জনস্রোত স্টেডিয়াম পানে

বিডিনিউজ২৪
Published : 11 June 2015, 12:46 PM
Updated : 19 Feb 2011, 05:31 AM

ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ১৯ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- প্রিয় দল বাংলাদেশের খেলা দেখতে উন্মুখ এখন দর্শককূল। মিরপুর স্টেডিয়ামের আশপাশে এখন শুধু লাল আর সবুজ। দেশের পতাকা আর জার্সি পরে সবারই এখন অপেক্ষা খেলা শুরুর। ফটক খুলে গেছে, ঢোকাও শুরু হয়েছে। আর মাত্র ঘণ্টাখানেক পর শুরু হবে ব্যাট-বলের লড়াই।

বৃহস্পতিবার বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও শনিবার বেলা আড়াইটায় বাংলাদেশ-ভারতের খেলা দিয়ে মাঠে গড়চ্ছে টুর্নামেন্ট। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মাঠে ঢুকেছেন ভারতের খেলোয়াড়রা।

সকাল থেকেই লোকে লোকারণ্য মিরপুর ২ নম্বরের শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম। মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে ১ নম্বর সনি সিনেমা হল পর্যন্ত সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এক হাতে লেখা চার অন্য হাতে ছয় আর মুখে স্লোগান বাংলাদেশের জয়- এমন সাজে হাজারো মানুষ ঢুকছেন স্টেডিয়ামে। তাদের একটাই চাওয়া- ভারতকে হারিয়ে বিশ্বকাপের মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ।

স্টেডিয়ামের বাইরের অংশ দেখে মনে হয় লাল-সবুজের সমুদ্র। সারিবদ্ধ ক্রিকেটপ্রেমীরা ভেতরে ঢুকছে, মনে হচ্ছে ঢুকছে খণ্ড খণ্ড সবুজ।

সাবিহা ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী। তিনি নিজের গালে এঁকে নিচ্ছেন বাংলাদেশের পতাকা।

নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে গিয়ে সাবিহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আমার বুকের ভেতর বাংলাদেশ। সেই বাংলাদেশের শুভকামনায় বাইরের এঁকে নিচ্ছি দেশের পতাকা।"

স্টেডিয়ামের বাইরে স্থাপিত চারটি ফটক সকাল ১১টার দিকে খুলে দেওয়া হয়। সারি বেঁধে সবাই ঢুকছেন।

গ্যালারি এরই মধ্যে লাল-সবুজ হয়ে গেছে। কেউ এসেছেন বাঘের মুখোশ পড়ে, কেউবা কাপড় দিয়ে নিজেকেই বানিয়েছেন বাঘ। কেউ একই কাজ করেছেন রং মেখে। আবার কেউবা কপালে পতাকা খচিত ব্যান্ড বেঁধে।

বুকে-মুখে-পিঠে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে জড়িয়ে এসেছেন অনেকেই। যারা সময়ের অভাবে কিনতে পারেননি, তারা স্টেডিয়ামের বাইরে হকাদের কাছ থেকে তা কিনে ভেতরে ঢুকছেন।

পিছিয়ে নেই বিদেশিরাও, এদের অনেকেই বাংলাদেশের পতাকা হাতে, জার্সি গায়ে স্টেডিয়ামে ঢুকছেন।

ভারতের সমর্থকরাও ভারতের পতাকা নিয়ে ভেতরে ঢুকছেন। তবে তাদের সংখ্যা বেশ কম।

স্টেডিয়ামের বাইরে ভিড় করা বেশিরভাগ মানুষের কাছেই টিকেট নেই। তবুও তারা এসেছেন দলকে সমর্থন দিতে। এদের কেউ কেউ আবার এসেছেন স্ত্রী-কন্যা-পুত্রকে নিয়ে।

মিরপুরের বাসিন্দা সমীরণ দেওয়ান বললেন, তিনি টেলিভিশনে খেলা দেখলেও ছোট ছেলেকে নিয়ে এসেছেন এই জনসমুদ্র দেখতে।

গ্যালারিতে ঢোকার মুখে তল্লাশি হচ্ছে। কোনো ধরনের ক্যামেরা নিয়ে ঢোকা বারণ- এমন কথা বলা হলেও হ্যান্ডিক্যাম নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মূল স্টেডিয়ামের বাইরে স্থাপিত চারটি গেট দিয়ে দর্শকরা ঢুকবেন। এরপর স্টেডিয়ামের মূল ২২টি গেট দিয়ে গ্যালারিতে আসন নিতে হবে তাদের।

স্টেডিয়ামে প্রবেশের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা আগেই দেওয়া হয়েছে। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী-সিগারেট, দিয়াশলাই, ম্যাচ লাইটার, লেজার পয়েন্ট, যেকোনো ধরণের বাঁশি, লাঠি, খাবার, পানির বোতল (মুখ বন্ধ থাকলে), কোমল পানীয়র বোতল বা ক্যান এবং নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী যেকোনো ধরনের অস্ত্র (যেমন- ছুরি, চাকু) স্টেডিয়াম এলাকায় বহন করা যাবে না।

এখন পর্যন্ত সব কিছু সুশৃঙ্খলভাবেই হচ্ছে। ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন রয়েছে স্টেডিয়াম পাড়ায়।

মিরপুরের এ স্টেডিয়ামে ২৫ হাজার দর্শক খেলা দেখতে পারবে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় রাজধানীর ১৪টি স্থানে বড় পর্দায় খেলা দেখানো হবে।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্টেডিয়ামে ফ্লাড লাইটের পরিবর্তে লাগানো হয়েছে টিউব্যুলার ফ্লাড লাইট। স্থাপন করা হয়েছে স্কোর বোর্ড, সিসিটিভি, ৬০ ফুট দীর্ঘ জায়ান্ট স্ক্রিন, গ্যালারি শেড, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কেনোপি, মিডিয়া সেন্টার ও হসপিটালিটি বক্স। এছাড়া স্টেডিয়াম পাড়ায় করা হয়েছে আলাদা শপ প্লাজা।

ভারত ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক হয়েছে বাংলাদেশ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসআই/পিসি/এসইউএম/এমআই/১২৪৫ ঘ.