নির্যাতন: বিএসএফের আট সদস্য বরখাস্ত

বিডিনিউজ২৪
Published : 19 Jan 2012, 03:57 AM
Updated : 19 Jan 2012, 03:57 AM

আজিজ হাসান
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

ঢাকা, জানুয়ারি ১৮ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- সীমান্তে এক ব্যক্তির ওপর বিএসএফ জওয়ানদের নির্যাতনের ভিডিওচিত্র প্রকাশের পর আটজনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনী (বিএসএফ)।

ভারতীয় টেলিভিশন এনডিটিভি বলছে, নির্যাতিত ব্যক্তিটি বাংলাদেশি।

বহিষ্কৃতরা হলেন- কনস্টেবল বিরেন্দর তিওয়ারি, ভিএস ভিক্টর, ধনঞ্জয় কুমার, আনন্দ সিং, অমর জ্যোতি, সঞ্জীব কুমার, সুরেশ চাঁদ ও সুনীল কুমার।

এনডিটিভিতে নির্যাতনের ভিডিওচিত্রটি প্রচার হয় বুধবার বিকেলে। এরপর সন্ধ্যায় এই বহিষ্কারের ঘটনা ঘটে।

ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর (বিএসএফ) সদরদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র ভারতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেন, "ওই আটজন চিহ্নিত হয়েছে এবং তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।"

বিএসএফ'র জনসংযোগ কর্মকর্তা টি আচার্য পিটিআইকে বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে তিন-চার জন ইউনিফর্ম পরিহিত ব্যক্তির সহিংস ও বেআইনি নির্যাতন চালানোর ভিডিওটি বিএসএফ সদরদপ্তরের নজরে এসেছে। ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে বিএসএফ আইনে ব্যবস্থা নিতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।"

বহিষ্কৃতরা বিএসএফ'র ১০৫ ব্যাটালিয়নের সদস্য। এ ব্যাটালিয়নের কমান্ডারকে দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পূর্ণ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ওই কর্মকর্তা।

স্থানীয় সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে এনডিটিভি বলেছে, পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার কাহারপাড়া সীমান্ত তল্লাসি চৌকিতে নির্যাতনের এই ঘটনা ঘটে।

বিএসএফ'র শীর্ষ কর্মকর্তারা বলেছেন, ঘটনাটি গত ৯ ডিসেম্বর ঘটে।

এনডিটিভির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় ওই বাংলাদেশিকে নির্দয়ভাবে পেটায় বিএসএফের সদস্যরা। তার জননাঙ্গে পেট্রোলও ঢেলে দেওয়া হয়।

স্থানীয়রা এনডিটিভিকে জানায়, নির্যাতনের পর ওই ব্যক্তি সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে।

তবে নিরপেক্ষ কোনো সূত্র থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে টেলিভিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়।

মুর্শিদাবাদের সঙ্গে বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার সীমান্ত রয়েছে।

সীমান্তে বিএসএফের নির্যাতন বন্ধে দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ। বিএসএফের নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোও।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ২০১০ সালের ডিসেম্বরে এক প্রতিবেদনে বলেছে, হত্যা এবং অন্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর (বিএসএফ) বিচার হওয়া উচিৎ।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর হিসেবে, গত এক দশকে প্রায় এক হাজার বাংলাদেশি বিএসএফ'র গুলিতে নিহত হয়েছে। নির্যাতনের ঘটনা অসংখ্য।

এক বছর আগে ফেলানী নামে এক কিশোরীকে বিএসএফ গুলি চালিয়ে হত্যা করলে তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। গুলিবিদ্ধ ফেলানীর লাশ দীর্ঘক্ষণ কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলছিল।

সীমান্তে নির্যাতন বন্ধে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানোর পর স¤প্রতি বিএসএফকে প্রাণঘাতী নয়, এমন অস্ত্র দিয়েছে ভারত সরকার।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এএইচ/এমআই/পিডি/২২২৯ ঘ.