‘আমার দিন শুরু ফজরে, তার দুপুরে’

বিডিনিউজ২৪
Published : 13 Oct 2011, 03:01 AM
Updated : 13 Oct 2011, 03:01 AM

নীলফামারী, অক্টোবর ১২ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে খালেদা জিয়ার প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ফজরের নামাজ পড়েই তার দিন শুরু হয়। তবে বিরোধী দলীয় নেতার সকাল হয় দুপুর ১২টায়।

বিগত সংসদ নির্বাচনে 'পরাজয়ের জ্বালা' সইতে না পেরে আর বর্তমান সরকারের সময়ে 'উন্নয়নের জোয়ার' দেখে খালেদা জিয়া দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

বুধবার বিকালে নীলফামারী সরকারি হাইস্কুল মাঠে এক জনসভায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, "বিরোধীদলীয় নেতা প্রশ্ন রেখেছেন আমি মুসলমান কি না? বিরোধীদলীয় নেতাকে আমি বলতে চাই, ফজরের নামাজ পড়ে আমি প্রতিদিনের কাজ শুরু করি। কিন্তু তার সকাল হয় দুপুর ১২টায়।"

মঙ্গলবার সিলেটে চারদলের জনসভায় খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, "দুর্গা পূজার অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের মা দুর্গা গজে চড়ে এসেছে। তিনি পূজা অনুষ্ঠানে যে কথা বলেছেন, আমরা জানতে চাই- উনি আসলে কোন ধর্মে বিশ্বাসী?"

'টার্গেট করে' চার দলের নেতাদের 'ধরা হচ্ছে' দাবি করে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারেরও সমালোচনা করে খালেদা জিয়া।

এ বিষয়টি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি মানবতাবিরোধী খুনীদের বাঁচাতে চক্রান্ত শুরু করেছে।

বিগত চারদলীয় জোট সরকার দেশকে সন্ত্রাস ও দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল বলেও অভিযোগ করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, "তার (খালেদা) সোনার ছেলেরা দেশের টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। দুর্নীতির টাকা ফেরত দেওয়া না হলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। যারা গরীব ও এতিমের টাকা মেরে খাবে তাদের বিচার এদেশের মাটিতেই হবে।"

মুদ্রা পাচারের অভিযোগে একটি মামলায় খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই অভিযোগে মামলা রয়েছে খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধেও।

জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ জনসভায় দুপুর ১২টা থেকে দলে দলে লোক জমায়েত হতে থাকে। এক পর্যায়ে জনসমুদ্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা। বিকাল পৌনে ৪টায় শেখ হাসিনা মঞ্চে উঠলে লাখো জনতা তাকে স্বাগত জানায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশে প্রতিটি মানুষ সুখে থাকবে। ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যাবে। এজন্য তাদের বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি জেলায় ঋণের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। আমাদের প্রধান লক্ষ্য দারিদ্র দূর করা। আমরা নীলফামারীতে উত্তরা ইপিজেড তৈরি করেছি।"

নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের সঙ্গে সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপন, নীলফামারী সরকারি মহিলা কলেজে অর্নাস ও সরকারি কলেজে মাস্টার্স কোর্স চালু, যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনসহ বেশকিছু প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও নীলফামারী পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদের সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য সতীশ চন্দ্র রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ প্রমুখ।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ বিমানে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান প্রধামন্ত্রী। সেখান থেকে সড়ক পথে সৈয়দপুর সেনানিবাসে এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। এ সময় তিনি সশস্ত্র বাহিনী আধুনিকায়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তুলে ধরেন।

সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানরা ছাড়াও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সামসুল হক টুকু, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/ডিডি/জেকে/২২১৩ ঘ.