পারসোনা: তদন্ত চাইলেন তথ্য কমিশনার

বিডিনিউজ২৪
Published : 4 Oct 2011, 05:57 PM
Updated : 4 Oct 2011, 05:57 PM

আশিক হোসেন
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদক

ঢাকা, অক্টোবর ০৪ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- জাতীয় তথ্য কমিশনের সদস্য সাদেকা হালিম বলেছেন, বিউটি পারলার পারসোনায় সিসিটিভি ক্যামেরায় ভিডিও ধারণের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত।

মঙ্গলবার তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "কোন স্থানে সিসিটিভি স্থাপন করা যাবে এ বিষয়ে কোনো নীতিমালা নেই। শিগগিরই এ বিষয়ে একটি নীতিমালা করা উচিত।"

তিনি বলেন, "বিউটি পারলার একটি সেনসেটিভ জায়গা। সেখানে সিসিটিভি রাখা হলে গ্রাহককে তা নোটিশের মাধ্যমে জানাতে হবে যে কোন কারণে ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।"

ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত মন্তব্য করে জাতীয় তথ্য কমিশনের কমিশনার সাদেকা বলেন, "ঢাকা শহরে তথাকথিত যেসব পারলার আছে সেসব স্থানে কী হচ্ছে তাও খতিয়ে দেখা দরকার।"

গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে বনানীর ১১ নম্বর সড়কের পারসোনা বিউটি পার্লারে 'স্পা' করাতে যান একজন নারী চিকিৎসক। সেখানে একটি কক্ষে তিনি পোশাক পরিবর্তনের পরে কক্ষে সিসিটিভি দেখতে পান।

ভিডিও করার জন্য তিনি পারসোনা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পুলিশ ও সংবাদ মাধ্যমে মৌখিক অভিযোগ আনেন। তিনি তার স্বামীকে খবর দেন। স্বামী এলে সেখানে ব্যাপক হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ঘটনায় তারা কোনো মামলা করবেন না বলেছেন ওই দম্পতি।

ওই ঘটনা 'ভুল বোঝাবুঝি' বলে পারসোনা ও সেবাগ্রহীতার স্বামীর যৌথ একটি বিবৃতি মঙ্গলবার কয়েকটি দৈনিকে বিজ্ঞাপন হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে।

ওই ঘটনা প্রসঙ্গে মনো চিকিৎসক ও মনোবিজ্ঞানী ফারজানা হালিম নীলা বলেন, "বিষয়টি মেয়েদের জন্য অত্যন্ত অপমানজনক। এ ঘটনাটি এখনো ধোঁয়ার মতো মনে হচ্ছে।"

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও লেখক আইনুন নাহার বলেন, "আসলেই সেদিন সেখানে কী হয়েছিলো বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়। আমার মনে হয় বিষয়টিকে কোনভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটিয়ে নারীর ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে।"

নাট্যাভিনেত্রী বন্যা মির্জা বলেন, "পারসোনায় সেদিন কী ঘটেছিল তা নিশ্চিত করে আমি বলতে পারছি না। বিষয়টি তদন্ত হলে সঠিক ঘটনা বেরিয়ে আসবে। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বিনষ্ট হয়-এমন ঘটনা সত্যি হলে তা হবে সমাজের জন্য উদ্বেগের।"

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ফারজানা জেবীন খান বলেন, "আমি কানিজ আলমাসের বক্তব্য পত্রিকায় পড়েছি, কিন্তু একটি প্রশ্নের উত্তর পাইনি, চেঞ্জিং রুমে ক্যামেরা কেন? একজন নারীর কাছে অন্য নারীর প্রতি এমন আচরণ আমাদের কাম্য নয়। তিনি বাংলাদেশের প্রত্যেক নারীকে অপমান করেছেন।"

ওই ঘটনার পর পারসোনার সত্ত্বাধিকারী কানিজ আলমাসকে সোমবার লিগ্যাল নোটিস দেন ঢাকার জজ আদালতের কয়েকজন আইনজীবী। একই ঘটনায় আলামত নষ্টের অভিযোগে ঢাকার গুলশান থানায় পুলিশের এক উপ-পরিদর্শককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এএইচএ/পিডি/২২১৮ ঘ.