ঢাকা, অগাস্ট ১৩ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করে জিপিএর ভিত্তিতে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোতে ভর্তির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক অবরোধ করেছে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা।
এতে পুরানা পল্টন থেকে শাহবাগ ও হাই কোর্টের দিকে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী সোমবার বেলা সাড়ে ৩টা থেকে সড়কে অবস্থান নিয়ে আছে। এর আগে সকাল ১০টার দিকে শহীদ মিনারের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে আন্দোলনকারী এই শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত তারা অবস্থান ধর্মঘটও পালন করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী জাইন জায়েদ বলেন, বিকালে ভর্তিতে পরীক্ষা পদ্ধতি পুনর্বহালের দাবিতে সচিবালয়ে স্মারকলিপি দিতে গেলে পুলিশ বাধা দেওয়ায় সড়ক অবরোধ করা হয়।
জাইন বলেন, "গত বছর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েটে) ভর্তির সুযোগ পেয়েও ভর্তি হইনি। মেডিকেলে পড়ার জন্য এক বছর ধরে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছি। কিন্তু এখন ভর্তি পরীক্ষা না নিলে কোথাও ভর্তি হতে পারব না।"
রোববার এক সভার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক জানান, মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য চলতি বছর থেকে আর ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে না। এখন থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের জিপিএর ভিত্তিতেই এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।
আবেদনের জন্য দুই পরীক্ষা মিলিয়ে অন্তত ৮ জিপিএ থাকার শর্তের কথা জানান তিনি।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সৈকত মাহমুদ বলেন, "পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রহসনমূলক। এ সিদ্ধান্ত নিলে তা এক বছর আগেই নেওয়া উচিত ছিল।"
গত বছর মেডিকেলে ভর্তি হতে না পেরে এবার ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, "এখন আমাকে ভর্তির জন্য পরীক্ষায় অংশ নিতে না দিলে আমি কোথায় যাব? বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি না নিয়ে মেডিকেলের জন্য লেখাপড়া করেছি। এখন আমার শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।"
আরেক শিক্ষার্থী ফেরদৌসী আরা বলেন, "অন্তত সাত হাজার শিক্ষার্থীর এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ ৫ করে রয়েছে। তাদের মধ্য থেকেই ভর্তির জন্য বাছাই করা হবে। যাদের জিপিএ একটু কম, তারা তাহলে কী করবে? ভর্তি পরীক্ষার সময় কাছাকাছি চলে এসেছে। তাই এখন তো আর বুয়েট বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি নেওয়া যাবে না।"
ফেরদৌসী বলেন, এসএসসি ও এইচএসসিতে ভালো ফলের জন্য পাঠ্য বইয়ের নির্দিষ্ট কিছু অংশ ভালোভাবে পড়লেই হয়। কিন্তু মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ভাল করার জন্য পুরো বই পড়তে হয়।
"তাই আমাদের মেধা যাচাইয়ের সুযোগ দেওয়ার জন্য ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হোক।"
আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে। ান্য বছর মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষাও কাছাকাছি সময়ে হয়ে থাকে। গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর সারাদেশে একযোগে সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা হয়।
বাংলাদেশের সবগুলো মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ মিলিয়ে মোট ৮ হাজার ৪৯৩টি আসন রয়েছে।
এর মধ্যে ২২টি সরকারি মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা ২ হাজার ৮১১টি। আর ৫৩টি বেসরকারি মেডিকেলে ৪ হাজার ২৪৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ রয়েছে।
এছাড়া ৯টি 'পাবলিক' ডেন্টাল কলেজ ও মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে ৫৬৭টি আসন রয়েছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/এএইচএ/এএইচ/জেকে/এমআই/১৭২৫ ঘ.