নিজামী-মুজাহিদদের মুক্তি চান অলি

বিডিনিউজ২৪
Published : 1 Nov 2011, 03:42 AM
Updated : 1 Nov 2011, 03:42 AM

চট্টগ্রাম, অক্টোবর ৩১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটক মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, দেলোয়ার হোসেন সাঈদীসহ অন্যান্য জামায়াত ইসলামী নেতাদের মুক্তি চেয়েছেন এলডিপি সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমদ।

চট্টগ্রামে এক জনসভায় সোমবার এই দাবি তুলে বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, "জামায়াত নেতাদের মধ্যে যাদের বয়স ৫২ বছরের নিচে তারা কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধ করেনি।"

অলি বলেন, "কারণ তারা তখন হাইস্কুলের ছাত্র ছিল।"

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে শীর্ষ জামায়াত নেতারা এখন কারাগারে আছেন। এরা হলেন- জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামান, আব্দুল কাদের মোল্লা এবং নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী।

এদের মধ্যে সাঈদীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ গঠনের শুনানি চলছে।

মুক্তিযুদ্ধে ১ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বীর বিক্রম খেতাব পান অলি আহমদ। ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই মুক্তিযোদ্ধা তার ছেড়ে আসা দল বিএনপির সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম ১৪ আসনে জামায়াত প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশ নেন এবং পরাজিত হন।

ওই নির্বাচনে চারদলীয় জোট এই আসনটি বাদে বাকি সব আসনে একক প্রার্থী দিয়েছিল। কিন্তু বিএনপি'র তখনকার স্থায়ী কমিটির সদস্য ও প্রভাবশালী নেতা অলি আহমদ মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামীকে সেই নির্বাচনে ছাড় না দিতে অনড় থাকেন। সেকারণে চারদলীয় জোট কেবল ওই আসনটিতেই একক প্রার্থী না দিয়ে তা উন্মুক্ত করে দেয় ।

এই সরকারের সময়কালে গত জুলাই মাসে পুরনো দল বিএনপি'র সঙ্গে আবার গাঁটছড়া বাঁধেন অলি। সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপিকে পুরো সমর্থন যোগাচ্ছে তার দল। সম্প্রতি তারা রোড মার্চ কর্মসূচিতে অংশ নেন।

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা কমিটির যৌথ আয়োজনে সোমবার চট্টগ্রামের মুসলিম হলে এক আলোচনা সভায় নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকারের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন অলি আহমদ।

মহাজোট সরকার নির্বাচন কমিশনকে 'ক্রীতদাস' বানিয়ে রেখেছে বলে মন্তব্য করেন সাবেক এই মন্ত্রী।

তিনি বলেন, "নির্বাচন কমিশনকে মহাজোট সরকারের গোলাম বললে ভুল হবে। সরকার এ কমিশনকে তাদের ক্রীতদাস বানিয়ে রেখেছে।"

"সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান ভুল করেছিল" মন্তব্য করে এ সাংসদ বলেন, "পঞ্চদশ সংশোধনী করে তিনিও [শেখ হাসিনা] একই ভুল করেছেন।"

অলি বলেন, "১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করেছিল আওয়ামী লীগ। তখন দেশের শান্তির জন্য খালেদা জিয়া তাদের দাবি মেনে নিয়েছিলেন।"

"আর এখন পঞ্চদশ সংশোধনী করে এ ব্যবস্থা [তত্ত্বাবধায়ক সরকার] বাতিল করে রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার কথা বলছেন তারা (আওয়ামী লীগ)।"

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে রাজনীতিকদের কোনো ভূমিকা ছিলো না বলে গত শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন অলি।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা এলডিপি কমিটির সভাপতি মো. নুরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. রিদোয়ান আহমদ, সহ- সভাপতি এম সলিমুল্লাহ, যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের আমির আ ন ম শামসুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমইউ/সিএম/পিডি/২২৫৬ ঘ.