‘জাতি সেই হত্যার বিচার চায়’

বিডিনিউজ২৪
Published : 14 Dec 2011, 05:31 AM
Updated : 14 Dec 2011, 05:31 AM

ঢাকা, ডিসেম্বর ১৪ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- স্বাধীনতার ঊষালগ্নে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের দোসরদের সহায়তায় বাংলাদেশের যে মেধাবী সন্তানদের হত্যা করেছিলো, সেই সব শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে দেশবাসী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, দেশের মানুষ সেই সব হত্যাকারীদের বিচার চায়।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরিকল্পিতভাবে তাদের এ দেশীয় দোসরদের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, চিকিৎসক, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকসহ বহু খ্যাতিমান বাঙালিকে হত্যা করে।

বলা হয়, পরাজয় নিশ্চিত জেনেই পাকিস্তানি বাহিনী এ কাজটি করে, যার উদ্দেশ্য ছিলো স্বাধীনতার পর যেন বাংলাদেশের পুনর্গঠন বাধাগ্রস্ত করা।

সেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে বুধবার সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ ভরে উঠে ফুলে ফুলে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল স্মৃতিসৌধে আসেন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে। ৬টা ৩৫ মিনিটে তিনি ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য এবং তিন বাহিনীর প্রধানরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

শহীদ বেদীতে ফুল দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানান। প্রধানমন্ত্রী তাদের সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্র"তি দেন।

একজন মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত শেষ করার দাবি জানালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "দেশের মানুষও তাই চায়।"

প্রধানমন্ত্রীর পর ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের দুই প্রশাসক, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ফুল দেয় দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।

সকাল ৭টা থেকে স্মৃতিসৌধ সবার জন্য খুলে দেওয়া হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে ফুল দেওয়া হয়। স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে জনতার ঢল নামে।

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া সকাল পৌনে ৮টায় শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে ছিলেন।

এরআগে সকাল সাড়ে ৭টায় দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

শহীদ বুদ্ধিজীবী বিদস উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান বলেন, "জাতির সূর্যসন্তান বুদ্ধিজীবীরা দেশের বিভিন্ন সংকটে জাতিকে বুদ্ধি ও পরামর্শ দিয়ে কাণ্ডারীর ভূমিকা পালন করেন। তাদের সৃজনশীলতা ও অসা¤প্রদায়িক চিন্তা-চেতনা আমাদের দৃপ্ত প্রত্যয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখায়। জাতিকে মেধাহীন করাই ছিলো হানাদার বাহিনীর হীন উদ্দেশ্য।"

প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, "পাক হানাদার ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর এই পরিকল্পিত নৃশংস হত্যাযজ্ঞের উদ্দেশ্য ছিল বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করা। বিভিন্ন সময় স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি হামলা চালিয়েছে মুক্তমনা শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক ও রাজনীতিকদের ওপর। এসব হত্যাকাণ্ড ও যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে। বাংলার মাটিতে তাদের অপকর্মের বিচার হবেই।"

রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করছে। এর মধ্যে রয়েছে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসআই/জেকে/০৯০৫ ঘ.