বাতি ‘জ্বলবে না’ ১৬২ ছিটমহলে

বিডিনিউজ২৪
Published : 9 Sept 2011, 07:06 PM
Updated : 9 Sept 2011, 07:06 PM

পঞ্চগড়, সেপ্টেম্বর ০৯ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- ছিটমহল বিনিময় চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে 'অন্ধকারে থাকার' এক ব্যতিক্রমী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ও ভারতের ছিটমহলের অধিবাসীরা।

শনি ও রোববার সন্ধ্যার পর তারা বাতি না জ্বালিয়ে অন্ধকারে থাকবেন।

শুক্রবার বিকেলে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরি উপজেলার দাশিয়ার চর ছিটমহলে এক সভায় বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি এ সিদ্ধান্ত নেয়।

কর্মসূচির প্রতিক্রিয়া পঞ্চগড়ের অভ্যন্তরে ভারতীয় গারাতি ছিটমহলের ঝারুয়া পাড়া গ্রামের আজিমদ্দিনের স্ত্রী শরিফা বেগম বলেন, "দুইদিন কেনে, যদি নেতালা কহে তাহিলে বাংলাদেশি না হওয়া পর্যন্ত বাড়িত বাতি জ্বালাবানাহি। হামরা আন্ধারের মানষি, আন্ধারোতে রহিমো। এমনিইতো হামরা সবকিছু থেকে বাহিরোত আছি। এইটাইতো অন্ধকারোত থাকা।"

বাংলাদেশের ভেতরে ১১১টি ভারতীয় ছিটমহল এবং ভারতের ভেতরে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল রয়েছে। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের উপস্থিতিতে ঢাকায় স্থলসীমা নিয়ে একটি প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়। এর মাধ্যমে ১৯৭৪ সালের চুক্তির আওতায় ছিটমহল বিনিময় করবে দুই দেশ। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে সাড়ে ৬ কিলোমিটার অচিহ্নিত সীমানা এবং অপদখলীয় ভূমি সমস্যারও সমাধান করা হবে এ প্রটোকলের আওতায়।

তবে প্রটোকলে ছিটমহল বিনিময় বিষয়ে নির্দিষ্ট সময় বা প্রক্রিয়া নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু উল্লেখ নেই- এমন অভিযোগে দুই দেশের ছিটমহলের নাগরিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দেয়। তাদের আশঙ্কা- বিষয়টি আবারো ঝুলে গেছে।

সমন্বয় কমিটির বাংলাদেশ শাখার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মোবাইল ফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "দ্রুত ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে অন্ধকার জীবন থেকে মুক্তি না দিলে এ কর্মসূচি দীর্ঘতর হতে পারে। পাশাপাশি অন্য কর্মসূচিও হাতে নেওয়া হবে।"

বাংলাদেশ ও ভারতের সব ছিটমহলে একযোগে এ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান তিনি।

নানা কারণে আমরণ অনশন কর্মসূচি ব্যাহত হওয়ায় নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সমন্বয় কমিটির কয়েকজন নেতা।

গারাতি ছিটমহলের নাগিরক কমিটির চেয়ারম্যান মফিদার রহমান বলেন, "হেড কাউন্টিং হওয়া ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী আসার খবরে আমরা সবাই আশায় বুক বেঁধেছিলাম এবার মানবেতর জীবন-যাপন থেকে মুক্তি পাবো। এ নিয়ে সবাই উৎসব করার প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন। কিন্তু অস্পষ্ট প্রটোকল স্বাক্ষর সবাইকে হতাশ করেছে।"

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/এএল/২০০৬ ঘ.