সংঘর্ষে ঢাবি ছাত্র নিহত, বিক্ষোভ-ভাংচুর

বিডিনিউজ২৪
Published : 6 Oct 2016, 04:28 PM
Updated : 6 March 2011, 02:48 PM

ঢাকা, মার্চ ০৬ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- মতিঝিলে বাস শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অর্ধশত গাড়ি ভাংচুর করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। ভাংচুর করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কার্যালয়। পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াও হয়েছে।

রোববার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভাংচুর ও সংঘাত চলে। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।

রেজোয়ান আহমেদ নামে আরবি বিভাগের এক শিক্ষার্থী শনিবার রাতে মতিঝিলে বাস শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় ট্রাকের ধাক্কায় আহত হন। রাত আড়াইটার দিকে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

রেজেয়ানের মৃত্যুর প্রতিবাদে সকাল ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগে আসে। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবন পর্যন্ত সড়কে অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাংচুর করে তারা। পুড়িয়ে দেওয়া হয় একটি বাস।

এরপর পুলিশের লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের মুখে ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে শিক্ষার্থীরা। পরে তারা নীলক্ষেত দিয়ে বের হতে চাইলে সেখানে পুলিশ বাধা দেয়।

নীলক্ষেতে প্রায় আধা ঘণ্টা পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। ছাত্ররা ইট ছুড়লে পুলিশও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।

পৌনে ১টার দিকে ছাত্ররা ক্যাম্পাসে ফিরে কলা ভবনে প্রক্টরের কার্যালয় ভাংচুর করে। তারা মিছিল নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ের দিকে যেতে চাইলে সেখানে সরকার সমর্থক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের অবস্থান দেখে পিছু হটে।

পরে উপউপাচার্য অধ্যাপক হারুন অর রশীদের সঙ্গে দেখা করে কয়েকটি দাত্তিুলে দরে ছাত্ররা। ওই সময় ছাত্রলীগকর্মীরাও এসব দাবির প্রতি সমর্থন প্রকাশ করে।

ছাত্রদের দাবিগুলো হচ্ছে- বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কেএম সাইফুল ইসলামের পদত্যাগ, রেজোয়ানের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং নীলক্ষেত এলাকায় ছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলার বিচারের পদক্ষেপ নেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা।

উপউপাচার্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দাবি পূরণের আশ্বাস দেন।

শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মতিঝিলে আরবি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হিমালয় পরিবহনের কর্মীদের সংঘর্ষে রেজোয়ানসহ চার ছাত্র আহত হয়। রাত আড়াইটার দিকে ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে মারা যান।

রেজোয়ানের বাড়ি বরিশালের কোতোয়ালি থানায়। তিনি আরবি বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থী ছিলেন।

সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে রেজোয়ানের জানাজা হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। লাশ বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ বলছে, শনিবার রাতে সংঘর্ষের সময় দৌড়ে পালাতে গিয়ে ট্রাকের ধাক্কায় আহত হন রেজোয়ান। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, রেজোয়ানকে ট্রাকের নিচে ফেলে দেওয়া হয়।

আরবি বিভাগের শিক্ষক রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, শনিবার সকালে স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থীরা নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে বেড়াতে যায়। বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে ফেরার পথে মদনপুরে একটি পেট্রোল পাম্পে হিমালয় পরিবহনের বাসের কর্মীদের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়।

এর জের ধরে ক্যাম্পাস থেকে একদল ছাত্র মতিঝিলে হিমালয় পরিবহনের কাউন্টারে গেলে সেখানে সংঘর্ষ বাঁধে।

আহত অন্যরা হলেন- আরবি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের জহিরুল ইসলাম, তৃতীয় বর্ষের ওজায়ের হোসেন মনির ও মমিনুর রহমান।

বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্বের ছাত্র রনি অভিযোগ করেন, হিমালয় পরিবহনের কর্মচারীরা রেজোয়ানকে পিটিয়ে রাস্তায় ফেলে রাখে।

মতিঝিল থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "মারামারির এক পর্যায়ে একটি ছেলে (রেজোয়ান) দৌড় দিলে রাস্তায় একটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হয়।"