খালেদার সঙ্গে আলোচনা নাকচ হাসিনার

বিডিনিউজ২৪
Published : 26 Sept 2011, 03:03 AM
Updated : 26 Sept 2011, 03:03 AM

নিউইর্য়ক, সেপ্টেম্বর ২৫ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- খালেদা জিয়ার সঙ্গে কোনো আলোচনার বিষয়টি নাকচ করেছেন শেখ হাসিনা। তিনি মনে করেন দেশের জনগণ বিএনপির পক্ষে দাঁড়াবে না।

বিএনপি'র আন্দোলন কখনোই সফল হবে না দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, "দেশের জনগণ দুর্নীতিবাজদের পক্ষে দাঁড়াবে না। কাজেই তারা দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।"

আন্দোলনের নামে জনগণকে কষ্ট না দিতে বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনা না করার বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, "বিএনপি নেত্রীর এখন একটাই দাবি- তার দুর্নীতিগ্রস্ত ছেলেদের মুক্তি। সেই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ এবং দুর্নীতি ও বিদেশে অবৈধভাবে অর্থ পাচারের মামলা প্রত্যাহার। তাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্যও অভিন্ন। তাই তাদের সঙ্গে বৈঠকে কোনো সুফল পাওয়া যাবে বলে আমি মনে করি না।"

নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনের আগে জাতি সংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, "১৯৭৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে প্রথম বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন। আমারও আজ সেই সুযোগ হয়েছে একই দিনে এই বিশ্বসভায় বাংলায় বক্তৃতা করার।"

'নির্বাচনে সবাই আসবে'

১/১১ পরবর্তী বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, "এবারো অনেক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জনগণের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। ভবিষ্যতে কেউ যেন এই অধিকার ছিনিয়ে নিতে না পারে সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।"

তত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচনে বিএনপি যাবে না বলে খালেদা জিয়ার মন্তব্য সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, "সময় আসলে দেশে নির্বাচন হবে এবং ওই নির্বাচনে সব দল অংশ নেবে।"

"নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে। সরকার কখনো নির্বাচন কমিশনের কাজে হস্তক্ষেপ করে না। জনগন যাকে ভোট দেবে সে দল ক্ষমতায় আসবে।"

গত ৩০ জুন সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হয়। এর আগে সুপ্রিম কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ক সংবিধানের একটি সংশোধনী বাতিল করে।

বিএনপি এর বিরোধিতা করে বলেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হলে তারা এতে অংশ নেবে না।

বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের জঙ্গিবাদের বিষয়ে 'জিরো টলারেন্স' নীতি গ্রহণ করার বিষয়টি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, "বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার বাংলাদেশকে একটি জঙ্গিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল।"

আমেরিকার ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা'র দেওয়া ভোজসভায় বারাক ওবামা বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে চান এবং বাংলাদেশে সফরে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ বিমানের ঢাকা থেকে নিউইর্য়ক রুটে পুনরায় ফ্লাইট চালু করায় জোর প্রচেষ্টা চালানোর বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেন।

জাতিসংঘ

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, "জাতিসংঘের কাজ এখন শুধু শান্তি প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আমরা জাতিসংঘকে আরো কার্যকর সংস্থা হিসেবে দেখতে চাই।"

জাতি সংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে 'শান্তির মডেল' বাস্তবায়ন করলেই পৃথিবীতে শান্তি আসবে বলেও মনে করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

তিস্তা চুক্তি

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, "দু'দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রয়েছে। ৫৪টি নদীর পানি ভাগাভাগি নিয়ে দু'দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে।"

তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, "আলোচনা চলছে, তবে কে কতটুকু পানি পাবে তা নির্ধারণ করতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন। এজন্য একটি অন্তর্বতীকালীন চুক্তি করা যায় কি না তা নিয়ে আলাচনা চলছে।"

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/এসইউএম/পিডি/২২৩১ ঘ.