কারখানা খুলেছে, ফিরছে শ্রমিকরাও

বিডিনিউজ২৪
Published : 21 June 2012, 05:29 AM
Updated : 21 June 2012, 05:29 AM

ঢাকা, জুন ২১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- শ্রমিক অসন্তোষের কারণে চার দিন বন্ধ থাকার পর সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের সব পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে।

শিল্প পুলিশের আশুলিয়া জোনের উপ পরিচালক ফয়েজুল কবীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে কারখানাগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকরা ফিরে শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন। কোথাও কোনো সমস্যার খবর আমরা পাইনি।"

আশুলিয়া এলাকায় 'পর্যাপ্ত' সংখ্যক পুলিশ রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বুধবার শ্রমমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকে শিল্প মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতারা কারখানা খুলে দিতে সম্মত হন।

বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, "কাল থেকে সব কারখানা খোলা থাকবে। এজন্য মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। তারা সব কারখানা খুলে দেওয়ার ব্যাপারে তাদের সম্মতি দিয়েছে।"

শ্রমিকদেরও শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিজিএমইএ সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনও একই কথা জানিয়ে বলেন, "সরকারের সঙ্গে আলোচনা এবং নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাসে আমাদের মধ্যে আস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য আমরা কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"

বেতন বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভে গত ১১ জুন থেকে অস্থিরতার পর গত শনিবার আশুলিয়ার সব কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেয় বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। ফলে আশুলিয়ার প্রায় সাড়ে তিনশ পোশাক কারখানার সাড়ে ৪ লাখ থেকে ৫ লাখ শ্রমিক অনিশ্চয়তায় পড়ে।

মালিকপক্ষ চার দিন বন্ধ রাখলেও তার আগের চার কার্যদিবসেও বিক্ষোভ- সংঘর্ষের কারণে আশুলিয়ার পোশাক কারখানাগুলোতে কোনো কাজ হয়নি।

শ্রমিকদের মজুরি বা বেতন বাড়ানোর দাবি প্রসঙ্গে বুধবারের বৈঠকে শ্রমমন্ত্রী বলেন, "এ সংক্রান্ত কোনো যৌক্তিক সুনির্দিষ্ট দাবি বা প্রস্তাব এখনো সরকারের কাছে আসেনি। তাদের কোনো যৌক্তিক দাবি না পাওয়ায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে কোনো যৌক্তিক দাবি পেলে সরকার এ ব্যাপারেও পদক্ষেপ নেবে।"

মন্ত্রীর সঙ্গে শিল্প মালিকদের বৈঠকের ঠিক আগে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

ওই বৈঠকে দ্রব্যমূল্য, বাড়িভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরে বেতন বাড়ানোর দাবি জানান শ্রমিক নেতারা।

খাদ্য সামগ্রীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য এবং বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির কথা শ্রমমন্ত্রীও স্বীকার করেন।

তিনি বলেন, "খাদ্য সামগ্রীসহ নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে প্রধানমন্ত্রী এ খাতের শ্রমিকদের রেশনের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন। শিগগরিই রেশনের ব্যবস্থা করা হবে। পরবর্তীতে অন্য বিষয়গুলোও সরকার দেখবে।"

বাসা ভাড়া বৃদ্ধিকে অযৌক্তিক উল্লেখ করে খোন্দকার মোশাররফ বলেন, যাতায়াত ও বাসা ভাড়া বৃদ্ধি শ্রমিকদের জন্য বড় সমস্যা। বছরে কয়েকবার অযৌক্তিকভাবে বাসা ভাড়া বাড়ছে। এটা কাম্য নয়।

এজন্য বাসা ভাড়া সংক্রান্ত আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বিজিএমইএ সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বেতন বাড়ানোর দাবি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, "এখনো এমন কোনো দাবি সরকার বা মালিকপক্ষের কাছে আসেনি। এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

আন্দোলনরত শ্রমিকদের শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, "সরকার আগেও কোনো অযৌক্তিক বিশৃঙ্খলা বা উস্কানি মেনে নেয়নি। ভবিষ্যতেও মেনে নেওয়া হবে না।"

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/এমকে/জেকে/০৯২০ ঘ.