ছাত্রীকে ‘পতিতা’ আখ্যায় জরিমানার তদন্ত শুরু

বিডিনিউজ২৪
Published : 23 Feb 2012, 05:29 PM
Updated : 23 Feb 2012, 05:29 PM

আতিয়ার বাড্ডা
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

নীলফামারী, ফেব্রুয়ারি ২৩ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- নীলফামারীতে এক ছাত্রীকে 'পতিতা' আখ্যা দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে আইন ও বিচার বিভাগ।

দুই সদস্যের তদন্ত দল বৃহস্পতিবার জেলা সদরের লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের আকাশকুড়ি গ্রামে সেই ছাত্রী, তার বাবা, ইউপি চেয়ারম্যান, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ও দৈনিক সংবাদের স্থানীয় প্রতিবেদকসহ বিভিন্ন ব্যক্তির জবানবন্দি নেয় ।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর আমিনুল ইসলাম ও তদন্তে তার সহযোগী আইন ও বিচার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব ড. এবিএম মাহমুদুল হক আকাশকুড়ি গ্রামে তদন্ত করেন।

এ সময় সুবোধের বাড়ি তদন্ত করতে গেলে সুবোধ ও তার বাবা বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।

বিয়ের দাবি নিয়ে সদরের লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের আকাশকুড়ি গ্রামে 'প্রেমিক' সুবোধ চন্দ্র রায়ের বাড়ি গিয়ে গত ১১ জানুয়ারি অবস্থান নেওয়ায় ওই গ্রামের এক কলেজছাত্রীকে জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

সে সময় ছাত্রীর বাবা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার মেয়ের সঙ্গে তাদের গ্রামের কমলা কান্ত রায়ের ছেলে দুবাছুড়ি নিম্ম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুবোধ চন্দ্র রায়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

গত ১৩ জানুয়ারি নীলফামারী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার নাসরীন পুলিশ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে যান। পরে থানায় নিয়ে কলেজছাত্রী ও স্কুলশিক্ষককে দণ্ডবিধির ২৯০ ধারায় 'সামাজিক আপদ' সৃষ্টির অভিযোগে একশ টাকা করে জরিমানা করেন ইউএনও।

এরপর ছাত্রীটিকে যৌনকর্মীর মতো আচরণের জন্য সাজা দেওয়া হয়েছে অভিযোগ এনে মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা আত্মহত্যার হুমকি দেয়।

আত্মহত্যার হুমকি দেওয়ার পর ওই কলেজছাত্রী প্রধান শিক্ষক সুবোধের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলাও করেন। এতে সুবোধের বাবা-মাকেও আসামি করা হয়।

যৌনকর্মী হিসেব সাজা দানের কথা ইউএনও নাসরীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে সে সময় অস্বীকার করেন।

তবে একই সময়ে সদর থানার ওসি জেএম আসাদুজ্জামান বলেন, "সাধারণত পতিতাদের এই আইনে দণ্ড দেওয়া হয়ে থাকে।"

এ নিয়ে গত ১৪ জানুয়ারি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে এবং পরবর্তীতে দৈনিক সংবাদে খবর প্রকাশ হয়।

এ নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ নজরে এলে ১৭ জানুয়ারি উচ্চ আদালতের ছয় নম্বর বেঞ্চের দুই বিচারপতি এ এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরী ও জাহাঙ্গীর হোসেন স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন।

তদন্ত দল ওই কলেজছাত্রী, তার বাবা, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নীলফামারী প্রতিনিধি আতিয়ার বাড্ডা, লক্ষ্মীচাপ ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান, মহিলা সংস্থার সম্পাদিকা দৌলত জাহান, পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাড. মমতাজুল হকসহ স্থানীয় কয়েকজনের লিখিত জবানবন্দি নেয়।

তদন্তের সময় অভিযুক্ত ভ্রাম্যামাণ আদালতের বিচারক ইউএনও নাসরীন, নীলফামারীর সিনিয়র সহকারী জজ বুলবুল আহমেদ, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর কামরুজ্জামান, বিপুল সংখ্যক পুলিশ ছাড়াও লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন ও পাশের টুপামারী ইউনিয়নের কয়েকশ' মানুষ উপস্থিত ছিল।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/এমএইচপি/পিডি/২১০৮ ঘ.