ঢাকা, জুন ২৪ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- সাংবাদিক দম্পতি হত্যার ঘটনায় এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে কর্মসূচি ঘোষণার দাবি নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।
সাংবাদিক মেহেরুন রুনি ও সাগর সরওয়ারের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে এ ঘটনা ঘটে।
মানববন্ধন শুরুর পর ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির মৃত্যুর জন্য এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানকে দায়ী করে তার কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণার দাবি জানান।
তিনি বলেন, "সাংবাদিক সাগর-রুনির মৃত্যুর জন্য এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান দায়ী। তার কার্যালয় ঘেরাও করার কর্মসূচি ঘোষণা করার দাবি জানাচ্ছি।"
তার বক্তব্য শেষ করার পর এটিএন বাংলার বিশেষ প্রতিনিধি শওকত মিল্টন তেড়ে গিয়ে বলেন, "কর্মসূচি ঘোষণা করার আপনি কে?"
এ সময় মিল্টন ও এটিএন বাংলার অন্য সাংবাদিকদের সঙ্গে জাহাঙ্গীর আলমের হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীর দৌঁড়ে প্রেসক্লাবের ভেতরে চলে যেতে চাইলে ধাওয়া করে তার ওপর চড়াও হন মিল্টন, জ ই মামুনসহ এটিএন বাংলার অন্য সাংবাদিকরা।
জাহাঙ্গীর পরে প্রেসক্লাবের ভেতরে গিয়ে অন্য সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে এটিএন বাংলার কর্মীদের পাল্টা ধাওয়া করেন। এরপর ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরীর নেতৃত্বে সাংবাদিক নেতাদের চেষ্টায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
সাংবাদিকদের চারটি সংগঠনের আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, "আমরা সাগর রুনিসহ সব সাংবাদিকদের হত্যা নির্যাতনের বিচারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু আজকের এ ঘটনা সাংবাদিকদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করেছে। একটি কুচক্রি মহল বিভেদ তৈরিতে কাজ করছে।"
হত্যাকাণ্ডের চার মাসেও তদন্তের কোনো সুরাহা না হওয়ার মধ্যে সম্প্রতি মাহফুজুর রহমান লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে বলেন, সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি পরকীয়ার বলি।
নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মী রুনি এবং তার স্বামী সাগরের সম্পর্কে এই মন্তব্যে সাংবাদিক মহলে নিন্দার ঝড় ওঠে। তাকে গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদের দাবি তোলে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো।
সাংবাদিকদের দাবির মুখে এটিএন বাংলা কার্যালয়ে গিয়ে একটি সিডি এবং কিছু ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে র্যাব।
সমালোচনার মুখে পরে একটি বিবৃতি পাঠিয়ে মাহফুজুর বলেন, ওই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত না হওয়ার 'মনোবেদনা' থেকে তিনি 'সরল বিশ্বাসে' কিছু কথা বলেছিলেন।
মানববন্ধনে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের নেতারা অংশ নেন।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে নিজের বাসায় খুন হন সাগর ও রুনি। এরপর প্রায় চার মাসেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমএমআর/আরএ/জেকে/১৪৩০ ঘ.