ভুয়া লাইসেন্স হয়নি, হবে না: আবুল হোসেন

বিডিনিউজ২৪
Published : 11 Sept 2011, 03:53 PM
Updated : 11 Sept 2011, 03:53 PM

ঢাকা, সেপ্টেম্বর ১১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- এ সরকারের আমলে কোনো ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়নি জানিয়ে যোগাযোগমন্ত্রী বলেছেন, আগামীতেও পরীক্ষা ছাড়া কোনো চালককে লাইসেন্স দেওয়া হবে না।

রোববার রাজধানীতে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের এক বৈঠক শেষে মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

ভুয়া লাইসেন্স প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "বাংলাদেশ ব্যাংক টাকার নোট তৈরি করে বাজারে ছাড়ে। কিন্তু এ টাকাও তো নকল হয়। তা আবার ধরাও পড়ে।"

"তেমনি ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্সধারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে তারা ধরাও পড়ছে, ভবিষ্যতে এ কার্যক্রম আরো জোরদার করা হবে।"

গত ১৩ অগাস্ট এক সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও এটিএন নিউজের প্রধান সম্পাদক আশফাক মুনীরসহ পাঁচজনের মৃত্যুর পর লাইসেন্সহীন বা ভুয়া লাইসেন্সধারী চালকের গাড়ি চালানোর বিষয়টি গণমাধ্যমে আলোচনায় উঠে আসে।

পরীক্ষা ছাড়াই ২৪ হাজার ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে বলে একটি বাংলা দৈনিকে স¤প্রতি প্রকাশিত খবর প্রসঙ্গে যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, "স¤প্রতি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরীক্ষা ছাড়াই ২৪ হাজার ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে। এ কথা ঠিক নয়। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা এবং নিয়মের বাইরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কোন ধরনের ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করেনি।"

"অবৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স বন্ধ করার লক্ষ্যে ডিজিটাল স্মার্ট কার্ড ব্যবহারের কাজ শুরু করেছে বিআরটিএ।"

বাংলা দৈনিকটির খবরে বলা হয়, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের চাপে ওই লাইসেন্স দেওয়া হয়। শাজাহান ওই ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি।

নৌমন্ত্রী আবার ২৮ হাজার লোককে একইভাবে পেশাদার ও ভারী যানবাহন চালকের লাইসেন্স দিতে যোগাযোগমন্ত্রীর ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে ওই দৈনিকের আরেকটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এ পরিস্থিতিতে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য তারানা হালিম গত ২০ অগাস্ট ঘোষণা দেন, শাজাহান খানের সুপারিশে অদক্ষ চালকদের লাইসেন্স দেওয়া হলে তিনি আমরণ অনশনে যাবেন।

অদক্ষ চালকদের আর লাইসেন্স দেওয়া হবে না- সর্বশেষ শনিবার যোগাযোগমন্ত্রীর কাছে এ দাবি জানান তারানা হালিম।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, নৌ-পরিবহমন্ত্রী শাজাহান খান, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সড়ক বিভাগের সচিব মো. মোজাম্মেল হক খান, নিরাপদ সড়ক চাই'র (নিসচা) চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক এনায়েতুর রহমান।

'সড়ক আইনের খসড়া দু সপ্তাহে ওয়েবসাইটে'

আব্দুল গণি সড়কে রেলভবনের সম্মেলন কক্ষে নিরাপত্তা কাউন্সিলের ওই সভা শেষে যোগাযোগমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সড়ক পরিবহন ও ট্রাফিক আইন প্রণয়ন করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, "আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এ আইনের খসড়া জনগণ এবং অংশিদারদের মতামত গ্রহণের জন্য যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।"

আগামী জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য সংসদ অধিবেশনে আইন পাশ করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

দেশে বর্তমানে মটর ভেহিকল অর্ডিন্যান্সের (১৯৮৩) আওতায় ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়।

সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার সঠিক পরিসংখ্যান নিয়ে একটি বিভ্রান্তি রয়েছে উল্লেখ করে আবুল হোসেন বলেন, "এ বিভ্রান্তি দূর করতে জেলা পর্যায়ে একটি কমিটি কাজ করবে।"

এ ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে শিগগির প্রজ্ঞাপন জারি হবে বলে জানান তিনি।

আবুল হোসেন বলেন, "জেলা পর্যায়ের ওই কমিটিতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি, পরিবহণ মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধি এবং অন্যান্য অংশিদাররা এ কমিটির সদস্য হবেন।"

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এআরআর/পিডি/১৯১৮ ঘ.