তিস্তার ডুবোচরে আটকালো ট্রানজিট

বিডিনিউজ২৪
Published : 6 Sept 2011, 06:51 PM
Updated : 6 Sept 2011, 06:51 PM

শাহরিয়ার জামান
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

ঢাকা, সেপ্টেম্বর ০৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- সম্পর্কে অগ্রগতির আনুষ্ঠানিক দাবি থাকলেও ভারতীয় আলোচিত তিস্তা নদীর পানির হিস্যা ও ট্রানজিট নিয়ে লিখিত কোনো রফা হয়নি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরে।

তবে ঢাকার ৬১টি শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের দাবির মধ্যে ৪৬টি গার্মেন পণ্যকে শুল্ক ছাড়াই ভারতে প্রবেশ করতে দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন মনমোহন সিং। তিন বিঘা করিডোর দিয়ে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে ছিটমহল দহগ্রাম ও আঙ্গর পোতায় নিরবচ্ছিন্ন যাতায়াত করতে দেওয়ার ঘোষণাও দেন তিনি।

প্রতীক্ষিত চুক্তি না হলেও মনমোহন সিং বলেছেন, "উভয় দেশের কাছে গ্রহণযোগ্য, ন্যায্য ও বন্ধুত্বপূর্ণ উপায়ে তিস্তা ও ফেনী নদীর পানিবণ্টনে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।"

মঙ্গলবার বাংলাদেশ-ভারত শীর্ষ বৈঠকের পর এ কথা বলেন তিনি।

দুই দেশের শীর্ষ বৈঠকের পর মঙ্গলবার স্বাক্ষরিত হয়েছে নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতার একটি চুক্তি, একটি প্রটোকল ও আটটি সমঝোতা স্মারক।

তিস্তা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে আলোচিত চুক্তির প্রধান অংশীদার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের হঠাৎ ঢাকা সফর বাতিল থেকে মনমোহনের প্রথম দ্বিপক্ষীয় এই সফর ঘিরে কালো মেঘ জমতে থাকে।

এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপুমণি সোমবার রাতেও সাংবাদিকদের বলেন, চুক্তি হচ্ছে।

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর অন্যতম সফরসঙ্গী পানিসম্পদমন্ত্রী পবন কুমার বানসাল মঙ্গলবার মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে না আসায় মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায় যে, চুক্তি হচ্ছে না।

এদিন সকালে ভারতীয় হাইকমিশনার রাজীত মিত্রকে ডেকে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রসচিব মোহাম্মদ মিজারুল কায়েস।

বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রের বরাত দিয়ে বিভিন্ন টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, তিস্তা চুক্তি না হলে ট্রানজিটের আলোচনায় বাংলাদেশ আগ্রহী নয়।

রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ট্রানজিট সুবিধা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মনমোহন সিংয়ের সফরে 'সম্মতিপত্র' বিনিময় হবে। এর ভিত্তিতেই ট্রানজিটের আইনি কাঠামো, পরিচালনা পদ্ধতি, প্রটোকলসহ খুঁটিনাটি বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হবে। এছাড়া তিস্তা ও ফেনী নদির পানিবণ্টনসহ তিনটি চুক্তি এবং কয়েকটি প্রটোকল ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।

শেষ পর্যায়ে এসে চুক্তি না হওয়াকে 'হতাশার' বলে মন্তব্য করেন সাবেক কূটনীতিক কিউ এ এম এ রহিম।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, "দুদেশের আস্থার অভাবে ট্রানজিট ও পানিবণ্টন চুক্তি হয়নি।"

সাবেক মন্ত্রী মিজানুর রহমান শেলী বলেন, "বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন বিশেষ করে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন এবং ভারতের স্বার্থ রক্ষায় ট্রানজিট বিষয়ে এ সফরের অন্যতম এজেন্ডা। কিন্তু বাংলাদেশ ভারত কারো স্বার্থ রক্ষা হয়নি।"

ট্রানজিটের সম্মতিপত্র বিনিময় না হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে সরাসরি উত্তর এড়িয়ে যান প্রধানমন্ত্রীর আর্ন্তজাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "আমাদের সম্পর্ক বিশ্বাসের ওপর। এটা না পেলে ওইটা দেবো না আমাদের সম্পর্ক সেরকম না।"

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসএসজেড/জিএনএ/০০৩৭ ঘ.