চারদিকে ভয়ংকর জঙ্গি!

বিপ্লব মল্লিক
Published : 11 July 2016, 05:33 AM
Updated : 11 July 2016, 05:33 AM

বিজ্ঞানের এই পৃথিবীতে চারদিকে যেন শুধু মানুষের ভয়। সেই প্রাচীন কালে মানুষ পশু আর প্রাকৃতিক শক্তির সাথে লাড়াই করে আজকের এই মানব সভ্যতা টিকিয়ে রেখেছে। কিন্ত আজ মানব সভ্যতা জ্ঞান ও বিজ্ঞানে হয়ত উন্নত হয়েছে কিন্ত পরিণত হয়েছে মানুষরুপী এক পশু। মানুষের সাথে লড়াই করে মানুষকে টিকে থাকা আজকের পৃথিবীতে যেন বড় চ্যালেঞ্জ।

শুধু ভাবছি আর ভাবছি সাথে সাথে অবাক হচ্ছি। বিষয়টা ভাবলে গা শির শির করে উঠছে। মানুষ কতটা লোভী হতে পারে। যার সাথে হয়ত কোনদিন দেখা হয়নি যার সাথে কোন পারিবারিক শত্রুতা নেই, যার সাথে কোন রাজনৈতিক প্রতিযোগীতা নেই, যে এসেছিল এই দেশে অতিথি হয়ে তাকে পরকালের শান্তি ও বেহস্ত লাভের জন্য হত্যা করা কিভাবে সম্ভব! গুলশানের ঘটনায় যেন বাকরুদ্ধ বাংলাদেশ।

এই পৃথিবীতে মানুষ মানুষের জন্য কত কি করে। দিনরাত পরিশ্রম করে পথশিশু ও অসহায় মানুষের জন্য। তারা দুখী মানুষের পাশে দাঁড়ায়, দরিদ্র মানুষের সেবা করে, কারও হয়ত পরকালে প্রতিদান পাওয়ার চিন্তা থাকে আবার কারও সেটা একেবারে অনুউপস্থিত। যেখানে মানবতাই ধর্ম।

ফেসবুকে কত মানুষের সাথে পরিচয় হয়। হাই হ্যালো দিলে আবার রেসপন্স করে। অনেক সময় খুব কাছাকাছি হয়ে যায় মনে হয় আমার পরিবারের কেউ। এ যেন এক দারুণ ভালবাসা। মনে হয় যেন হাজার বছরের চেনা অতিথি হয়ে তার পাশে গিয়ে বসেছি। কত কথা শুনেছি আবার বলেছি।

গুলশানের ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তারা কোন সাধারণ মানুষ নয় গাবতলী বা কারওয়ান বাজারের গালকাটা শামসু নয়। যাদের ঝুলিতে আছে ভারী ভারী ডিগ্রি। যে ডিগ্রিগুলো হয়ত অর্জন হয়েছে নিজেদের সামাজিকভাবে দাঁড় করার জন্য,যেখানে আসেনি মানবতা ভালবাসা। ডিগ্রি থাকলে জ্ঞানী হওয়া যায় না। জ্ঞানের ভাণ্ডার হলো মানুষ ও প্রকৃতি। পুস্তক হলো তার পাত্র।

মানুষের মাঝে এক অবিশ্বাস জন্ম নিচ্ছে। অপরিচিত মানুষকে গ্রহণ করা এক ভয়ংকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবিশ্বাস মানবজাতিকে চেপে ধরেছে। কিছু নির্বোধ এই সমাজকে নষ্ট করছে।

মানুষ জন্মগত এক বিশ্বাস নিয়ে এই পৃথিবীতে আসে হয়ত সেই বিশ্বাস নিয়েই সে মৃত্যুবরণ করে। খুব কম মানুষই বিশ্বাস পরিবর্তন করে। নিজের বিশ্বাসের উপর কঠোরভাবে দন্ডায়মান থাকে। তা থাকুক তাতে কারও যায় আসে না। কিন্তু কারও রক্তের উপর দিয়ে নিজের সুখ পাওয়ার আশা একেবারে নির্বোধ বলা খুব বেশি অন্যায় হবে না।মানবতাকে গলাটিপে হত্যা করে কোনকিছু অর্জন এক নির্বোধের পরিচয়।

শিল্পকলা সাহিত্য ও বিজ্ঞানের অনুপ্রবেশ ঘটুক তরুণদের মধ্যে, গড়ে উঠুক মানবতা, সমাজ ভরে যাক ভালবাসায়। চারিদিকে যেন ভয়ংকর জঙ্গি।