অবিশ্বাস্য জয়, লড়াইয়ে টিকে আছে বাংলাদেশ

বিডিনিউজ২৪
Published : 11 March 2011, 06:05 PM
Updated : 11 March 2011, 06:05 PM

ঢাকা, মার্চ ১১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম) – শ্বাসরুদ্ধকর খেলায় ইংল্যান্ডের কাছ থেকে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ। ২ উইকেটে জিতে টিকে রইল কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ২৮তম খেলায় শুক্রবার টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠান বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

ইয়ন মর্গান ও জনাথন ট্রটের অর্ধ-শতকের সুবাদে ৪৯ ওভার ৪ বলে ২২৫ রানে থেমে যায় ইংল্যান্ডের পালা।

রান তাড়া করতে নেমে ইমরুল কায়েসের অর্ধশতকের সুবাদে ৪৯ ওভারে ৮ উইকেটে জয়ের লক্ষ্য ২২৬ টপকে ২২৭ রানে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। তখনো হাতে ছিল ৬ বল।

জয় থেকে তখনও ৫৭ রান দূরে বাংলাদেশ। নবম ব্যাটসম্যন হিসেবে ব্যাট হাতে মাঠে নামেন শফিউল ইসলাম। ততক্ষণে দলের হারের শঙ্কায় গ্যালারি ছাড়তে শুরু করেছেন অনেক দর্শক। সোয়ানের বলে চার মেরে রানের খাতা খোলেন শফিউল।

অসাধারণ ব্যাটিং শফিউল ইসলামের। তাকে যথার্থ সহযোগিতা দেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ৫৮ বলে অপরাজিত ৫৮ রান করে ইংল্যান্ডের হাতের মুঠো থেকে জয় বের করে আনেন তারা দু'জনে।

এর আগে শুরুতেই বাংলাদেশকে ঝড়ের গতিতে এগিয়ে নেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। দলীয় ৫২ রানের মাথায় ৩৮ রান করে টিম ব্রেসন্যানের বলে বোল্ড হন তামিম। তার ২৬ বলের ইনিংসে চার রয়েছে পাঁচটি।

৭০ রানের মাথায় দুর্ভাগ্যজনক রান-আউটের শিকার হন জুনায়েদ সিদ্দিক (১২)। টিম ব্রেসন্যানের বল ঠেলে দিয়েই দ্রুত রান নেয়ার চেষ্টা করেন তিনি। তবে জুনায়েদের জায়গায় পৌঁছানোর আগে অত্যন্ত দ্রুত বল ধরে জেমস অ্যান্ডারসন সরাসরি তার উইকেট ভেঙে দেন।

দলের সঙ্গে আর মাত্র ৩ রান যোগ হতেই রকিবুল হাসান (০) বোল্ড হন আজমল শেহজাদের বলে।

এ অবস্থায় দলের হাল ধরেন ইমরুল কায়েস ও সাকিব। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১০৪ বলে ৮২ রান করে দলের অবস্থা সুসংহত করেন। ১৫৫ রানের মাথায় ইমরুলও রান-আউট হন। এক শ' বলে পাঁচটি চারের সাহায্যে ৬০ রান করেন তিনি। বিশ্বকাপে এটি তার প্রথম অর্ধশতক। আর একদিনের খেলায় সপ্তম।

সেই সঙ্গে বাংলাদেশের ১৭তম ব্যাটসম্যান হিসেবে একদিনের ক্রিকেটে ১০০০ রানের মাইলফলক অতিক্রম করেন ইমরুল।

দলীয় ১৬২ রানে গ্রায়েম সোয়ানকে মারতে গিয়ে বোল্ড হন সাকিব (৩২)। তার ৫৮ বলের ইনিংসে চার রয়েছে একটি।

এরপরই হারের শঙ্কা পেয়ে বসে। কিন্তু খেলার পুরো চিত্র পাল্টে দেন শফিউল ও মাহমুদুল্লাহ। শেষ পর্যন্ত শফিউল ২৪ ও মাহমুদুল্লাহ ২১ রানে অপরাজিত থাকেন। শফিউলের ২৪ বলের হার না মানা ইনিংসে একটি ছক্কা ও চারটি চার রয়েছে। আর মাহমুদুল্লাহ ৪২ বল খেলে চার মারেন দু'টি।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৩২ থেকে ৫৩, এই ২১ রানের মধ্যে ম্যাট প্রায়র (১৫), অধিনায়ক অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস (১৮) ও ইয়ান বেল (৫) সাজঘরে ফিরে গেলে খাদে পড়ে যায় ইংল্যান্ড।

