শান্তি ফিরছে লন্ডনে

বিডিনিউজ২৪
Published : 10 August 2011, 09:33 AM
Updated : 10 August 2011, 09:33 AM

লন্ডন, অগাস্ট ১০ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/রয়টার্স)- তিনরাত ধরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের পর শান্ত হয়ে আসছে লন্ডনের পরিস্থিতি। লন্ডনের বাইরে অন্যান্য শহরের পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। শহরগুলোর বিপনীবিতানগুলোতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের পর রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কারে নেমেছে কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার রাতেই লন্ডনের পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত হয়ে আসে। টানা তৃতীয় দিনের মতো সহিংসতা ও লুটপাটের পর প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের নির্দেশে মঙ্গলবার ১৬ হাজার পুলিশ নেমেছে লন্ডনের রাস্তায়। ভাংচুর ও দাঙ্গায় জড়িতদের দ্রুত বিচার করা হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

আগের তিনদিন কার্যত অরক্ষিত থাকার পর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের শিকার এলাকাগুলোতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নজিরবিহীন এ পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন গ্রীষ্মকালীন অবকাশ সংক্ষিপ্ত করে ইতালি থেকে দেশে ফিরে পুলিশের সব ছুটিও বাতিল করেছেন ।

মঙ্গলবার লন্ডন ছাড়াও বার্মিংহ্যাম, ব্রিস্টল, লিভারপুল ও নটিংহ্যামে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশন ডাকেন ক্যামেরন। বুধবার সরকারের সংকট কমিটি 'কোবরা'র সাথে দ্বিতীয় বারের মতো বৈঠকে বসবেন ক্যামেরন।

ছুটি সংক্ষেপ করে জরুরি ভিত্তিতে লন্ডনে ফিরেছেন বিশ্বের ব্যস্ততম শহর লন্ডনের মেয়র বরিস জনসন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টেরেসা মেসহ মন্ত্রিসভার আরো কয়েকজন সদস্য।

যুক্তরাজ্যে অগাস্ট হচ্ছে ছুটির মাস। ২০০২ সালের পর এই প্রথমবারের মতো গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে দেশটিতে পার্লামেন্ট অধিবেশন ডাকা হলো।

লন্ডনের অরাজক পরিস্থিতির কারণে এবং পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ার আশংকায় পূর্বনির্ধারিত ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে বুধবারের ইংল্যান্ড- নেদারল্যান্ডস প্রীতি ফুটবল ম্যাচ বাতিল করা হয়। এছাড়া আরো তিনটি ক্লাব ম্যাচ স্থগিত করা হয়।

২০১২ সালের বিশ্ব অলিম্পিকের আয়োজক শহর লন্ডন। ওই মহাআয়োজনের মাত্র এক বছর আগে এ ধরনের সহিংসতা ও লুটপাটের ঘটনায় স্বাগতিক শহর হিসেবে লন্ডনের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তবে লন্ডনের আয়োজক কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, এ ঘটনা অলিম্পিকের প্রস্তুতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না।

এদিকে সহিংসতার সময় গুলিতে আহত একজন যুবক মঙ্গলবার হাসপাতালে মারা গেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নিরাপত্তা প্রধানদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন ক্যামেরন। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, দাঙ্গায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে যে কোনো মূল্যে।

গত বৃহস্পতিবার পুলিশের গুলিতে মার্ক ডুগান নামের ২৯ বছর বয়সী একজন কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের মৃত্যুর ঘটনার জের ধরে এই সহিংসতার শুরু। বিক্ষুব্ধ জনতা শনিবার সন্ধ্যায় লন্ডনের টটেনহামে ডুগানের মৃত্যুর প্রতিবাদ জানাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে।

একপর্যায়ে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে লন্ডনের বিভিন্ন স্থানে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। জনতা গাড়ি ও বিভিন্ন ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ব্যাপক লুটপাট চালায়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসএনপি/জেকে/এবি/সিআর/১৩২৩ ঘ.