বিগত নির্বাচনে জয়ী হবার খায়েশে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব যে মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে ছিল তা এখন জনগণের কাছে দৃশ্যমান। অর্থনৈতিক বৈষম্য, সামাজিক অস্থিরতায় ছেয়ে গেছে আজকের সমাজ ব্যবস্থা। সমাজের রন্ধে রন্ধে প্রবেশ করেছে অনৈতিকতা, পাপাচার ও মিথ্যাচার।
১০ টাকা কেজি চাল, ফ্রি সার, ঘরে ঘরে চাকুরী ইত্যাদি কথার ফুলঝুরি ঝরতো যে আওয়ামী লীগের মুখে, সেই আওয়ামী লীগই পরবর্তীতে তা অস্বীকার করেছে।
আজকাল তাদের মন্ত্রীদের মুখে শোনা যায় টিপাইমুখে বাধ হলে বাংলাদেশের কোন ক্ষতি হবে না ইত্যাদি কথা। অথচ ফারাক্কা বাধের কারণে উত্তরবংগে যে পরিবেশগত বিপর্যয় ঘটেছে তা নিয়ে আওয়ামী লীগের কোন বক্তব্য নেই। বরং ভারত তোষণ নীতির পদলেহনেই এদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তি প্রোথিত।
ট্রানজিট, ট্রানশিপমেন্ট ইত্যাদিকে কানেকটিভিটির নামে পার্শ্ববর্তী দেশকে এক তরফা সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, সরকার প্রধানের ভারত সফরে ৫০ দফা যে স্মারক চুক্তির কথা বলা হচ্ছে তার বিস্তারিত কিছুই জানা যায়নি কিংবা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও বিষয়টি রাখা হয়নি। এহেন দেশবিরোধী চুক্তি মানতে জনগন বাধ্য নয়।
ভারতের আভ্যন্তরীন সমস্যা নিয়ন্ত্রণের নামে বাংলাদেশকে জংগীবাদ রাষ্ট্রের তকমা লাগানোর জন্যে এরা মরিয়া। একাজে নগ্নভাবে আজকের দেশদ্রোহী আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে। সীমান্তে ফেলানীসহ নির্বিচারে নৃংশসভাবে মানুষ হত্যার পরেও নিশ্চুপ থেকেছে আওয়ামী সরকার।
দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্ররূপে চিহ্নিত করার লক্ষ্যে দেশের বিচার বিভাগ, সেনাবাহিনী, ইসি প্রায় সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধবংস করার কূটকৌশলে লিপ্ত আওয়ামী লীগ।
বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি কিংবা জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমেও সরকার উদাসীন, বরং কিভাবে বিদ্যুৎ খাত ভারতীয় ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেওয়া যায়, তার ট্রায়ালে দিচ্ছে বিভিন্ন আওয়ামী বুদ্ধিজীবীরা। টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা নব্য ইস্ট ইন্ডিয়ান কোম্পানী এয়ার-টেলকে দেওয়া হয়েছে অতি সূক্ষ্মভাবে। দেশের তরুন বা ছাত্র সমাজ যেন এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় না হতে পারে তার যথাযথ ঔষধ এখন তৈরীঃ ড্রাগ, অপসংস্কৃতির গান-বাজনা, আকাশ সংস্কৃতি, ইয়াবা সংস্কৃতি ইত্যাদি আধুনিকতার নামে দেশীয় সংস্কৃতির কাঠামো ভেংগে দেওয়া হচ্ছে। আইন-শৃংখলার অবনতি, গুম, হত্যার ছড়াছড়ি, বিচার বিভাগে দলীয়করন, ছাত্রলীগের সীমাহীন টেন্ডারবাজী ইত্যাদি আজ সরকারকে দেওলিয়া করে দিয়েছে।
ক্ষমতা আকড়ে ধরে রাখার কৌশলে সংবিধানে পরিবর্তন এনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা বা কাঠামোকে তুলে দিয়ে নিজেদের অধীনে নির্বাচন করার দিকে অগ্রসর হচ্ছে সরকার। এই জাতীয় অপকর্ম দেশের জনগন মানতে রাজী নয়। কাজেই আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায় সরকারের অধীনে হতে হবে এবং এই ফ্যাসিবাদ সরকার অপসারন করতে হবে।