‘প্রাণ’ ফিরে পাচ্ছে বুড়িগঙ্গা

বিডিনিউজ২৪
Published : 1 August 2011, 03:38 AM
Updated : 1 August 2011, 03:38 AM

মহসীনুল করিম
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

ঢাকা, অগাস্ট ০১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- দীর্ঘদিন পর বুড়িগঙ্গার পানি আবারো প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। এ নদীর পানিতে সম্প্রতি দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়তে শুরু করেছে।

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সা¤প্রতিক এক পরীক্ষায় দেখা গেছে, বুড়িগঙ্গার প্রতি লিটার পানিতে এক মিলিগ্রামের ওপর অক্সিজেনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। কোনো কোনো অংশে অক্সিজেনের উপস্থিতি দুই মিলিগ্রামেরও বেশি।

দূষণকবলিত বুড়িগঙ্গার পানিতে অক্সিজেনের উপস্থিতি এক সময় শূন্যের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল।

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বুড়িগঙ্গার তলদেশ থেকে পলিথিন অপসারণ এবং বর্জ্য ফেলা বন্ধের বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরও তা অব্যাহত থাকে। একইসঙ্গে এ নদীর পানি দূষণমুক্ত করতে কয়েকটি প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে ইতোমধ্যে।

পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত বছরও বুড়িগঙ্গার প্রতি লিটার পানিতে দ্রবিভূত অক্সিজেনের পরিমাণ ছিল শূন্য মিলিগ্রাম। সরকার নদীর তলদেশ থেকে পলিথিন অপসারণসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ায় অক্সিজেনের উপস্থিতি বাড়তে শুরু করেছে।

"প্রয়োজনীয় অক্সিজেন না থাকায় বুড়িগঙ্গা মাছেরও বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। ফলে মাছশূন্য হয়ে পড়ে এ নদী।"

পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সুকুমার রায় জানান, প্রাণী বা জীব বসবাসের জন্য প্রতি লিটার পানিতে সর্বনিু সাড়ে চার থেকে সাড়ে আট মিলিগ্রাম অক্সিজেন প্রয়োজন হয়।

"সা¤প্রতিক পরীক্ষার ফল দেখে মনে হচ্ছে এ নদী আসার প্রাণ ফিরে পাচ্ছে," যোগ করেন তিনি।

বুড়িগঙ্গার অস্তিত্ব রক্ষায় সরকারের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ জানান, মৃতপ্রায় বুড়িগঙ্গাসহ ঢাকার আশেপাশের চার নদী- তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদী রক্ষায় দুশ কোটি টাকার মহাপরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিল থেকে।

এই মহাপরিকল্পনার আওতায় পানি দূষণ কমাতে যমুনা থেকে পানি এনে বুড়িগঙ্গায় ছাড়া (ফ্ল্যাশ), নদীর বুকে জমে থাকা পলিথিন ও বর্জ্য অপসারণ, নদী খনন, সীমানা পিলার স্থাপন, পাড় বাঁধাই, নদী তীর দিয়ে হাঁটাপথ নির্মাণ এবং ঢাকার চারপাশে বৃত্তাকার নৌপথ গড়ে তোলা হবে।

ঢাকা ঘিরে নৌপথ চালুর যৌক্তিকতা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে নৌপথে দৈনিক ১০ হাজার টন পণ্য পরিবহন হচ্ছে। সড়কপথে এই পরিমাণ পণ্য পরিবহণে প্রায় এক হাজার ট্রাকের প্রয়োজন হতো- যা রাজধানীর সড়কগুলোর ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করতো। এতে যানজট আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করতো।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমকে/পিডি/জেকে/২০৫৮ ঘ.