তারিখ থেকে। ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও এশিয়ায় স্টোর চালু হবে এ বছরের শেষের দিকে। (বাংলাদেশে সোলারিন ঢুকতে পারবে বলে মনে হয় না। ইসরাইলি জিনিস বলে কথা! কেউ কিনলে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সোজা কাশিমপুরে।)

ঞ. সিরিন ল্যাবস প্রথম কাজ শুরু করে কাজাখস্তানে। কিন্তু এটা মূলত ইসরাইলি প্রতিষ্ঠান। (তথ্যটা বিভ্রান্তিকর।)