এ অবস্থায় খাদ থেকে দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব নেন জনাথন ট্রট ও ইয়ন মর্গান। ট্রট দেখেশুনে খেলে যেতে থাকেন। তবে অন্য প্রান্তে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে থাকেন মর্গান।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১৩২ বলে ১০৯ রান যোগ করেন তারা দলের সঙ্গে। ১৬২ রানের মাথায় নাঈম ইসলামের বলে সুইপ করেন মর্গান। ডিপ-মিডউইকেট থেকে দৌড়ে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে বল লুফে নেন ইমরুল কায়েস। ক্যাচটির কথা অনেকদিন মনে থাকবে দর্শকদের। ৭২ বলে ৮ চারের সাহায্যে ৬৩ রান করেন মর্গান। বিশ্বকাপে এটি মর্গানের প্রথম অর্ধশতক। আর একদিনের খেলায় দশম।

দলের সঙ্গে আর ২০ রান যোগ হতেই মর্গানের পথ ধরেন ট্রট। সাকিবকে উঠিয়ে মারতে গিয়ে লং-অফে জুনায়েদ সিদ্দিকীর হাতে ধরা পড়ার আগে করেন ৬৭। তার ৯৯ বলের ইনিংসে চার রয়েছে দু'টি। বিশ্বকাপে এটি ট্রটের চতুর্থ অর্ধশতক। আর একদিনের খেলায় নবম।

এরপর শুরু হয় ব্যাটসম্যানদের উইকেটে আসা ও যাওয়ার পালা। দলের সঙ্গে আর ৪৩ রান যোগ হতেই বিদায় নেন বাকি পাঁচ ব্যাটসম্যান। তাদের মধ্যে ২০-এর ঘরে পৌঁছাতে পারেননি কোনো ব্যাটসম্যান।

শেষ পর্যন্ত ২ রানে অপরাজিত থাকেন জেমস অ্যান্ডারসন।

বাংলাদেশের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন নাঈম, আব্দুর রাজ্জাক ও সাকিব। এজন্য নাঈম দেন ২৯ রান, রাজ্জাক ৩২ ও সাকিব ৪৯।

বাংলাদেশ দলে পরিবর্তন হয় একটি। দল থেকে বাদ পড়েন সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। তার জায়গায় খেলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।

ইংল্যান্ড দলে ফিরেছেন পল কলিংউড, আজমল শেহজাদ ও ইয়ন মর্গান। চোট পাওয়ায় দেশে ফিরে গেছেন কেভিন পিটারসেন ও স্টুয়ার্ট ব্রড। বাদ পড়েছেন মাইকেল ইয়ার্ডি।

৫ খেলায় ৫ পয়েন্ট নিয়ে বি গ্র"পে ইংল্যান্ড আছে তালিকার তৃতীয় স্থানে। ৪ খেলায় ৪ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ উঠে গেল পাঁচ নম্বরে।

এর আগে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম খেলায় ভারতের কাছে হারে ৮৭ রানে। পরের খেলায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জেতে ২৭ রানে। তৃতীয় খেলায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারে ৯ উইকেটে।

ইংল্যান্ড নিজেদের প্রথম খেলায় ৬ উইকেটে জেতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। পরের খেলায় ভারতের সঙ্গে টাই করে। তৃতীয় খেলায় আয়ারল্যান্ডের কাছে হারে ৩ উইকেটে। চতুর্থ খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জেতে ৬ রানে।

এর আগে মোট ১৪ বার খেলেছে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ড জিতেছে ১৩ বার। বাংলাদেশ একবার।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসএনএল/টিআর/২২৪৬ ঘ.

……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
:: দৃষ্টি আকর্ষণ ::
সকল ব্লগার ও মন্তব্য দাতার কাছ থেকে মূলত বাংলায় মন্তব্য করার অনুরোধ করা যাচ্ছে
কারণ বাংলা ব্লগে বাংলায় মন্তব্য ব্লগারদের কাছে গ্রহণযোগ্য বেশি
মন্তব্য ঘরের নীচে ইউনিজয় /ফোনেটিক /প্রভাত ব্যবহার করে আপনি সহজেই বাংলা লিখতে পারবেন