একজন জাফর ইকবাল ও বাংলাদেশ

বিপ্লব মল্লিক
Published : 30 August 2015, 08:04 PM
Updated : 30 August 2015, 08:04 PM

আমরা সামাজিক জীব। আমরা সমাজে বসবাস করি।আমরা হয়তবা কোন বস্তিতে জন্ম নিই, কোন অট্টালিকায়, কোন রেললাইন এর ধারে, কোন মধ্যবিত্ত পরিবারে নতুবা কোন অনাকাঙ্কিত পরিবেশে। তাই আমাদের মতাদর্শ ভিন্ন ভিন্ন না হয়ে পারে না।মতাদর্শ যাই হোক না কেন শান্তির পক্ষে যার কন্ঠস্বর সবসময় চলে তাকে আমরা স্বাগত জানাই, তাকে শ্রদ্ধা করি, ভালবাসি। তাই কারও মতাদর্শ দিয়ে বিচার করলে, নিজেকে দোষি হিসাবে প্রমাণ করি বলে আমরা ধরে নিতে পারি। তেমনি একজন জাফর ইকবাল স্যার। সামান্য কয়েকজন ব্যাক্তি তাকে ভিন্ন মতাদর্শ এর ব্যানার হিসাবে হাজির করে, সেটা তার লেখাতে আমরা প্রমাণ পেয়েছি।

যখন দেখি প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে কথা বলে, কোন জাতীয় ইস্যু নিয়ে কথা বলে সেটার ফলাফল যাই হোক না কেন সেটা সবার কন্ঠস্বর বলে, আমরা ধরে নিতে পারি। এমন কাজটি যে ব্যক্তিই করুক না কেন, যে মতাদর্শের হোক না কেন, আমরা তাকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারি না। তার মত শিক্ষাবিদ যখন বলে আমার গলায় দড়ি দিয়ে মরা উচিৎ, তখন আমরা বিমর্ষ হয়ে পড়ি কারণ তিনি কোন রাজনৈতিক নেতা নন, তিনি কোন সাধারণ শিক্ষক নন। তিনি শিক্ষকদের শিক্ষক হিসাবে আমরা জানি।তার কলম চলে যে কোন বাধা অতিক্রম করে।তার কলম কথা বলে সত্য,তার কলম কথা বলে বিজ্ঞানের দূত হিসাবে।তার কলম কথা বলে মানবতার পক্ষে।

শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় যার পদচারণায় ধন্য বলে আমরা মানি। তার সামনে আন্দোলনরত শিক্ষকদের গলাধাক্কা দেওয়ার মত ঘটনাকে আমরা ঘৃণা করি। যারা এ কাজটি করেছে তাদের ছাত্র হিসাবে পরিচয় জানতে আমরা সন্দিহান না হয়ে পারি না।নিজেকে প্রশ্ন করলে তারা হয়ত উত্তর পাবে না ।

অসির চেয়ে মসি বড় সেটি তার মসি দ্বারা আমরা বুঝতে পারি।তিনি যত আলোচিত তার পাশাপাশি সামান্য সমালোচিতও। তার বিপেক্ষে সমান্য সমালোচনা কে আমরা আলোচিত উজ্জল শিখার সামান্য ছায়া হিসাবে পছন্দ করি। তাই তার অপমানকে আমাদের সহ্য করা অনেক কষ্টকর ।এদেশের প্রশ্নপত্র ফাঁস বর্তমানে প্রতিদিনের সূর্য ওঠার মত এক স্বাভাবিক ব্যাপার তাই হয়ত কোন মানুষের মস্তিষ্কে সেটি কোন ভাবে নাড়া দেয় না। সরকার এর বিরুদ্ধে কোন কথা বলার মত সাহস কারও বর্তমানে আছে বলে ভাবা সবসময় অনেক কষ্টকর বলে সবাই আমরা জানি কারণ রাজনৈতিক সুবিধা হাতছাড়া হওয়ার একটা কারণ।

তাকে অপমান কোন বহিরাগত ব্যক্তি করিনি, কোন দিনমজুর করিনি,কোন কাঠমোল্লা করেনি।কোন সংগঠন এর ছা্ত্ররা যদি কোন সম্মানীয় ব্যক্তিকে অপমানিত করে তাহলে তার ফলাফল খুব নেতিবাচক হয় বর্তমানে ও ভবিষ্যৎ এ। যারা করেছে তাদেরকে আমরা প্রথমে ছাত্র হিসাবে জানি তারপর অন্যকিছু।

জয় বাংলার অপমান হয়েছে বলে তিনি দাবী তুলেছেন। জয় বাংলা বিরোধীরা এই শব্দটিকে হিমাগারে পাঠিয়েছিল সেটি অনেক দিন পরে ফিরে এসেছে আমাদের কাছে। শব্দটি আজ আমাদেরকে সাহস দেয়।আমাদের পরিচায়ক হিসাবে কথা বলে।এটি যেন জাতীয় পতাকার মত একটা শব্দ চিহ্ন, সেটির অপব্যবহার জাতিকে ভাবায়।সেটির প্রয়োগবিধি হয়তবা কোন শিক্ষকের অপমান হিসাবে কাম্য নয়। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জয়বাংলার ব্যবহার, তাদেরকে কোথায় ব্যবহার করতে হবে সেটি শেখানোর প্রয়োজন হতে পারে।

লেখক
বিপ্লব মল্লিক
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।