আজ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। ৬৩ তম বর্ষে পদার্পণ করছে দেশের সবচেয়ে পুরোনো এই দলটি। তাই দিনটি আমাদের রাজনৈতিক বিবেচনায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ দিনটি আজ আলোচনার শীর্ষে নেই। আজ সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর অর্থ পাচার মামলার রায়। দেশের নাগরিক সমাজের প্রায় সব স্তরেই আলোচিত হচ্ছে কোকোর সম্ভাব্য দন্ড সম্পর্কে। নাগরিকদের অধিকাংশই নিশ্চিত ছিল যে কোকোর বড় ধরণের শাস্তি হতে যাচ্ছে। কেউ কেউ নিশ্চিত ছিলেন, কারণ তারা মনে করতেন কোকো প্রকৃত অর্থেই অর্থ পাচার করেছে এবং এই কারণেই সে অপরাধী। তাদের অভিমত হলো, অপরাধীর উপযুক্ত সাজাই হওয়া উচিত। নাগরিকদের অপর একটি অংশ তার শাস্তি সম্পর্কে নিশ্চিত ছিল, কারণ তারা মনে করেন একটি রাজনৈতিক অভিপ্রায় থেকেই কোকোকে আইনের চোখে দন্ডিত হিসেবে ঘোষণা করার চেষ্টা চলছে। তাছাড়া বিএনপিও এই নাগরিক শ্রেণীকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছে যে, রাজনৈতিক ও পারিবারিকভাবে বিএনপিকে বিপর্যস্ত ও হেয় করার জন্যই কোকো ও তার বড় ভাই তারেক রহমানকে দন্ডিত করার ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্রে শুধু দেশের শক্তিই নয়, বিদেশের শক্তিও জড়িত।
আজ কোকোর ৬ বছরের কারাদন্ড ও প্রায় ৩৯ কোটি টাকা জরিমানা হয়েছে। আইনের চোখে কোকো এখন একজন দন্ডপ্রাপ্ত অপরাধী। সামনে আদালতের আরো স্তর রয়েছে, সেখানে গিয়ে রায় কোন রূপ নেয় তা দেখার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু তারপরও আজকের নিম্ন আদালতের এই রায় বেগম খালেদা জিয়ার জন্য একটি বড় আঘাত বলেই মনে হচ্ছে। কারণ কারণ এই রায়ের প্রভাব তার ব্যক্তি জীবন তো বটেই বরং রাজনৈতিক জীবনেও পড়বে। তাছাড়া এই রায়ের মাধ্যমে তারেক রহমানের ভাগ্যও অনেকটা অনুমান করা যায়। যেহেতু তারেক রহমানকে ভবিষ্যত বিএনপির কর্ণধার এবং দেশের ভাবি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাই এই রায়ের ফলে অনেক ভাবনা চিন্তাই বিএনপিকে করতে হবে বলে মনে হচ্ছে। আর এই কারণেই আশংকা এসে যায় যে, সামনে হয়তো আরো একটি লম্বা-নিরস হরতাল অপেক্ষা করছে। যে হরতাল না পারবে কোকোর এই দণ্ডকে মওকুফ করতে, না পারবে সরকারের ভিত্তিকে টলাতে। যা পারবে তা হলো সাধারণ খেটে খাওয়া জনতার জীবন নিয়ে টানা হেচড়া করতে, দু বেলা না খাইয়ে রাখতে।
তাই ভাবছি, কোকোর ভাগ্যে তো ৬ বছরের জেল জুটলো এখন জাতির ভাগ্যে কয় ঘন্টার হরতাল জোটে!
***
ফিচার ছবি: আন্তর্জাল