বৃক্ষরোপণ: প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার পাচ্ছে ৪৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান

বিডিনিউজ২৪
Published : 31 May 2011, 04:58 PM
Updated : 31 May 2011, 04:58 PM

মহসীনুল করিম
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

ঢাকা, মে ৩১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- বৃক্ষরোপণে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এবার প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে ৪৮ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে।

ইতোমধ্যেই ১৬টি ক্যাটাগরিতে ৪৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নাম চূড়ান্ত করে তার গেজেট মূদ্রণ সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার এটি প্রকাশ করা হবে।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বুধবার জাতীয় বৃক্ষরোপণ আন্দোলন ও বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেবেন।

পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এ কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, জাতীয় বা স্থানীয় পর্যায়ে বৃক্ষরোপণ আন্দোলন সফল করতে যারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের নিজ হাতে পুরস্কৃত করবেন। এজন্য জাতীয় বৃক্ষরোপণ আন্দোলন ও বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তাদের হাতে পুরস্কারের অর্থের চেক তুলে দেবেন।

প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণের জন্য ১৬টি ক্যাটাগরির প্রত্যেকটিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীদের পুরস্কৃত করা হবে। প্রথম পুরস্কার ২০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ১৫ হাজার টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার ১০ হাজার টাকা। এছাড়া একটি করে সনদ ও ক্রেস্ট দেওয়া হবে পুরস্কার বিজয়ীদের।

সরকারি গেজেট পর্যালোচনায় দেখা যায়, ৪৮টি পুরস্কারের মধ্যে খুলনা বিভাগ ২৫টি, চট্টগ্রাম বিভাগ সাতটি, রাজশাহী বিভাগ পাঁচটি, বরিশাল চারটি, রংপুর তিনটি এবং ঢাকা ও সিলেট বিভাগ দু'টি করে পুরস্কার পেয়েছে।

খুলনার ২৫টির মধ্যে প্রথম পুস্কার ১২টি, দ্বিতীয় নয়টি ও তৃতীয় চারটি। চট্টগ্রামের সাতটির মধ্যে প্রথম একটি, দ্বিতীয় দু'টি ও তৃতীয় চারটি। রাজশাহীর পাঁচটির মধ্যে প্রথম দু'টি, দ্বিতীয় দু'টি ও তৃতীয় একটি। বরিশালের চারটির মধ্যে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দু'টি করে। রংপুরের তিনটির মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় একটি করে। ঢাকা ও সিলেট তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে দু'টি করে।

প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এবতেদায়ী মাদ্রাসা ক্যাটাগরিতে ঝিনাইদহ কালিগঞ্জের জেএসপি কারিগরি এতিমখানা প্রথম, বাগেরহাটের চিতলমারির দারুল উলুম চিতলমারি মাদ্রাসা দ্বিতীয় ও চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির জুজখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে।

উচ্চ বিদ্যালয় ও সিনিয়র মাদ্রাসা ক্যাটাগরিতে বাগেরহাটের মোল্লারহাটের উদয়পুর জামিয়া হালিমিয়া মাদ্রাসা প্রথম, মাগুরা মহম্মদপুরের ঘুল্লিয়া দাখিল মাদ্রাসা দ্বিতীয় ও সাতক্ষীরা কালিগঞ্জের ডা. মুজিব রুবি মডেল হাইস্কুল তৃতীয় স্থান অর্জন করে।

বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও মহিলা কলেজ ক্যাটাগরিতে খুলনার ফুলতলা ডিগ্রী মহিলা কলেজ প্রথম, কুষ্টিয়ার সরকারি মহিলা কলেজ দ্বিতীয় ও চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির নারায়ণহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় তৃতীয় পুরস্কার পায়।

কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাটাগরিতে কুষ্টিয়ার কুমারখারী কলেজ প্রথম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ দ্বিতীয় ও মাগুরা শ্রীপুরের জিকে আইডিয়াল ডিগ্রী কলেজ তৃতীয় হয়েছে।

মসজিদ, মন্দির ও গির্জাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গোরস্থান মসজিদ প্রথম, ঝিনাইদহের শৈলকুপার কুশাবাড়িয়া জামে মসজিদ দ্বিতীয় ও মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গলের গাজীপুর জামে মসজিদ তৃতীয় পুস্কার পেয়েছে।

জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ ক্যাটাগরিতে চুয়াডাঙ্গার তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদ প্রথম, রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ দ্বিতীয় ও চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা পরিষদ তৃতীয় হয়েছে।

পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন ক্যাটাগরিতে মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভা প্রথম, কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌরসভা দ্বিতীয় ও একই জেলার ভেড়ামারা পৌরসভা তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে।

অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, সেক্টর, কর্পোরেশন ও প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির হালদাভ্যালী চা বাগান প্রথম, একই উপজেলার মির্জারহাট পঞ্চবটি চা বাগান দ্বিতীয় ও পিরোজপুরের নাজিরপুরের দি রাজলক্ষী শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ফাউণ্ডেশন তৃতীয় স্থান অর্জন করে।

বেসরকারি সংস্থা (এনজিও), ক্লাব ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ক্যাটাগরিতে কুষ্টিয়ার শিমুলিয়ার মহল্লা আর্থ-সামাজিক নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থা প্রথম, চাঁপাই-নবাবগঞ্জের মহারাজপুরের মহানন্দা সমাজকল্যাণ সংস্থা দ্বিতীয় ও গাইবান্ধা পলাশবাড়ির আমন্ত্রণ সংঘ তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে।

ব্যক্তিপর্যায়ে বৃক্ষরোপণ ক্যাটাগরিতে মাগুরার মহম্মদপুরের নাজনিন সুলতানা প্রথম, যশোরের বাঘারপাড়ার আসমা বেগম দ্বিতীয় ও বরিশালের মুলাদির লাভলী রিনা তৃতীয় পুরস্কার পান।

ব্যক্তি মালিকানার নার্সারি ক্যাটাগরিতে সাতক্ষীরা সদরের বিশ্বাস হাইব্রিড নার্সারি প্রথম, খুলনা ফুলতলার বেজের ডাঙ্গা গ্রামের দেশ উন্নয়ন নার্সারি দ্বিতীয় ও ঢাকার আশুলিয়ার গোরিপুর গ্রামের বন্ধু নার্সারি তৃতীয় হয়েছে।

বাড়ির ছাদে বাগান ক্যাটাগরিতে কুড়িগ্রামের আরকে রোডের চৌধুরী আফরোজ জাহান প্রথম, সাতক্ষীরার পুরাতন সাতক্ষীরার নূরুল আমিন দ্বিতীয় এবং ময়মনসিংহের কাঁচিঝুলির আনিছুর রহমান ও রুবানা নাজনীন তৃতীয় পুস্কার পেয়েছেন।

বাগান সৃষ্টিতে বনবিভাগ ক্যাটাগরিতে রাজশাহীর পাইকবান্ধা রেঞ্জের ধামইরহাট ফরেস্ট বিট অফিস প্রথম, যশোর রেঞ্জের মাগুরার সামাজিক বনায়ন নার্সারি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দ্বিতীয় ও সিলেট বনবিভাগের জাফলং বিটের উত্তর সিলেট রেঞ্জ-২ তৃতীয় স্থান অর্জন করে।

বনায়নে জনপ্রতিনিধিদের বিশেষ অবদান ক্যাটাগরিতে নাটোর-৩ আসনের সাংসদ জুনায়েদ আহমেদ পলক প্রথম, বরিশালের হিজলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ টিপু দ্বিতীয় ও বান্দরবান পৌরসভার কাউন্সিলর মং হ্নৈ চিং তৃতীয় স্থান অর্জন করেন।

শ্রেষ্ঠ নারিকেল বাগান সৃষ্টির জন্য যশোরের বাঘারপাড়ার জামদিয়া গ্রামের রহিমা খাতুন প্রথম ও পিরোজপুর কাউখালীর আমড়াজুড়ির মুক্তা রেজা দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন। আর তৃতীয় হয়েছে নাটোরের সিংড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।

কবরস্থান, শ্মশানঘাট ও সিমেট্রিতে বাগান সৃষ্টি ক্যাটাগরিতে মাগুরার পারনান্দুয়ারী গোরস্থান প্রথম, রাজশাহীর বাঘার পাংশিপাড়া সুলতানপুর গোরস্থান দ্বিতীয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম কৈয়া বৌদ্ধ শ্মশান তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমকে/এইচএ/২১৪৮ ঘ.