গোলাম আযমকে গ্রেপ্তারের আবেদন

বিডিনিউজ২৪
Published : 12 Dec 2011, 08:43 AM
Updated : 12 Dec 2011, 08:43 AM

ঢাকা, ডিসেম্বর ১২ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপন করে তাকে গ্রেপ্তারের আবেদন জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু সোমবার ট্রাইব্যুনালে ৫২ দফার এই অভিযোগ উপস্থাপন করেন। বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল তা রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠানোর আদেশ দেন।

প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আমরা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপন করেছি। সেখানে গোলাম আযমকে গ্রেপ্তারের জন্যও আবেদন করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ আমলে নিলে গ্রেপ্তারের আদেশের বিষয়েও শুনানি হবে।"

এর আগে গত ১ নভেম্বর প্রসিকিউটর জিয়াদ আল মালুম আদালতকে জানান, গোলাম আযমের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে।

তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান ওই সময় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "৪০ বছর আগের ঘটনা হওয়ায় প্রতিবেদনে ব্যক্তি সাক্ষীর পাশাপাশি তৎকালীন সময়ের বিভিন্ন নথিপত্রকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ৩৬০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে সাক্ষী আছে ৪০ জন। আর নথিপত্র আছে ৪০০টিরও বেশি।"

গোলাম আযম দুভাবে দেশের ক্ষতি করেছেন মন্তব্য করে প্রধান সমন্বয়ক বলেন, "প্রথমত, মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজে শান্তি কমিটির নের্তৃত্ব দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তা করেছেন।"

ট্রাইব্যুনালের তদন্তকারী কর্মকর্তা মতিউর রহমান বলেন, "তার বিরুদ্ধে যথেষ্ঠ তথ্য প্রমাণ পেয়েছি। তিনি শান্তি কমিটির নেতা ও তৎকালীন জামায়াতের আমীর ছিলেন। তিনি নির্দেশ দাতা। তার নির্দেশেই তখন মানবতাবিরোধী অপরাধের মাত্রা বেড়ে যায়।"

বাংলাদেশের স্বাধীনতার তীব্র বিরোধিতাকারী গোলাম আযম ১৯৭১ সালে শান্তি কমিটি, রাজাকার ও আলবদর বাহিনী গঠনে নেতৃত্ব দেন, যাদের সহযোগিতা নিয়ে পাকিস্তানি সেনারা বাংলাদেশে ব্যাপক হত্যা ও নির্যাতন চালায়।

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর গোলাম আযম সে সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে প্রকাশ্যে তদবির চালান।

১৯৭১ থেকে ৭ বছর লন্ডনে অবস্থান করার পর ১৯৭৮ এ সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে আবার বাংলাদেশে আসেন এই জামাত নেতা। ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি।

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মো. মুজাহিদ, মো. কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লা এবং বিএনপি নেতা সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জিয়াউর রহমান আমলের মন্ত্রী আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধেও যুদ্ধাপরাধের মামলা চলছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা, খুন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

গত ৩ অক্টোবর প্রথম ব্যক্তি হিসেবে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়। তার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যগ্রহণও শুরু হয়েছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসএন/জেকে/১৩১৫ ঘ.