মোসাহেব মিডিয়া: প্রধানমন্ত্রী চমক দেখালেন কোথায়?

বাসন্ত বিষুব
Published : 6 Dec 2011, 04:04 PM
Updated : 6 Dec 2011, 04:04 PM


ছবি: নিউজ২১বিডি.কম

জন্মের সময়ই যদি মৃত্যুর দাবি উঠে তবে কেমন হবে? নিশ্চয় ভাল নয়, বিষয়টা মন্দ ঠেকবে। কিন্তু এরকমটাই তো হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রীসভা নিয়ে। তিনি এমনসব ব্যক্তিদের মন্ত্রী বানিয়ে এমনসব গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় তাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন যা দেখে অভিজ্ঞজনের চক্ষু ছানাবড়া আর জনতার মুখ হা করা। এই তো ছিল তখনকার অবস্থা। কারো কি দ্বিমত আছে! মনে হয় নেই।

তো তখন থেকেই সে মন্ত্রীসভা- মানে, ঐ মন্ত্রীদের বদলাবার মৃদু পরামর্শ বিতরণ শুরু হলো দেশের বুদ্ধিজীবী সমাজ থেকে। তারা আশংকা প্রকাশ করলেন, এতো ভারী ভারী মন্ত্রণালয় ঐসব ক্ষীণকায় ব্যক্তিদের কাধে তুলে দেয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হয়নি। বরং এটা হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। জনতা বুঝলো একটু পরে, যখন বুদ্ধিজীবীদের এই আশংকা সত্য হতে হতে অকাট্য সত্যে পরিণত হলো। অবশ্য বঙ্গীয় জনতা যথারীতি সবকিছু একটু দেরিতেই বুঝে থাকে।

সত্য যখন অকাট্য হয়ে উঠলো অর্থাৎ জনতা যখন সে সত্য বুঝতে শুরু করলো তখন বুদ্ধিজীবীরাও পালে হাওয়া পেলেন এবং জোরে-সোরে মন্ত্রী বদলাবার পরমর্শ ও সে পরামর্শের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে শুরু করলেন। স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, বাণিজ্য, এর পর অর্থ, তারপর যোগাযোগ- এদের গোলোযোগে সরকারের ভাবমুর্তি যখন স্বভাবমুর্তিতে (মানে প্রাণহীন জড় পদার্থ) পরিণত হলো তখন কারো মুখেই আর পর্দা রইলো না। টিভি টক শোতে, সংবাদপত্রে এদের সারাও বলে সোরগোল উঠে গেল। কিন্তু কী দুঃখের বিষয়, এই সোরগোলে সোরগোলকারীদের কান ঝালাপালা হয়ে গেলেও সরকার মানে প্রধানমন্ত্রী সামান্যও কর্ণপাত করলেন না। তিনি রয়েগেলেন ত-থৈ-ব-চ।

তিন বছর বাদে অবশেষে একটা পরিবর্তন হলো, মানে পর্বত মুষিক প্রসব করলো। দুজন নতুন পাত্র সভায় যুক্ত হলেন আর একজন হলেন হাফ থেকে ফুল (not fool)। পুরাতন দুই নতুন মন্ত্রীকে পুনর্বাসন করতে গিয়ে দুটি নতুন মন্ত্রণালয় হলো এবং গোলোযোগকারী মন্ত্রীদের দুজন নতুন আইডি কার্ড পেলেন। আবুলমন্ত্রী যোগাযোগ, সরি যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল সাহেব গাড়ি নিয়ে খাদে পড়েও বলেছেন রাস্তাতো ঠিকই আছে। আর এখন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে গিয়ে কী যে বলে বসেন তা নিয়েই জাতি শংকায় আছে। অপরজন, মানে আবুল ফারুক বাজার নিয়ে যা করেছেন আর বলেছেন তা যদি বিমান নিয়ে করা শুরু করেন তবে বাংলাদেশ বিমানকে জাদুঘরে পাঠানো ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে বলে মনে হয় না।

এমন পরিবর্তনে অনেক সংবাদপত্র বেজায় খুশি। তারা এটাকে প্রধানমন্ত্রীর চমক বলে গুণকীর্তন করছেন। সামনে আরো চমক আছে বলে আগাম জানিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু কথা হলো, এতো বলে কয়ে এটুকু পরিবর্তন যখন হলো তখন সেটা চমক হলো কোথায়! চমক মানে অপ্রত্যাশিত কিছু। এটা কী অপ্রত্যাশিত? নাকি জনগণ ও বুদ্ধিজীবীদের চাপে বহুল প্রত্যাশিত এবং তাও আবার আংশিক। সুতরাং বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করার ভার পাঠকেরই।

দৃষ্টি আকর্ষণ: জনাব সৈয়দ আশরাফ, দেখুন তো এ লেখায় কোন অশ্লীলতা আছে নাকি। খুঁজে বের করতে পারলে আপনাকে ১০০ টাকার প্রাইজবন্ড পুরস্কার দেয়া হবে।